আমেরিকানরা ফুটবলকে ‘সকার’ ডাকে কেন

আমেরিকানরা ফুটবলকে ‘সকার’ ডাকে কেন
আমেরিকানরা এই খেলাকে ফুটবল নামে ডাকে। ছবি: এপি

সারা দুনিয়া যেটাকে 'ফুটবল' বলে, আমেরিকানরা সেটাকে বলে 'সকার'। তবে এই শব্দটা কিন্তু আমেরিকানদের আবিষ্কার না। বরং ফুটবলের জন্মস্থান ব্রিটেনেই 'সকার' শব্দের উৎপত্তি হয়েছিল।

ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের স্পোর্টস ইকোনোমিকসের প্রফেসর স্টিফান জায়মানস্কি ২০১৪ সালে সকার শব্দের উৎপত্তি নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন। সেখানে বলা হয়েছে, ঊনবিংশ শতাব্দীতে ইংল্যান্ডে 'সকার' শব্দের উৎপত্তি। প্রায় একই রকম খেলা, যার আলাদা কোনো নিয়ম তখনো নির্ধারণ করা হয়নি- এই ধরণের খেলাকে বোঝাতে সকার শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হয়েছিল। অষ্টাদশ শতকের প্রথম অংশে ফুটবল এবং রাগবি একই খেলার দুটো উপজাত হিসেবে পরিচিত ছিল। ১৮৬৩ সালে 'ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন' প্রতিষ্ঠা হয়। বিভিন্ন স্কুলের ধনী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফুটবল খুবই জনপ্রিয়তা পায়। ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন তখন কিছু নিয়ম কানুন প্রতিষ্ঠা করে। ১৮৭১ সালে 'রাগবি ফুটবল ইউনিয়ন' প্রতিষ্ঠা হয়। তারাও ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের দেখানো পথ অনুসরণ করে। এ দুটো খেলা তখন 'রাগবি ফুটবল' এবং 'অ্যাসোসিয়েশন ফুটবল' হিসেবে পরিচিতি পায়। কিন্তু ফুটবলের এই নিয়মকানুনগুলো আমেরিকায় ততটা দ্রুতগতিতে প্রতিষ্ঠা পায়নি। আমেরিকাতে তখন আবার ভিন্নধর্মী আরেকটি ফুটবল খেলার সূচনা হচ্ছিল, যেটিকে সবাই এখন 'আমেরিকান ফুটবল' নামে ডাকে। ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হচ্ছে ফিফা, আর আমেরিকান ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা হচ্ছে ন্যাশনাল ফুটবল লীগ।

যাইহোক- ইংল্যান্ডে যখন ধনী শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ফুটবল খেলতো, তখন তারা রাগবি ও ফুটবলকে পরস্পর থেকে আলাদা করতে যথাক্রমে 'রাগার' ও 'সকার' শব্দ ব্যবহার করতো। ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড এবং ক্যামব্রিজে তখন অনেক শব্দের পেছনে স্ল্যাং বা গালি হিসেবে 'ইআর' ব্যবহার করা হতো। 'সকার' টার্মটি ইংল্যান্ডে তখন ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। এটা ছিল মূলত একটা স্ল্যাং টার্ম বা গালি। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত এই টার্মটি সেখানে প্রচলিত ছিল।

১৯৮০ সালে ব্রিটেন সকার শব্দের ব্যবহার বন্ধ করে দেয়, কারণ এই শব্দটি তখন আমেরিকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়ে গিয়েছিল। ব্রিটিশরা পরে এই খেলাটিকে ফুটবল নামেই ডাকতে শুরু করে এবং এই নামটিই এখন খেলাটির স্থায়ী নামে পরিণত হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Protesters set Nepal parliament on fire

Hundreds have breached the parliament area and torched the main building, a spokesman for the Parliament Secretariat says

1h ago