কোনো অবস্থাতেই বামে-ডানে হেলে পড়ার চেষ্টা করবেন না: জাহিদ হোসেন

দেশ পরিচালনা করছেন এমন কারও কারও আচরণ প্রশ্নবোধক উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, জাতীয়তাবাদী দল বিশ্বাস করতে চায়, সবাই যার যার অবস্থান থেকে নিরপেক্ষ আচরণ করবেন। কোনো অবস্থাতেই কোনো দিকে, বামে-ডানে হেলে পড়ার চেষ্টা করবেন না।
আজ বুধবার দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় আয়োজিত কর্মীসভায় তিনি এ কথা বলেন।
জাহিদ হোসেন বলেন, 'নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করার দায়িত্ব শুধু প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা নির্বাচন কমিশনের নয়। এর সঙ্গে প্রতিটি পর্যায়ের নির্বাচনী কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত নেতাকর্মী এবং বিশেষ করে প্রশাসনের।'
তিনি বলেন, 'প্রশাসন এমন একটি শব্দ বাংলাদেশে হয়েছে যে, উনারা রাজা আমরা সবাই প্রজা। এই প্রশাসন হবে জনপ্রশাসন, জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা। জনগণের সুখ-দুঃখ ভালো-মন্দ দেখার কথা।'
'আমরা আশা করব, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, উপদেষ্টা মণ্ডলী অথবা দেশের সরকার পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যে কেউ, আপনাদের দায়িত্ব হবে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করা,' যোগ করেন তিনি।
জাহিদ হোসেন বলেন, 'এই বাংলাদেশে যদি আজকে ১২ কোটি ভোটার থাকে, মনে রাখবেন ২৪ কোটি চোখ আপনাদের কার্যক্রম অবলোকন করছে। কোনো অবস্থাতেই ভাববেন না যে মানুষ জেগে জেগে ঘুমাচ্ছে। আপনারা হয়তো ভাবতে পারেন, আমি তো চোখ বন্ধ করে করে ফেললাম, কেউ দেখলো না! মনে রাখবেন, অন্যরা কিন্তু আপনার কার্যক্রম অবলোকন করছে। আমরা চাইবো যে আবেগ, যে অনুভূতি, যে উৎসাহ-উদ্দীপনা, যে ত্যাগের বিনিময়ে আজকের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, সেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই রক্তের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করবে না, সেই ত্যাগের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করবে না।'
'প্রধান উপদেষ্টা যেমন বলেন আগামী মধ্য ফেব্রুয়ারির মধ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, যে নির্বাচন হবে রেকর্ডের মতো। অর্থাৎ এত ভালো হবে, যেটা নাকি অতীতের সঙ্গে কোনো তুলনাই করা যাবে না। আমরা এটাকে বিশ্বাস করতে চাই, বিশ্বাস রাখতে চাই, কিন্তু আমরা যখন দেখি কিছু কিছু কর্মকর্তা—রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে মাঠ পর্যায়ের মধ্যে, যাদের আচরণ এবং দেশ পরিচালনা করছেন এমন কারও কারও আচরণ প্রশ্নবোধক,' যোগ করেন তিনি।
পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এই যে মিডিয়াতে লেখা হচ্ছে, জনগণ এটি ভালো চোখে দেখছে না। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এ বিষয়ে অত্যন্ত সজাগ এবং সচেতন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিশ্বাস করতে চায়, সবাই যার যার অবস্থান থেকে নিরপেক্ষ আচরণ করবেন। কোনো অবস্থাতেই কোনো দিকে, বামে-ডানে হেলে পড়ার চেষ্টা করবেন না। মধ্যবর্তী পর্যায়ে থাকবেন, তাহলেই মানুষ সম্মান করবে। তা না হলে পতিত স্বৈরাচার বলেন, পলায়নকৃত স্বৈরাচারের কী অবস্থা হয়েছে...জনরোষ এমন এক জিনিস, এটি কিন্তু কাউকে ক্ষমা করবে না।'
'মনে রাখবেন বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত সহনশীল মানুষ, ধৈর্যশীল মানুষ কিন্তু এই মানুষগুলোই যখন জেগে ওঠে, তখন লক্ষণ সেন যেমন পালিয়ে গেছে, পলায়নকৃত স্বৈরাচার পালিয়ে গেছে...এ রকম অবস্থার পুনরাবৃত্তি না হোক, আমরা সেটি আশা করব,' যোগ করেন তিনি।
Comments