সাইফের দুর্দান্ত বোলিংয়ের পরও আফগানদের বড় পুঁজি

ইব্রাহিম জাদরান যখন ব্যাট হাতে ঝড় তুলছিলেন, মনে হচ্ছিল তিনশ তো বটেই, হয়তো তারও অনেক ওপরে যাবে আফগানিস্তানের ইনিংস। তবে সাইফ হাসান বল হাতে নিয়েই যেন বদলে দিলেন ম্যাচের চিত্রনাট্য। থামান আফগানদের ব্যাটিং তাণ্ডব। তখন আবার মনে হয়েছিল আড়াইশর আগেই শেষ হবে তাদের ইনিংস। কিন্তু অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের ভুল সিদ্ধান্ত ও মোহাম্মদ নবির দানবীয় ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত তিনশর কাছাকাছি পুঁজিই গড়ে আফগানরা।
মঙ্গলবার আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৯৩ রান তোলে আফগানিস্তান। অর্থাৎ, হোয়াইটওয়াশ এড়াতে বাংলাদেশকে করতে হবে ২৯৪ রান।
দিনের শুরুটা ছিল একেবারেই আফগানদের। দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান খেললেন স্বচ্ছন্দে, ব্যাটে এল সৌন্দর্য ও আত্মবিশ্বাসের ছাপ। শতরানের জুটি গড়ার আগেই, ৯৯ রানে ভাঙে তাদের পার্টনারশিপ। তানভিড় ইসলামের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে এলবিডাব্লিউ হয়ে ফেরেন গুরবাজ (৪২)।
তবু তাতে ব্যাঘাত ঘটেনি আফগানদের অগ্রযাত্রায়। তিনে নেমে ইব্রাহিমকে দারুণ সঙ্গ দেন সেদিকুল্লাহ আতল। দু'জনের জুটিতে আসে ৭৪ রান, তখন মনে হচ্ছিল বিশাল পুঁজির দিকেই এগোচ্ছে আফগানিস্তান।
এরপর বল হাতে আসেন সাইফ হাসান, আর সেখানেই ম্যাচের বাঁক ঘুরে যায়। প্রথম ওভারেই সেদিকুল্লাহকে তুলে নেন তিনি। দ্বিতীয় ওভারে ফেরান অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শাহিদিকে, আর তৃতীয় স্পেলে ইকরাম আলীখিলকেও বিদায় দেন। ৪ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট, এক কথায় দুর্দান্ত বোলিং। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, এমন পারফরম্যান্সের পরও তাকে আর বল দেননি অধিনায়ক মিরাজ।
এর কিছুক্ষণ পর রানআউট হয়ে ফেরেন ইব্রাহিম জাদরান। ১১১ বলে ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজানো ৯৫ রানের ইনিংসটি শেষ হয় দুঃখজনকভাবে। ম্যাচ তখন পুরোপুরি বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে মনে হচ্ছিল।
কিন্তু ৪৯তম ওভারে ঘটে সব নাটকীয়তা। ইনজুরিতে পড়ে নাহিদ রানা দুই বলের বেশি করতে পারেননি, বাধ্য হয়ে বল হাতে নেন মিরাজ নিজেই—এবং সেখানেই ম্যাচের মোড় ঘুরে যায় আবারও। ওভারের বাকি চার বলেই তিনটি ছক্কা হাঁকান নবি, মোট খরচ হয় ২৫ রান। শেষ ওভারে হাসান মাহমুদের ওপর ঝড় তোলেন এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার, নেন আরও ১৯ রান। ফলে আফগানরা পৌঁছে যায় ২৯৩ রানের বড় পুঁজিতে।
শেষ পর্যন্ত ৩৭ বলে ৬২ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন মোহাম্মদ নবি, ৪টি চার ও ৫টি ছক্কায় সাজানো তার এই ইনিংসই আফগান ইনিংসের প্রাণভোমরা। তবে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯৫ রানের ইনিংস খেলেন ইব্রাহিম। ১১১ বলে ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস।
Comments