পঞ্চগড়ের হামলা সুপরিকল্পিত: বিএনপি নেতা হাফিজ

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বিএনপির সহসভাপতি মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির সহসভাপতি মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) বলেছেন, নির্বাচনের আগে দেশকে অস্থিতিশীল করতে ও বিএনপিকে আতঙ্কিত করতেই পঞ্চগড়ে সুপরিকল্পিতভাবে হামলার ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

আজ বুধবার বিকেলে পঞ্চগড় জেলা বিএনপির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

এর আগে, পঞ্চগড়ের শহরতলীতে সালানা জলসাকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার সদর ও বোদা উপজেলার আহম্মদনগর ও শালশিড়ি গ্রামে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মানুষের ঘরবাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর পরিদর্শন করেন।

তিনি বলেন, 'পঞ্চগড়ের এই হামলার ঘটনা উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং সুপরিকল্পিত। ইতোমধ্যে ঢাকাসহ অন্যান্য অঞ্চলেও বোমবাজির খবর পাওয়া যাচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রশাসনের জবাবদিহিতা না থাকায় সরকারি দলের ছত্রছায়ায়  সন্ত্রাসীরা এই ধরনের তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে।'

তিনি অভিযোগ করেন, 'তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।'

প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে মেজর হাফিজ বলেন, 'ক্ষতিগ্রস্তরা সরকারের অনুমতি নিয়েই তাদের বাৎসরিক জলসার আয়োজন করেছিল। তাদের বাড়িঘরে হামলার সময়েও তারা প্রশাসনকে জানিয়েছেন। কিন্তু, পুলিশ সেখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দৃশ্য দেখেছে, তাদের রক্ষায় এগিয়ে আসেনি। ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম শুরুর ৩ ঘণ্টা পর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার আসার পর দুষ্কৃতিকারীদের খানিকটা প্রতিরোধ করা হয়েছে। তার আগে, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।' 

'এসব দেখে মনে হয় সবকিছুর মূল যে কারণ সেটি হলো, দেশে গণতন্ত্র নেই, দেশে আইনের শাসন নেই, মানুষের কোনো অধিকার নেই। মানবতা প্রতিদিনই লঙ্ঘিত হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ একটি মানবাধিকার বিরোধী রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত হচ্ছে,' বলেন তিনি।

মামলা ও গ্রেপ্তারের বিষয়ে তিনি বলেন, 'ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাই সবাইকে চেনে, কিন্তু ধরা হচ্ছে শুধু বিএনপি কর্মীদের। বিএনপি কর্মীরা এখন পলাতক, ঘরবাড়ি ছাড়া। একেকটি মামলায় ১৫-২০ জনের নাম উল্লেখ করে ২-৩ হাজার অজ্ঞাতনামা আসামি করা হচ্ছে। ফলে বিএনপি করা সাধারণ, শান্তিপ্রিয় নিরীহ মানুষ আজ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।'

হাফিজ উদ্দিন বলেন, 'ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত আমরা শুনেছি।'

এখানের ঘটনাটি রাজনীতিকরণ করার প্রয়াস তাদের নেই জানিয়ে তিনি বলেন, 'দুদিন আগে পঞ্চগড় থেকে নির্বাচিত বর্তমান সরকারের রেলমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর দেখতে গিয়েছিলেন। সেখানে ক্ষতিগ্রস্তরা মন্ত্রীর সামনে ধ্বংসাত্মক কাজে জড়ির কয়েকজনের নাম চিৎকার করে বলেছেন।'

মন্ত্রীর সঙ্গে সেসব অপরাধী সেখানে গেছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

এমন ধ্বংসাত্মক ঘটনার পর প্রশাসন দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করবে, তদন্ত কমিটি করা হবে- এটা তাদের ধারণা ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'যেখানে প্রাণহানি ঘটেছে, বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে- সেখানে এতদিনেও তদন্ত কমিটি না হওয়া দুঃখজনক। প্রশাসনের এমন ভূমিকায় তারা (বিএনপি) হতাশ।'

দেরিতে হলেও সরকার একটি বিচার বিভাগীয় নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার কারণ উদঘাটন করবে এবং দোষীদের শাস্তির আওতায় আনবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
 

Comments

The Daily Star  | English

Public Service Act: Ordinance out amid Secretariat protests

The government last night issued an ordinance allowing dismissal of public servants for administrative disruptions within 14 days and without departmental proceedings.

7h ago