সরে গেলেন আরেক প্রার্থী, প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই পরিচালক হচ্ছেন বুলবুল ও ফাহিম

আগামীকাল বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনের তারিখ থাকলেও নির্বাচনী কোন আমেজ বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা আসলে থাকছে না। মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমার মধ্যে ১৫ জন প্রার্থী আনুষ্ঠানিকভাবে সরে যান। সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও প্রার্থীদের সরে দাঁড়ানো চলছে। ব্যালটে নাম থাকলেও ঢাকা বিভাগ থেকে অভিজ্ঞ সংগঠক আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদওয়ান নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়েছেন। অনিয়মের অভিযোগ এনে ভোটের লড়াইয়ে তিনি থাকছেন না বলে জানিয়েছেন।
ফুয়াদের ভোটের মাঠে না থাকার অর্থ হলো বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম এবং সহ-সভাপতি নাজমুল আবেদিন ফাহিম ৬ অক্টোবর নির্বাচনে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছাড়াই নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।
রেদওয়ান ঢাকা বিভাগের জামালপুর স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন থেকে তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। শুরুতে ফুয়াদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছিল তার সমর্থনকারী কাউন্সিলরের স্বাক্ষরের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায়। পরে স্বাক্ষরের বৈধতা যাচাইয়ের পর নির্বাচন কমিশন (ইসি) ফুয়াদের মনোনয়নপত্র গ্রহণ করে। এই সংগঠককের বুলবুল ও ফাহিমের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল।
আজ বিসিবি প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ফুয়াদ বলেন, 'একজন প্রার্থী হিসেবে আমি বলতে চাই, আমি ঢাকা বিভাগীয় আঞ্চলিক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন এবং জেলা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন থেকে প্রার্থী ছিলাম। আপনারা জানেন, আমার প্রার্থীতাও বাতিল করা হয়েছিল। আমি অনেক কষ্টে সেটাকে পুনরুজ্জীবিত করেছিলাম। আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে আমি একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই, যে নির্বাচনে আমি অংশগ্রহণ করতে পারি।'
তিনি বলেন, 'আপনারা আজকের একটি পত্রিকায় খবরটা পড়তে পারেন। সেখানে শিরোনাম হচ্ছে, "বিসিবি নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন।" নির্বাচন শুরু হওয়ার আগেই শেষ হয়ে গেছে। নির্বাচন তফসিল অনুযায়ী, ১ তারিখে ই-ব্যালট এবং পোস্টাল ব্যালট দেওয়ার কথা ছিল। আমি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে অনেকবার দেখা করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু তারা আমার সঙ্গে দেখা করেননি।'
'আমি এখনও চারজন কাউন্সিলরের ফোন নম্বর পাইনি। বিসিবি আমাকে সেগুলি দেয়নি। চারজন কাউন্সিলর। তাহলে ভোট কী? তাহলে আমি কীভাবে ভোট দেব? ভোট স্বচ্ছ নয়।'
ফুয়াদ বলেন যে ঢাকা থেকে এই দুই প্রার্থীর কেউই আগে বিভাগীয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থাগুলোর সঙ্গে জড়িত ছিলেন না এবং সম্প্রতি অ্যাড-হক কমিটিতে এসেছেন।
তিনি প্রশ্ন করেন, জনাব আমিনুল ইসলাম বুলবুল। এই ঢাকা বিভাগীয় আঞ্চলিক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন থেকে তার প্রার্থী হওয়া ঠিক হয়নি। তিনি ঢাকা বিভাগের কোনো জেলারও সদস্য ছিলেন না। তিনি কোনো জেলাতেই ক্রিকেটের সঙ্গে কাজ করেননি। একইভাবে নাজমুল আবেদিন ফাহিম। আমি জানতে চাই, তিনি কবে, কখন, কোন উপজেলায়, ঢাকার কোন অংশে ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য ছিলেন এবং কোন খেলা পরিচালনা করেছেন?'
ফুয়াদ দাবি করেন যে তাকে একজন কাউন্সিলর জানিয়েছেন যে তিনি মন্ত্রণালয় যেভাবে চাইবে সেভাবেই ভোট দেবেন, 'আজকেও গোপালগঞ্জের সেই ভোটারের সাথে ফোনে যোগাযোগ করতে পারিনি। আমি খুব ভোরে গোপালগঞ্জ গিয়েছিলাম, তার বাড়িতে, তাকে ভোট দিতে বলার জন্য। তিনিও ভয় পেয়ে বলেছিলেন, "আমি আপনাকে কীভাবে ভোট দেব? আমার ভোট তো মন্ত্রণালয়ের কাছে। মন্ত্রণালয় যেভাবে বলবে, আমি সেভাবেই ভোট দেব।" তাহলে নির্বাচন কোথায়? যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, ক্রিকেট বোর্ডের মিস্টার আমিনুল ফাহিম, প্লাস নির্বাচন কমিশন—তারা সুতো ছাড়া মালা গেঁথেছে। সেই মালা আমার গলায় আর পরানো হবে না। তাই আমি এই অস্বচ্ছ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি।'
প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পর এর আগে ক্লাব ক্যাটাগরি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন লুৎফুর রহমান বাদল ও মেজর (অবঃ) ইমরোজ।
Comments