দুই স্তর নিয়ে একটা কারণেই একটু উদ্বেগ ইংল্যান্ডের

England test team

দুই স্তরের টেস্ট কাঠামো এখন বিশ্ব ক্রিকেটে আলোচনার কেন্দ্রে। এই কাঠামো বাস্তবায়িত হলে বড় দলগুলোর মধ্যে সিরিজের সংখ্যা বেড়ে যাবে। দুই স্তর থাকায় বাড়বে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঝাঁজ। সেদিক থেকে বড় দল হওয়ায় ইংল্যান্ডেরই লাভবান হওয়ার কথা। তবে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) নিজেদের জন্য একটা উদ্বেগের জায়গাও দেখছে।

প্রস্তাবিত দুই-স্তর বিশিষ্ট বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে থাকবে উত্তরণ ও অবনমন। ধরা যাক খারাপ পারফরম্যান্সের জন্য ইংল্যান্ড যদি দ্বিতীয় স্তরে কখনো নেমে যায় তাহলে ওই চক্রে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেন্ডুলকার-অ্যান্ডারসন ট্রফি ও ঐতিহ্যবাহী অ্যাশেজ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ইসিবি'র মতে, এই ম্যাচগুলো টেস্ট ক্রিকেটের বাণিজ্যিক এবং ঐতিহাসিক গুরুত্বের জন্য অপরিহার্য।

বর্তমানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে সম্ভাব্য সংস্কার পর্যালোচনা করছে। এর মধ্যে একটি দুই-বিভাগের সিস্টেমও অন্তর্ভুক্ত। নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটার রজার টুজের নেতৃত্বে একটি কার্যনির্বাহী দল ২০২৭ সালের জুলাইয়ে পরবর্তী চক্র শুরুর আগে তাদের সুপারিশ জমা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আলোচনা চলাকালীন, ইসিবি'র চেয়ারম্যান রিচার্ড থম্পসন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, এই স্তরের কাঠামো যদি ঐতিহ্যবাহী প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, তবে টেস্ট ক্রিকেটের আবেদন কমে যেতে পারে।

ইংল্যান্ড বনাম ভারতের শেষ টেস্ট ম্যাচের সময় বিবিসি'র 'টেস্ট ম্যাচ স্পেশাল'-এ থম্পসন বলেন, 'ইংল্যান্ড হিসেবে আমরা চাই না যে, কোনও খারাপ সময়ে আমাদের অবনমন ঘটুক এবং এর ফলে আমরা দ্বিতীয় বিভাগে চলে যাই এবং অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের সঙ্গে খেলা বন্ধ হয়ে যাক। এটা হতে পারে না। এখানে সাধারণ জ্ঞান দিয়ে কাজ করতে হবে।'

থম্পসন ডব্লিউটিসি-তে আমূল পরিবর্তনের পরিবর্তে বর্তমান কাঠামোটি আরও উন্নত করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার সাম্প্রতিক উত্থানের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন যে, ছোট দলগুলোও সর্বোচ্চ স্তরে প্রতিযোগিতা করতে পারে।

এদিকে, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী টড গ্রিনবার্গ এই বিষয়ে আরও উদার মনোভাব দেখিয়েছেন। এসইএন রেডিও'র সঙ্গে কথা বলার সময় গ্রিনবার্গ বলেন যে, যদি দুই-স্তর বিশিষ্ট মডেলটি ছোট দলগুলোকে আরও বেশি সুযোগ ও আয় বাড়িয়ে শক্তিশালী করবে।

গ্রিনবার্গ বলেন, 'যখন আমি "আমরা" বলি, তখন তিনটি দেশ টেস্ট ক্রিকেটে যে সম্পদ এবং শক্তি ব্যয় করে, তাদের ভূমিকা কী? আমাদের স্বার্থে একটি শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শক্তিশালী পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে দেখতে চাই। আমরা চাই এই দেশগুলো এই ফরম্যাটে শক্তিশালী হোক, কিন্তু স্পষ্টতই তাদের সাহায্যের প্রয়োজন হবে। তারা একা এটা করতে পারে না। ক্রিকেটের সবারই তাদের সাহায্য করা উচিত।'

তবে  তিনি সতর্ক করে বলেন যে, যদি এই পদ্ধতি ব্যবধান কমানোর পরিবর্তে আরও বাড়িয়ে তোলে, তাহলে তিনি এর পক্ষে সমর্থন দেবেন না, 'আমার উদার মনোভাব এই অর্থে যে, যদি এটি অন্য দেশগুলোকে শক্তিশালী হতে এবং টেস্ট ক্রিকেটে আরও ভালো সম্পদ পেতে সাহায্য করে তাহলে আমি এর পক্ষে। কিন্তু যদি এটি সেই লক্ষ্য অর্জন করতে ব্যর্থ হয় এবং উল্টো প্রভাব ফেলে, তাহলে আমি সমর্থন করব না।'

তিনি আরও জানান, সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত আইসিসি'র প্রধান নির্বাহীদের সাম্প্রতিক বৈঠকে অন্যান্য বোর্ডের প্রধান নির্বাহীরাও একই ধরনের মনোভাব প্রকাশ করেছেন,  'সম্প্রতি যখন আমি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অন্যান্য বোর্ডের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে ছিলাম, তখন সবাই এই বিষয়ে খুব উদার মনোভাব দেখিয়েছে, কারণ তারা জানে যে, খেলার এই অংশে মান বাড়াতে হলে আমাদের কিছু স্তরের পরিবর্তন আনতে হবে।'

বর্তমানে টেস্ট খেলুড়ে দলের সংখ্যা ১২। এরমধ্যে ৯টি দল আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলার সুযোগ পায়। জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ড আছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বাইরে। তাদের খেলার সুযোগ হয় কম।

দুই স্তর বিশিষ্ট কাঠামো হলে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হয়ে যাবে বাকি তিন দলও। সেক্ষেত্রে এমন হতে পারে,  র‍্যাঙ্কিংয়ে সেরা ছয় দল খেলবে প্রথম স্তরে, বাকি ছয় দল  দ্বিতীয় স্তরে। প্রথম স্তরে শেষ অবস্থানের দল অবদমিত হয়ে যাবে, দ্বিতীয় স্তরের সেরা দলের হবে উত্তরণ। তবে কাঠামোটি কীভাবে হতে পারে তা ঠিক করবে রজার টুজের কমিটি।

Comments

The Daily Star  | English

Ducsu election sees spontaneous turnout of voters

Ducsu election is being held at eight centres of the campus with nearly 40,000 registered voters and 471 candidates vying for 28 central posts.

2h ago