রুটের সেঞ্চুরিতে রঙিন ব্রিসবেন টেস্টের প্রথম দিন
দীর্ঘ বিরতির পর অ্যাশেজ আবার মাঠে ফিরল ব্রিসবেনে, কিন্তু ম্যাচের প্রথম দিনই হলো এক রোলারকোস্টার নাটক। পার্থে ৪৮ ঘণ্টার হাহাকারের পর এবার গাব্বায় ইংল্যান্ড দেখাল দৃঢ়তা। দিন শেষে অপরাজিত জো রুটের সেঞ্চুরিতে ভর করে প্রথম ইনিংসে তিনশর ওপরে সংগ্রহ দাঁড় করালো ইংলিশরা।
দিবা-রাত্রির এই দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের ইনিংস ছিল সংযম, বিপর্যয়, আক্রমণ সব মিলিয়ে ওঠানামায় ভরা। দিনের শেষ আলোতে রুট যখন ব্যাট তুললেন, খুলে ফেললেন হেলমেট, এটি শুধু তার ৪০তম টেস্ট সেঞ্চুরি নয়, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তার প্রথম শতক, দীর্ঘদিনের অপেক্ষা ভাঙার এক আবেগঘন মুহূর্ত।
তবে দিনের শুরুটাই ভয়ানক ছিল ইংল্যান্ডের জন্য। টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া বেন স্টোকসের দল মাত্র ১৫ বলে ২ উইকেট হারিয়ে যেন পার্থের ভয়াবহতার পুনরাবৃত্তিতেই হাঁটছিল। মিচেল স্টার্ক নিয়েছেন প্রথম ওভারেই বেন ডাকেটকে গোল্ডেন ডাক, এরপর ওলি পোপকেও ফিরিয়ে দেন মাত্র তৃতীয় ওভারে।
ইনিংস শেষে স্টার্কের বোলিং ফিগার ৬/৭১। এতে তিনি ছাড়িয়ে গেলেন ওয়াসিম আকরামের রেকর্ড, টেস্টে বাঁহাতি পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেট এখন তার।
এমন অবস্থায় দলকে বিপদমুক্ত করেন রুট ও জ্যাক ক্রলি। ক্রলি পার্থের দুই ইনিংসেই শূন্য রানে ফিরেছিলেন, কিন্তু আজ দেখালেন ক্লাসিক ব্যাটিং, ৯৩ বলে খেলেন ৭৬ রানের ইনিংস। দুজন মিলে গড়েন শতরানের জুটি।
ক্রলির বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া কুইক শর্ট বল আক্রমণে যায়। মাঝপথে তিনি ভাগ্যবানও ছিলেন। ১৫ রানে তাকে আউট করা যেত, কিন্তু অস্ট্রেলিয়া রিভিউ নেয়নি। এরপরও ক্রলি সেঞ্চুরির পথে এগোলেও ৭০'র ঘরে এসে আবারও থামলেন, ক্যারিয়ারে নবমবারের মতো।
হ্যারি ব্রুক আসেন তুমুল আগ্রাসী মেজাজে, ১০ বলে ১৬ রান করে যখন স্কুপ শটে ঝুঁকি নেন, তখনই মনে হচ্ছিল বিপদ আসছে। শেষ পর্যন্ত স্টার্কের কাছে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তিনি।
স্টোকস টিকে ছিলেন, তবে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে ফেরেন। এরপর জেমি স্মিথ ও উইল জ্যাকসরা একে একে ফিরলে ইংল্যান্ড পাঁচ উইকেট হারায় ৫৪ রানে।
ইনিংস যখন ভেঙে পড়ার পথে, তখন রুটকে দুর্দান্ত সঙ্গ দেন ১১ নম্বর ব্যাটার জোফরা আর্চার। দুজন মিলে গড়েন অপরাজিত ৬১ রানের জুটি। অস্ট্রেলিয়ার পেস আক্রমণ ক্লান্ত হয়ে পড়ে দিনের শেষ সেশনে, আর ইংল্যান্ড পেয়ে যায় গতি ফিরে পাওয়ার সুর। দিন শেষে রুট ২০২ বলে অপরাজিত ১৩৫ রানে। এমন এক ইনিংস, যা গোটা ম্যাচের চিত্র বদলে দিতে পারে।
অস্ট্রেলিয়া আজ নামল অল-পেস আক্রমণে। প্যাট কামিন্সকে নিয়ে শেষ মুহূর্তে জল্পনা থাকলেও তিনি দলে নেই। স্পিনার নাথান লায়নকেও বাদ দেওয়া হয়েছে, ২০১১ সালের পর নিজের মাত্র দ্বিতীয় হোম টেস্ট মিস করলেন তিনি। তার জায়গায় এলেন মাইকেল নেসার, যিনি খেললেন নিজের তৃতীয় টেস্ট।


Comments