মাঝের ওভারেও মেরে খেলতে চান আকবর
জাতীয় দলের সুযোগের অপেক্ষায় আকবর আলীর দীর্ঘ প্রতীক্ষা চলছে সেই ২০২০ সাল থেকে, তার নেতৃত্বে অনূর্ধ্ব-১৯ দল বিশ্বকাপ জিতেছিলো সেবার। তার ব্যাচের অনেক সতীর্থই ইতোমধ্যে জাতীয় দলের মূল কাঠামোর অংশ হয়ে উঠলেও তিনি সুযোগ পাননি। এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার নিজের খেলা নিয়ে নতুন করে ভাবার এবং প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট সময় পেয়েছেন। দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ২৪ বছর বয়সী ক্রিকেটার কথা বলেছেন তার ব্যাটিংয়ের ধরণ, উন্নতির ক্ষেত্র এবং আসন্ন বিপিএল নিয়ে।
সময় এবং অভিজ্ঞতার সঙ্গে একজন খেলোয়াড় হিসেবে আপনার চিন্তাভাবনা কতটা পরিবর্তিত হয়েছে, বিশেষ করে সাম্প্রতিক ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলোতে জয়ের পর?
আকবর আলী: মানুষের চিন্তাভাবনা সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়। আমার ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে। যত বেশি আমি খেলছি, সময়ের সাথে সাথে এবং ম্যাচের সংখ্যার সাথে সাথে আমার জ্ঞান এবং পরিপক্কতা বাড়ছে। আমি এখন আমার খেলাটা আরও ভালো বুঝতে পারছি। আগে থেকেই নিজের শক্তির জায়গা ও দুর্বলতা সম্পর্কে জানতাম, কিন্তু এখন ম্যাচ খেলার মাধ্যমে আরও স্পষ্টভাবে বুঝতে পারছি কোন পথে হাঁটলে আমার জন্য ভালো হবে।
২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের পর আপনাদের ব্যাচের অনেকে জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছে। নিজের উন্নতির ক্ষেত্রে আপনি কোন জায়গাটায় কাজ করার প্রয়োজন মনে করেন?
আকবর: যদি আমার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বলি, আমি আমার জায়গা থেকে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে আমার মনে হয়, আমি যদি আরও ধারাবাহিক হতে পারতাম, তবে তা আমার জন্য ভালো হতো। গত কয়েক মাস ধরে আমার ফোকাস এটাই যে, সামনে যেখানেই খেলি না কেন, কীভাবে আরও ধারাবাহিক হওয়া যায়।
ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে আপনি কি নির্দিষ্ট কোনো পরিবর্তনের চেষ্টা করছেন?
আকবর: পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, নিজের শক্তির ওপর বিশ্বাস রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। গত ছয়-সাত মাস ধরে আমি এটাই করার চেষ্টা করছি। আগে হয়তো বিভিন্ন প্রভাবে বা পরিস্থিতির চাপে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারতাম না, কিন্তু এখন আমি পরিস্থিতির সাথে নিজেকে প্রকাশ করার চেষ্টা করছি।
আমাদের দেশে সাধারণত মাঝখানের ওভারে (১১-৪০ ওভার) নিরাপদ খেলার প্রবণতা দেখা যায়। এ ব্যাপারে আপনার দর্শন কী?
আকবর: আমাদের শেখানো হয় যে শুরুতে মারতে হবে, মাঝখানে উইকেট বাঁচিয়ে খেলতে হবে এবং শেষে আবার মারতে হবে। কিন্তু আমার মনে হয় এই প্রথা থেকে বের হয়ে আসা উচিত। আধুনিক ক্রিকেটে ভারত, ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ার মতো দলগুলো মাঝখানের ওভারগুলোতে অনেক বেশি বাউন্ডারি মারে। এখন কোচরাও আমাদের বলছেন যে মাঝখানের সময়টা শুধু পুনর্গঠনের নয়, বরং এটি একটি আক্রমণাত্মক পর্যায়।
ঘরোয়া ক্রিকেটে আপনাকে অনেক নিচে ব্যাটিং করতে দেখা যায়। আপনি কি ব্যাটিং অর্ডারে উপরে আসার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন?
আকবর: একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে সবসময়ই উপরে খেলার ইচ্ছা থাকে, কারণ এতে বেশি বল খেলার সুযোগ পাওয়া যায় এবং ব্যাটিংটা উপভোগ করা যায়। কিন্তু আমাদের দেশে ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার প্রবণতা কম। ভারত বা ইংল্যান্ডে রোহিত শর্মা বা জস বাটলার ক্যারিয়ারের শুরুতে নিচে খেললেও পরে উপরে এসে সফল হয়েছেন। আমাদের দেশে এই ঝুঁকি কেউ নিতে চায় না। এই মানসিকতা পরিবর্তন হলে ভালো হবে।
বিপিএলে আপনার ভূমিকা এবং দল নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কী?
আকবর: আমি যখন দলে ডাক পেলাম, তখন শান্ত (নাজমুল হোসেন শান্ত) ভাই এবং কোচিং স্টাফদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমার কাছে কী প্রত্যাশা করেন বা তাদের পরিকল্পনা কী, তা জেনেছি। আমার চেষ্টা থাকবে তাদের প্রত্যাশা পূরণ করা। আমাদের দলে অভিজ্ঞ এবং তরুণ খেলোয়াড়দের ভালো সমন্বয় আছে এবং দলের পরিবেশও খুব চমৎকার। এছাড়া কিপিংয়ের ব্যাপারে বলতে গেলে, সম্ভবত মুশফিক ভাই কিপিং করবেন, তাই আমি ফিল্ডার হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করছি।

Comments