অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের সেনা হেফাজতে নেওয়াকে ‘স্বাগত’ জানালেন জামায়াত আমির
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে 'গুম ও মানবতাবিরোধী অপরাধে' জড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া সেনা কর্মকর্তাদের বাহিনীর হেফাজতে নেওয়ার উদ্যোগকে 'স্বাগত' জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।
আজ রোববার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক পোস্টে জামায়াত আমির বলেন, 'তবে সুনির্দিষ্ট কয়েকজন ব্যক্তির অপরাধের কারণে পুরো প্রতিষ্ঠানকে কলঙ্কিত হতে দেওয়া যায় না। অপরাধের দায় কেবল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ওপরই বর্তাবে।'
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়েরও এই পোস্টের বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।
ফেসবুক পোস্টে জামায়াত আমির বলেন, 'গুম ও খুনের সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কতিপয় কর্মকর্তাকে বিচারের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে নিয়ে বাংলাদেশের জনগণ গর্বিত থাকতে চান।'
'দুঃখজনক হলেও সত্য, এই বাহিনীর কতিপয় সদস্য দেশের বিদ্যমান আইন ও মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছিলেন।'
'ফ্যাসিস্ট সরকারের প্ররোচনায় প্রতিপক্ষ নিধনের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ছিলেন অন্ধ সহযোগী। ফলে গুম এবং খুনের একটি ভীতিকর পরিবেশ দেশে সৃষ্টি হয়েছিল, যা একটি জাতির জন্য খুবই দুর্ভাগ্যের বিষয়।'
এ পর্যায়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই বিচারপ্রক্রিয়াকে সহায়তা করার ঘোষণা ও অভিযুক্তদের বাহিনীর হেফাজতে নেওয়ার উদ্যোগকে 'স্বাগত' জানান জামায়াত আমির। বলেন, 'আমরা আশা করি, কারও ওপর কোনো অবিচার চাপিয়ে দেওয়া হবে না। স্বচ্ছ বিচারপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্দিষ্ট অপরাধীরা যথাযথ শাস্তির মুখোমুখি হবেন। এতে যেমন অতীতের দায় মুছে যাবে, তেমনি ভবিষ্যতে কেউ নিজের পেশা বা পরিচয়কে কাজে লাগিয়ে জনগণের জানমালের ক্ষতি সাধন থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হবেন। পরিণতিতে দীর্ঘমেয়াদে জাতি উপকৃত হবে।'
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের গুমের ঘটনায় তিনটি মামলায় গত বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তাদের মধ্যে ২৫ জনই সেনাবাহিনীর সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা।
সেনাবাহিনীর ওই কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার ও তাদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবির মধ্যে শনিবার সেনা সদরে এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান। তিনি বলেন, পরোয়ানাভুক্ত ২৫ জনের মধ্যে ১৫ জন চাকরিরত এবং একজন এলপিআরে গেছেন। তাদের মধ্যে ১৫ জন কর্মকর্তা সেনা হেফাজতে আছেন এবং একজন নিখোঁজ।


Comments