হেডের সেঞ্চুরি পর অস্ট্রেলিয়ার পেসারদের দাপট, দুর্দশায় ভারত

ছবি: এএফপি

ট্রাভিস হেড যখন ক্রিজে গেলেন, তখন অস্ট্রেলিয়ার রান ৩ উইকেটে ১০৩। বিনোদনদায়ী ইনিংস খেলে তিনি যখন সাজঘরে ফিরলেন, তখন দলের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৩১০ রান। মাঝের ২০৭ রানের মধ্যে বাঁহাতি ব্যাটারের একারই অবদান ১৪০ রান। তার ওয়ানডে ঘরানার সেঞ্চুরির সুবাদে বড় লিড পেল স্বাগতিকরা। এরপর অজিদের তিন পেসার দাপট দেখানোয় সিরিজে এগিয়ে থাকা ভারত পড়ল দুর্দশায়।

শনিবার অ্যাডিলেডে দিবারাত্রির টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে হার চোখ রাঙাচ্ছে সফরকারীদের। দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১২৮ রান। এখনও ২৯ রানে পিছিয়ে আছে তারা। রিশভ পান্ত ২৫ বলে ২৮ এবং নিতিশ কুমার রেড্ডি ১৪ বলে ১৫ রানে ক্রিজে আছেন। দুটি করে উইকেট নেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ও স্কট বোল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেওয়া মিচেল স্টার্কের শিকার একটি।

টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামা ভারত প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় ১৮০ রান। এরপর ১ উইকেটে ৮৬ রান নিয়ে প্রথম দিনের খেলা শেষ করে অস্ট্রেলিয়া। সেই সংগ্রহ নিয়ে এদিন খেলতে নেমে অলআউট হওয়ার আগে তারা করে ৩৩৭ রান। ফলে ১৫৭ রানের বড় লিড মেলে তাদের। এর পেছনে মূল কারিগর হেড। তিনি পাঁচে নেমে বাউন্ডারির ফুলঝুরি সাজিয়ে হাঁকান দুর্দান্ত আগ্রাসী সেঞ্চুরি। ১৪১ বল মোকাবিলায় ১৭ চারের সঙ্গে মারেন ৪ ছক্কা।

দিনের শুরুতেই ন্যাথান ম্যাকসুয়েনি ও স্টিভেন স্মিথের উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। দুজনকেই বিদায় করেন পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ। মারনাস লাবুশেনকে নিয়ে এই ধাক্কা সামাল দেয়া শুরু করেন হেড। চতুর্থ উইকেট জুটিতে আসে ৬৫ রান। ১২৬ বলে ৬৪ রান করা লাবুশানের পর মিচেল মার্শও দ্রুত ফিরে গেলে চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া।

সেই চাপ একা হাতে উড়িয়ে দিয়ে দ্রুতগতিতে এগোতে থাকেন হেড। সেঞ্চুরির আগে অবশ্য রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে ব্যক্তিগত ৭৬ রানে একবার জীবন পান। লংঅনে তার কঠিন ক্যাচ হাতে জমাতে পারেননি মোহাম্মদ সিরাজ। সেটা বাদ দিলে তার ইনিংস প্রায় নিখুঁত। তবে যেভাবে দ্রুত রান বাড়াচ্ছিলেন, তাতে ঝুঁকি ছিল অনেক। দলের রান তিনশ ছাড়ানোর পর হেড ফেরেন পেসার সিরাজেরই বলে বোল্ড হয়ে। অস্ট্রেলিয়াকে সিরিজে ফেরার রাস্তা গড়ে দিয়ে মাঠ ছাড়ার আগে একটি রেকর্ডেরও মালিক হন তিনি। দিবারাত্রির টেস্টে দ্রুততম সেঞ্চুরির কীর্তি এখন তার (১১১ বলে)।

নতুন বল নিয়ে সিরাজ ও বুমরাহ মিলে এরপর স্বাগতিকদের ইনিংস বেশিদূর যাওয়ার আগেই থামান। শেষ ৩ উইকেট পড়ে ৫ রানের মধ্যে। ৪ উইকেট নিতে বুমরাহর খরচা ৬১ রান। সমান সংখ্যক উইকেট নিতে সিরাজ দেন ৯৮ রান। একটি করে উইকেট যায় নিতিশ ও অশ্বিনের ঝুলিতে। হার্শিত রানা উইকেটশূন্য থাকেন ৮৬ রান দিয়ে।

অনেক পিছিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নামা ভারত চতুর্থ ওভারে হারায় লোকেশ রাহুলকে। তাকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে আউট করেন কামিন্স। এরপর নিয়মিত বিরতিতে পড়ে উইকেট। জমে ওঠেনি কোনো জুটি। আক্রমণে এসেই যশস্বী জয়সওয়ালকে ফেরান বোল্যান্ড। তার শিকার হয়ে বিরাট কোহলিও থিতু হতে পারেননি। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে শুবমান গিলকে বোল্ড করেন স্টার্ক। ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে দ্রুত বিদায় করতে স্টাম্প ভাঙেন কামিন্স।

দিনের শেষবেলায় দ্রুত রান বাড়ায় সফরকারীরা। ক্রিজে গিয়েই মারতে থাকেন পান্ত। তার ইনিংসে চার পাঁচটি। তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন তিনটি চার মারা নিতিশ। দুজনের অবিচ্ছিন্ন ষষ্ঠ উইকেট জুটির সংগ্রহ ১৯ বলে ২৩ রান। স্বস্তিতে না থাকা ভারত এখন তাদের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে।

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

5h ago