ছবিতে খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন

পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে শেষ বিদায় জানিয়েছে বাংলাদেশ। 

জানাজা থেকে দাফন—এই ফটো স্টোরিতে তুলে ধরা হয়েছে রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা, জনসমুদ্র আর শোকের মুহূর্তগুলো।

আজ বুধবার বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে ঢাকার জিয়া উদ্যানে স্বামী শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

এর আগে জাতীয় সংসদ ভবন কমপ্লেক্সের দক্ষিণ প্লাজা ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বিপুল মানুষের অংশগ্রহণে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজাকে ঘিরে ঢাকার প্রধান সড়কগুলো পরিণত হয় মানুষের ঢলে।

সংসদ ভবন থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় পতাকায় মোড়া লাশবাহী গাড়িতে করে খালেদা জিয়ার মরদেহ জিয়া উদ্যানে নেওয়া হয়।

বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিশেষ বাহনে করে মরদেহ নেওয়া হয় শহীদ জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশে। সেখানে সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা কফিন কাঁধে তুলে নেন।

দাফনের সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান, মেয়ে জাইমা রহমান, আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শামিলা রহমান ও তার মেয়ে জাফিরা রহমানসহ পরিবারের সদস্যরা। বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও সেখানে শোক ও শ্রদ্ধা জানান।

এর আগে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেলা ৩টা ০২ মিনিটে খালেদা জিয়ার জানাজা শুরু হয়। জানাজা পড়ান জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক।

জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তারেক রহমান তার মায়ের জন্য সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং কারও কাছে কোনো ঋণ বা পাওনা থাকলে তা পরিশোধের অঙ্গীকার করেন।

শেষ শ্রদ্ধা জানাতে রাজধানীর রাস্তায় নেমে আসে অগণিত মানুষের ঢেউ। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ রূপ নেয় জনসমুদ্রে। যতদূর চোখ যায়, শুধু মানুষ আর মানুষ।

সকাল থেকেই জাতীয় সংসদ ভবন কমপ্লেক্সের দক্ষিণ প্লাজায় শোকাহত মানুষের ভিড় জমতে থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের সারি দীর্ঘ হতে থাকে। ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকা থেকে আসাদ গেট পেরিয়ে কারওয়ান বাজার পর্যন্ত বিস্তৃত হয় মানুষের লাইন।

প্রধান সড়কের পাশাপাশি সংযোগ সড়ক ও গলিপথেও মানুষ ধৈর্যের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলেন। অনেকের হাতে ছিল দলীয় পতাকা ও প্ল্যাকার্ড, আবার কেউ কেউ নীরবে দোয়া করছিলেন। জনসমাগম ছড়িয়ে পড়ে উড়াল সড়ক, ভবনের ছাদ এবং আশপাশের এলাকাতেও।

হলিক্রস রোড, পূর্ব ও পশ্চিম তেজতুরীপাড়া, গ্রিনরোডসহ আশপাশের এলাকায়ও ছিল বিপুল উপস্থিতি। তীব্র যানজট উপেক্ষা করেই স্থানীয় বাসিন্দারা জানাজায় অংশ নেন।

বিএনপি সমর্থকদের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। বয়স্ক, নারী ও তরুণ—সব বয়সের মানুষের অংশগ্রহণে স্পষ্ট হয়ে ওঠে খালেদা জিয়ার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের প্রভাব। অনেককেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার মধ্যে আবেগাপ্লুত দেখা যায়।

গতকাল মঙ্গলবার ভোর ছয়টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮০ বছর বয়সে মারা যান খালেদা জিয়া। বাংলাদেশের রাজনীতির এক দীর্ঘ, আলোচিত ও প্রভাবশালী অধ্যায়ের নাম—খালেদা জিয়া।

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

1h ago