বিদেশি গণমাধ্যমে খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ মঙ্গলবার রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার মৃত্যুর খবর গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে বিদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যম।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক সংবাদে খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর জানিয়ে লিখেছে, ১৯৯১ সালে প্রায় ২০ বছর পর অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে নিজ দলকে বিজয়ী করে তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী সরকারপ্রধান হন।

আরেক খবরে গণমাধ্যমটি বলেছে, ১৯৮১ সালে স্বামী সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর খালেদা জিয়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতৃত্বে আসেন এবং একাধিকবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

সিএনএন তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার দৃঢ় ও আপসহীন অবস্থানই দেশজুড়ে গণআন্দোলনের শক্ত ভিত গড়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত সেই আন্দোলনের মুখেই ১৯৯০ সালে স্বৈরশাসক ও সাবেক সেনাপ্রধান এইচ এম এরশাদ ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন।

বাংলাদেশি ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের বরাতে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা লিখেছে, ফুসফুসে সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে গত ২৩ নভেম্বর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর সেখানেই খালেদা জিয়ার মৃত্যু হয়। 

হাসপাতালে থাকা অবস্থায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছিলেন। তিনি খালেদা জিয়াকে 'জাতির জন্য অনুপ্রেরণার এক অনন্য উৎস'বলে অভিহিত করেন।

২০১৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করা হয়। সে সময় চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতিও দেওয়া হয়নি। গত বছর শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার অল্প সময় পরই খালেদা জিয়া মুক্তি পান।

বার্তা সংস্থা এএফপি লিখেছে, দীর্ঘ সময় অসুস্থ ও কারাবন্দি থাকার পরও খালেদা জিয়া নভেম্বর মাসে ঘোষণা করেন, তিনি ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে অংশ নেবেন। এটি গত বছরের গণআন্দোলনের পর দেশের প্রথম ভোট।

নির্বাচনে বিএনপিকে এগিয়ে থাকা দল হিসেবে দেখা হচ্ছে। জিয়ার ছেলে তারেক রহমান, যিনি ১৭ বছর নির্বাসনের পর গত বৃহস্পতিবার দেশে ফিরেছেন, যদি দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়, তবে তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা রাখেন।

রয়টার্স খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর জানিয়ে রয়টার্স বলেছে, ২০০৬ সালের পর থেকে খালেদা জিয়া ক্ষমতার বাইরে ছিলেন। পরে আরও কয়েক বছর কারাবন্দি বা গৃহবন্দি অবস্থায় কাটালেও তিনি উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন ধরে রেখেছিলেন।

খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে, দ্য গার্ডিয়ান, নিউইয়র্ক টাইমস, এপি, নিক্কেই এশিয়া, দ্য ইনডিপেনডেন্ট, ব্লুমবার্গ, ডয়চে ভেলে, ওয়াশিংটন পোস্ট, আরব নিউজ, ল্য মোঁদ, ডন ও দ্য হিন্দুর মতো গণমাধ্যমগুলো।

Comments

The Daily Star  | English
Khaleda Zia contribution to Bangladesh democracy

A leader who strengthened our struggle for democracy

Khaleda Zia leaves behind an enduring legacy of service.

13h ago