সিএনএনের জরিপ: ৭১ শতাংশ মার্কিনি মনে করেন বাইডেনের গাজানীতি ভুল

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্প ও বাইডেন। ছবি: রয়টার্স/কোলাজ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্প ও বাইডেন। ছবি: রয়টার্স/কোলাজ

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি ফৌজদারি মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছে। তা সত্ত্বেও, জনপ্রিয়তায় তিনি পেছনে ফেলেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। বাইডেনের জনপ্রিয়তা কমার পেছনে মূল কারণ হিসেবে তার ভুল গাজা নীতির কথা উল্লেখ করেছে সিএনএন। 

গতকাল রোববার এক সাম্প্রতিক জরিপের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানায় মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

উভয় প্রার্থী দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট পদে ফিরে আসার জন্য নভেম্বরের নির্বাচনে লড়বেন।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেনের সবচেয়ে দুর্বল জায়গাগুলো এই জরিপে উঠে এসেছে। নতুন জরিপে ৬০ শতাংশ মানুষ তার নীতিমালা ও কার্যক্রমে 'ডিসাপ্রুভাল' (অসম্মতি) জানিয়েছেন। বাকি ৪০ শতাংশ মনে করেন তিনি তার দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করছেন।

৭১ শতাংশ ভোটার মনে করেন গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে বাইডেন ভুল নীতি অবলম্বন করেছেন। মাত্র ২৮ শতাংশ মার্কিন নাগরিক তার অবলম্বন করা নীতি সমর্থন করেন।

৩৫ বছরের কম বয়সী মানুষের ক্ষেত্রে অসম্মতির হার ৮১ শতাংশ। শুধু ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে এই হার ৫৩ শতাংশ।

অন্যান্য সমালোচিত বিষয়ের মধ্যে আছে স্বাস্থ্যসেবা নীতিমালা ও শিক্ষার্থীদের ঋণের ব্যবস্থাপনা। উভয় বিষয়ে বাইডেনের নীতি যথাক্রমে ৪৫ ও ৪৪ শতাংশ মানুষের সমর্থন পেয়েছে। 

অর্থনীতি (৩৪ শতাংশ) ও মূল্যস্ফীতির (২৯ শতাংশ) ক্ষেত্রেও বাইডেনের নীতিমালার প্রতি সম্মতির হার খুবই কম। 

বেশিরভাগ মার্কিন নাগরিক বলছেন, অতীতের দিকে তাকিয়ে তাদের ধারণা হয়েছে, ট্রাম্পের চার বছরের শাসনামল সফল ছিল। সে তুলনায় বাইডেনের বর্তমান শাসনামল ব্যর্থতায় ভরপুর।

জরিপে নিবন্ধিত ভোটারদের ৪৯ শতাংশই ট্রাম্পকে সমর্থন জানিয়েছেন। জানুয়ারির জরিপেও একই ফল এসেছিল।

অপরদিকে, বাইডেনের সমর্থন কমে ৪৩ শতাংশ হয়েছে, যা জানুয়ারিতে ৪৫ শতাংশ ছিল।

৫৫ শতাংশ মার্কিন নাগরিক জানিয়েছেন তারা ট্রাম্পের শাসনামলকে 'সফল' মনে করেন। ৪৪ শতাংশ মানুষ একে 'ব্যর্থ' বলেছেন। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্প হোয়াইট হাউস ছেড়ে যাওয়ার পর এবং ৬ জানুয়ারি ইউএস ক্যাপিটলে হামলার পর পরিচালিত জরিপে ৫৫ শতাংশ ট্রাম্পের শাসনামলকে ব্যর্থ বলে অভিহিত করেছিলেন।

অপরদিকে, জো বাইডেনের প্রেসিডেন্ট পদের মেয়াদ এখনো শেষ না হলেও ইতোমধ্যে ৬১ শতাংশ মানুষ বলছেন তিনি তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। বাকি ৩৯ শতাংশ একে সফল বলেছেন।

২০২২ সালের জানুয়ারিতে ৫৭ শতাংশ মানুষ তার মেয়াদের প্রথম বছরটিকে 'ব্যর্থ' ও ৪১ শতাংশ 'সফল' বলেছিলেন।

এক সময় রিপাবলিকান পার্টিতে ট্রাম্পকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থাকলেও এখন দলের নেতা-কর্মীরা তার নেতৃত্বে একতাবদ্ধ হয়েছেন। দলের বেশিরভাগ সদস্য মনে করেন, তার আগের শাসনামল সফল ছিল। ৯২ শতাংশ রিপাবলিকান সমর্থক মনে করেন ট্রাম্প সফল ছিলেন। অপরদিকে, মাত্র ৭৩ শতাংশ ডেমোক্র্যাট সমর্থক বাইডেনের শাসনামলকে সফল বলেছেন।

নিরপেক্ষদের মধ্যে ৫৭ শতাংশ বলেছেন ট্রাম্প সফল। মাত্র ৩৭ শতাংশ বলেছেন বাইডেন সফল।

১৪ শতাংশ মার্কিন নাগরিক মনে করেন দুই প্রেসিডেন্টই ব্যর্থ। ৮ শতাংশ দুইজনকেই সফল মনে করেন। নিবন্ধিত ভোটারদের ৪৭ শতাংশ মনে করেন বাইডেনের শাসন এখন পর্যন্ত ব্যর্থ ও ট্রাম্পের শাসন সফল ছিল। অপরদিকে ৩০ শতাংশ বলেছেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেন সফল আর ট্রাম্প ব্যর্থ ছিলেন।

২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় বিতর্কে অংশ নিচ্ছেন ট্রাম্প ও বাইডেন। ফাইল ছবি: রয়টার্স
২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় বিতর্কে অংশ নিচ্ছেন ট্রাম্প ও বাইডেন। ফাইল ছবি: রয়টার্স

জরিপের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সময়ের সাথে সাথে সাবেক প্রেসিডেন্টদের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। তবে আধুনিক যুগে একবার নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর কোনো প্রার্থী দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চেষ্টা করেননি।

মজার বিষয় হল, উভয় প্রার্থীকে নিয়েই ভোটাররা নেতিবাচক ধারণার কথা জানিয়েছেন।

বাইডেন ও ট্রাম্প সম্পর্কে যথাক্রমে ৫৮ ও ৫৫ শতাংশ মানুষ নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেন।

৫৩ শতাংশ ভোটার বলেছেন, এ বছরের নির্বাচনের উভয় প্রার্থীকে নিয়েই তারা অসন্তুষ্ট।

১৭ শতাংশ ভোটার বলেছেন, তারা উভয় প্রার্থীকে নিয়েই নাখোশ এবং যদি কাউকে ভোট দিতেই হয়, তাহলে ৪৩ শতাংশ ট্রাম্পকে দেবেন আর ৩১ শতাংশ বাইডেনকে দেবেন।

২৫ শতাংশ বলেছেন তারা অন্য কাউকে ভোট দেবেন, কাউকেই দেবেন না বা নিশ্চিত নন কাকে দেবেন।

১৮ থেকে ২৩ এপ্রিল এই জরিপ পরিচালনা করে সিএনএন। এতে দৈবচয়ন ভিত্তিতে এক হাজার ২১২ প্রাপ্তবয়স্ক মার্কিন নাগরিক অংশ নেন। অনলাইনে বা টেলিফোনের মাধ্যমে এই জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করে এসএসআরএস।

Comments

The Daily Star  | English

Ducsu election sees spontaneous turnout of voters

Ducsu election is being held at eight centres of the campus with nearly 40,000 registered voters and 471 candidates vying for 28 central posts.

1h ago