টেন্ডুলকারকে টপকে কোহলির রেকর্ড ছুঁলেন গিল, বিপদে ক্যারিবিয়ানরা

প্রথম দিনের অপরাজিত ২০ রান নিয়ে খেলতে নামলেন শুবমান গিল। ইনিংস ঘোষণার সময়ও অপরাজিত থাকলেন ভারতের অধিনায়ক। ছন্দে থাকা ডানহাতি ব্যাটার আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিংয়ে তুলে নিলেন আরেকটি সেঞ্চুরি। তার ১৯৬ বলে ১২৯ রানের ইনিংসে চার ১২টি ও ছক্কা দুটি।
শনিবার দিল্লিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনে হাঁকানো শতকে রেকর্ড বইতেও ঠাঁই নিয়েছেন গিল। শচীন টেন্ডুলকারকে টপকে বিরাট কোহলির পাশে বসেছেন তিনি। সাদা পোশাকে চলতি বছর এটি তার পঞ্চম সেঞ্চুরি, যা এক পঞ্জিকাবর্ষে ভারতের অধিনায়কদের মধ্যে যৌথভাবে সর্বোচ্চ।
গত জুনে ইংল্যান্ড সফর দিয়ে টেস্টে নেতৃত্বের অভিষেক হয় গিলের। সেই থেকে রানের বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন তিনি। ওই সিরিজে অসাধারণ খেলে একটি ডাবল সেঞ্চুরিসহ মোট চারটি সেঞ্চুরি করেন তিনি। এবার ক্যারিবিয়ানদের পক্ষে ফের পেয়েছেন তিন অঙ্কের স্বাদ। সেজন্য তার লেগেছে মাত্র সাত টেস্টের ১২ ইনিংস।
টেস্টে অধিনায়ক হিসেবে দুবার এক পঞ্জিকাবর্ষে পাঁচটি করে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন কোহলি। ২০১৭ সালে ১০ ম্যাচের ১৬ ইনিংস ও ২০১৮ সালে ১৩ টেস্টের ২৪ ইনিংস লেগেছিল তার। ভারতের দলনেতার ভূমিকায় টেন্ডুলকার ১৯৯৭ সালে ১২ ম্যাচের ১৭ ইনিংসে পেয়েছিলেন চারটি শতক। নেতৃত্ব দিয়ে কোহলিরও চারটি সেঞ্চুরি ছিল ২০১৬ সালে, ১২ ম্যাচের ১৮ ইনিংসে।
এই সংস্করণে অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর প্রথম পাঁচটি সেঞ্চুরির জন্য গিলের চেয়ে কম ইনিংস লেগেছে মাত্র দুজনের। তার স্বদেশি সুনিল গাভাস্কারের লেগেছিল ১০ ইনিংস। শীর্ষে থাকা ইংল্যান্ডের অ্যালিস্টার কুক নয় ইনিংসে পেয়েছিলেন পাঁচটি শতক।
গিলের ব্যাটে চড়ে এগোনো ভারত প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে ৫ উইকেটে ৫১৮ রানে। আগের দিনের ২ উইকেটে ৩১৮ রান নিয়ে খেলতে নেমেছিল তারা। ৯৫ বলে ফিফটি স্পর্শ করা গিল সেঞ্চুরিতে পৌঁছান ১৭৭ বলে। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই যশস্বী জয়সওয়াল রানআউট হওয়ার পর নিতিশ কুমার রেড্ডির সঙ্গে ৯১ ও ধ্রুব জুরেলের সঙ্গে ১০২ রানের জুটি গড়েন তিনি।
প্রথম দিনের রানের সঙ্গে আর মাত্র ২ রান যোগ করে থামেন ওপেনার জয়সওয়াল। ২৫৮ বল মোকাবিলায় ২২টি চারের সাহায্যে তিনি খেলেন ১৭৫ রানের অসাধারণ ইনিংস। নিতিশ চারটি চার ও দুটি ছক্কায় ৫৪ বলে ৪৩ রান করেন। জুরেল আউট হন পাঁচটি চারের সাহায্যে ৭৯ বলে ৪৪ রান করে। সফরকারীদের পক্ষে ৯৮ রানে ৩ উইকেট নেন জোমেল ওয়ারিক্যান।
জবাব দিতে নেমে বিপাকে পড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে ৪ উইকেটে ১৪০ রান তুলে। প্রথম ইনিংসে এখনও ৩৭৮ রানে পিছিয়ে আছে তারা। শেই হোপ ৪৬ বলে ৩১ ও টেভিন ইমলাচ ৩১ বলে ১৪ রানে ক্রিজে আছেন।
আক্রমণে গিয়ে দ্বিতীয় বলেই উইকেট তুলে নেন রবীন্দ্র জাদেজা। শর্ট লেগে অদ্ভুতুড়ে ক্যাচ লুফে নিয়ে বিস্ময় জাগান সাই সুদর্শন। জন ক্যাম্পবেল সজোরে সুইপ করায় মুখ ফিরিয়ে নেন সুদর্শন। তবে তার হাত ছুঁয়ে হেলমেটে লাগা বল কোনোমতে ধরে রাখেন। ক্যাম্পবেল ২৫ বলে দুটি চারে করেন ১০ রান।
চাপ সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেন তেজনারায়ণ চন্দরপল ও আলিক আথানেজ। তাদের জুটিতে আসে ১২২ বলে ৬৬ রান। কিন্তু থিতু হলেও কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৬৭ বলে চারটি চার ও একটি ছক্কায় ৩৪ রান করে জাদেজার বলে চন্দরপল ধরা পড়েন স্লিপে। কুলদীপ যাদব বিদায় করেন ৮৪ বলে পাঁচটি চার ও একটি ছক্কায় ৪১ রান করা আথানেজকে।
ফিরতি ক্যাচ দিয়ে বাঁহাতি স্পিনার জাদেজার তৃতীয় শিকার হন রোস্টন চেস। ৭ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। বাকি সময়ে আর কোনো বিপদ ঘটতে দেননি হোপ ও ইমলাচ।
Comments