এক রুমালের কারণেই সিরিজে ফিরল প্রাণ?

Paul Starling

১৭১ রান তাড়ায় তখন চলছে একাদশ ওভারের খেলা। ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ ধাপে ছক্কা মারতে যাওয়া লিটনের ক্যাচ ডিপ মিডউইকেটে গ্যারেথ ডেলানি দুর্দান্ত দক্ষতায় জমালেন মুঠোয়। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা গেল বল মুঠোয় থাকলেও ডেলানির পেছনে ঝুলানো রুমাল ছুঁয়েছিলো সীমানার কুশন। টিভি আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে ২৭ রানে বেঁচে বাংলাদেশ অধিনায়ক তুলে নিলেন ফিফটি, যাতে জেতার পথ পেয়ে যায় স্বাগতিকরা। আইরিশ অধিনায়ক পল স্টার্লিং এটাকেই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট না বললেও 'বড় মুহূর্ত' বলে আখ্যায়িত করেছেন।

আয়ারল্যান্ডের কাছে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বড় ব্যবধানে হেরে যাওয়ায় এই ম্যাচটি লিটনদের জন্য ছিলো সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচ। তাতে ৪ উইকেটে জেতায় শেষ ম্যাচ পর্যন্ত টিকে রইল উত্তেজনা।

জশ লিটলের বলে পুল করে ছক্কার জন্য উড়ান লিটন। একদম লাইনের কাছ থেকে লাফ দিয়ে প্রথম দফায় বল আটকে ভেতরে রেখে মাটিতে পড়ার আগে তা আবার মুঠোয় জমান ডেলানি। তিনি নিজে লাইনের ভেতরে থাকলেও তার পেছনে ঝুলতে থাকা রুমাল তখন স্পর্শ করে ফেলে কুশন! এমন দৃশ্য ক্রিকেটে বিরল হলেও ভাগ্য এদিন এরকমই পক্ষে ছিল বাংলাদেশ ও লিটনের।

লিটন পরে ৩৪ বলে ফিফটি করে আউট হন ৫৭ করে, ততক্ষণে ম্যাচ প্রায় মুঠোয় স্বাগতিকদের। যদিও শেষ দিকে ফের জমে উঠে নাটকীয়তা। তাতে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের ক্যামিওয়ে (৭ বলে ১৭) মাত্র ২ বল আগে উদ্ধার হয় বাংলাদেশ।

ডেলানির পেছনে তখন রুমাল ঝুলানো না থাকলে কাজ সমাপ্তের অনেক আগেই ফিরতে হতো লিটনকে। এমনকি থিতু হওয়ার আগে সাইফ হাসানকে ফেরানোর কঠিন এক সুযোগও হাতছাড়া করেন স্টার্লিং।

ম্যাচ শেষে তিনি জানালেন, অতি সূক্ষ্ম ফারাক গড়ে দিয়েছে ম্যাচের ফল,  'আমার মনে হয় এটা ছিল বড় একটি মুহূর্ত। হ্যাঁ, আমি একে হয়তো টার্নিং পয়েন্ট বলব না, কিন্তু আমি বলব—এটাই সেই ধরনের সূক্ষ্ম মুহূর্ত যেগুলো ম্যাচকে নির্ধারণ করে। তোয়ালের কাপড়ের তন্তুর মতোই সূক্ষ্ম। তো, এটা ছিল দারুণ একটি প্রচেষ্টা। যদি সেটা অন্যদিকে যেত, এমনকি  হয়তো ডানদিকে (তার আগের বলে) আমার ক্যাচটা হাতে লেগে বেরিয়ে না যেত। সম্ভবত তাতেই ম্যাচের পার্থক্য হয়ে যেতে পারত।'

সিরিজের এখন যা অবস্থা তাতে মোমেন্টামও পেয়ে গেছে বাংলাদেশ। শুরুতে পিছিয়ে থাকলেও ঘুরে দাঁড়ানোয় পরিস্থিতি যে এখন স্বাগতিকদের অনুকূলে সেটা স্বীকার করতে দ্বিধা করেননি আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক,  'হ্যাঁ, আমার মনে হয় মোমেন্টাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে, তাই এটা এবার হয়তো তাদের দিকেই একটু থাকবে। আপনি দেখেছেন কত দ্রুত বদলে যায় (খেলা)—প্রায় তিন ওভার বাকি থাকতে পুরো মোমেন্টামই আমাদের দিকে চলে এসেছিল। সুতরাং, জানেনই তো, এটা বিশাল ব্যাপার। আমার মনে হয়, তারা প্রথম ম্যাচে যা ভুল হয়েছে সেগুলো ঝেড়ে ফেলে এই ম্যাচে নিজেদের সিস্টেম থেকে বের করে দিয়েছে—এবং সেটা তারা দারুণভাবে করেছে। আপনি দেখেছেন তাদের পাওয়ার প্লেতে আগের ম্যাচের তুলনায় কী পার্থক্য হয়েছে। তাই ওরা সেখানে অনেক উন্নতি করেছে এবং আমরাও দিনের বেলা তৃতীয় ম্যাচে সেটাই করতে পারি।'

মঙ্গলবার তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায়।

Comments