‘বিএনপি আছে নিষেধাজ্ঞা ও অদৃশ্য ইশারার রাজনীতি নিয়ে’

শুক্রবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'বিএনপি আছে নিষেধাজ্ঞা এবং অদৃশ্য ইশারার রাজনীতি নিয়ে। তাদের সঙ্গে জনগণ নেই।'

আজ শুক্রবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি এখন কতো কথা বলে। তারা বলছে, আজরাইল নাকি সরকারের পেছনে ঘুরঘুর করছে। তারা জানে কীভাবে? তারা কি আল্লাহর ফেরেশতা নাকি? মির্জা ফখরুল আপনি কি আল্লাহর ফেরশতা? আপনি কি করে জানেন আজরাইল কার পেছনে ঘুরঘুর করছে?

তিনি বলেন, 'আমাকে তো কয়দিন ধরে মারছে! এখন আবার হাসপাতালে পাঠাচ্ছে! গভীর রাতে ফোন আসে, আপনি কি হাসপাতালে? আমি বলি, না আমি তো বাসায়। আবার ফোন করে বলে বেঁচে আছেন ভাই? কেন? আমরা তো শুনেছি আপনি মরে গেছেন। আমাদের ইন্তেকাল পর্যন্ত তারা করিয়ে ফেলেছে। কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটেছে। এখন আজরাইল লাগায় দিয়েছে।'

'সব আজগুবি খবর, নষ্ট রাজনীতি। এরা করে নষ্ট রাজনীতি এবং নষ্ট কথা তারাই বলে। কী ভয়াবহ! কোনো দেশের রাজনীতিতে এই সংস্কৃতি কি আছে প্রতিপক্ষকে মেরে ফেলার। এই গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এ রকম ভয়াবহ গুজব ছড়ায়। এটা বিএনপি এবং তাদের দোসরাই করে,' যোগ করেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এবারও বিএনপির নেতৃত্বে যে ৫৪ দলীয় জোট হয়েছে, তারা টকশোতে গিয়ে পথহারা পথিকের মতো কথা বলে। কী করবে, কী বলবে কী কর্মসূচি দেবে, এ নিয়ে ৫৪ দল ৫৪ পদ ৫৪ মত। এ দল ছোট হয়ে আসবে বেশি দেরি নেই। বামে-ডানে একাকার। অতিবাম-অতিডান। এই দৃশ্যপট থাকবে না। গতবারও দেখেছি। ২১ দলীয় জোট। শেষ পর্যন্ত জোটের নেতা কামাল হোসেনই আউট।'

'এখন তো অদৃশ্য রিমোট কন্ট্রোলে বিএনপি চলে' মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'বিএনপি জোটের আন্দোলন চলে রিমোট কন্ট্রোলে, অদৃশ্য নির্দেশে। আর বিদেশিরা কখন সরকারকে নিষেধাজ্ঞা দেবে, সেদিকে তাকিয়ে আছে। লবিং করছে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জন্য।'

তিনি আরও বলেন, 'বিএনপি আছে নিষেধাজ্ঞা এবং অদৃশ্য ইশারার রাজনীতি নিয়ে। তাদের সঙ্গে জনগণ নেই। আমরা তাদের দুর্বলও ভাবি না। বিএনপির নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বিরোধী সব শক্তি এবং বেশ কিছু অপশক্তি এখানে জোট গঠন করেছে। আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাব। ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশের যে রূপকল্প ঘোষণা করা হয়েছে তা বাস্তবায়ন করে যাব।'

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিএনপিসহ তাদের সমমনা দলগুলো যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, তাদের পদযাত্রা, বিভাগীয় সমাবেশ, সেখানে আমরা কোনো প্রকার সংঘাত বা উস্কানি যেন না দেই। আমাদের পক্ষ থেকে সাংঘর্ষিক কোনো ধরনের পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয়। সরকারের যেন কোনো বদনাম না হয়। আমরা বলেছি নির্বাচন পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। কোনটা কবে হবে, তা আমরা বসে ঠিক করব।'

'তবে সতর্ক থাকা, গণসংযোগ, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষা করা, আগুন-সন্ত্রাস এবং ভাঙচুরের যেসব ঘটনা মাঝে মাঝে দেখা যায়, এসবের বিরুদ্ধে আমাদের বিরতিহীন কর্মসূচি নির্বাচন পর্যন্ত থাকবে। এখানে পাল্টাপাল্টির কোনো বিষয় নেই,' যোগ করেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'সম্মেলন চলে গেছে, অনেকেরই একটু গা ছাড়া ভাব। পার্টি অফিসে সন্ধ্যায় গেলে লোকই দেখা যায় না। আগে তো ঢুকতেই পারতাম না, সব প্রার্থী। এখন মনে হচ্ছে প্রার্থী হয়ে তো লাভ নেই, সেজন্য গা ছাড়া ভাব আছে। গা ঝাড়া দিয়ে উঠুন।'

তিনি আরও বলেন, 'বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের অনুরোধ করবো, সম্মেলন হয়ে গেছে অনেকদিন, কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনো জমা হয়নি। আর জমা হলেও সভাপতির নির্দেশে আমি অনুমোদন যেগুলো করি তাকে ফাইনালি একবার দেখাই। তার আগে আমাদের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্তরা আমাকে তো বলতে হবে এই কমিটি ঠিক আছে।'

'আগে জানতে হবে বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্তরা কমিটি দেখেছেন কি না। তারা দেখলে আমি নেত্রীর সঙ্গে আলাপ করে অনুমোদন দিতে পারি। সহযোগী সংগঠন স্বাচিপের এখনো কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার উদ্যোগই নেই। ছাত্রলীগ এখনো করে নাই। কতদিন হয়ে গেছে সম্মেলনের। মহিলা আওয়ামী লীগ অফিসে যাওয়া যায় না, মহিলাদের লাইন। এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। যুব মহিলা লীগেরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি।'

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'টকশোতে শুনলাম, ওবায়দুল কাদের রাষ্ট্রপতি হওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছেন। তার মানে আমি নেত্রীর ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করছি রাষ্ট্রপতি হওয়ার জন্য? তার মানে আমি তোষামোদি করছি? শেখ হাসিনার নিরাপত্তা তোষামোদি? আমি পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি, আমাদের পার্টির নেতৃবৃন্দের উদ্বেগ আছে। এ দেশে ৩ নভেম্বর ঘটেছে আমরা জানি। ৩ তারিখ থেকে ৭ তারিখ কত অফিসারকে মারা হয়েছে। এই দেশে বিশ্বাসঘাতক কারা? সেখানে আজকে নাকি আমি রাষ্ট্রপতি হওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছি? আপনি প্রশ্নটা করেছেন ভালো করেছেন। আমি আগেও বলেছি, মাঝেও বলেছি, এখনো বলছি। সর্বশেষ বলব, রাষ্ট্রপতি পদের যোগ্যতা আমার নেই।'

Comments

The Daily Star  | English

Dozens of zombie firms still trading as if nothing is wrong

Nearly four dozen companies have been languishing in the junk category of the Dhaka Stock Exchange (DSE) for at least five years, yet their shares continue to trade on the country’s main market and sometimes even appear among the top gainers. 

11m ago