সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ

অলিখিত ফাইনালে সাগরিকার গোলে প্রথমার্ধে এগিয়ে বাংলাদেশ

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

ড্র করলেই চ্যাম্পিয়ন। এমন সমীকরণ নিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শেষ ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে খেলতে নামল বাংলাদেশ। তবে সেদিকে না হেঁটে বরাবরের মতো আক্রমণাত্মক কৌশলই বেছে নিল তারা। মোসাম্মৎ সাগরিকার লক্ষ্যভেদে এগিয়ে থেকে বিরতিতে গেল পিটার বাটলারের দল।

সোমবার অলিখিত ফাইনালে রূপ নেওয়া রাউন্ড রবিন পদ্ধতির সবশেষ লড়াইয়ে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করেছে বাংলাদেশ। কিংস অ্যারেনায় অষ্টম মিনিটে জাল খুঁজে নেন নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা সাগরিকা। এবারের সাফে এটি তার পঞ্চম গোল। নেপালের বিপক্ষে আগের সাক্ষাতে সরাসরি লাল কার্ড দেখে তিন ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি।

মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে নয়টি পরিবর্তন এনে একাদশ সাজান বাংলাদেশের ব্রিটিশ কোচ বাটলার। জায়গা ধরে রাখেন কেবল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগের ম্যাচে খেলা ঐশী খাতুন ও পূজা দাস। সাগরিকা ছাড়া ফেরাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার, উমেহলা মারমা, মুনকি আক্তার, শান্তি মার্ডি ও স্বপ্না রানী।

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই নেপালের গোলপোস্টে হানা দেয় বাংলাদেশ। অনেকটা দৌড়ে ডানপ্রান্তে ডি-বক্সের বাইরে থেকে ফরোয়ার্ড সাগরিকা নেন কোণাকুণি শট। বল গোলরক্ষক সুজাতা তামাংয়ের গ্লাভসে লেগে বাইরে চলে যায়।

এরপর টানা দুটি কর্নারে সুযোগ তৈরি করে স্বাগতিকরা। কিন্তু সম্ভাবনাগুলো অল্পের জন্য সফলতার মুখ দেখেনি। প্রথমে খুব কাছ থেকে উইঙ্গার শান্তি বলে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন। এরপর ফরোয়ার্ড মুনকির জোরাল শট চলে যায় ক্রসবারের বেশ উপর দিয়ে।

পঞ্চম মিনিটে ভাগ্যের ফেরে গোল মেলেনি বাংলাদেশের। মিডফিল্ডার স্বপ্নার কর্নারে ছয় গজের বক্সের ভেতর থেকে হেড করেন সাগরিকা। গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বল যাচ্ছিল জালের দিকে। একদম গোললাইন থেকে তা ফিরিয়ে দেন ডিফেন্ডার আনিশা রাই।

সেই হতাশা ঝেড়ে সাগরিকা দলকে উল্লাসে মাতান তিন মিনিট পর। মাঝমাঠ থেকে স্বপ্না দেন নিখুঁত থ্রু বল। তা ধরে গতিতে লেগে থাকা ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে সাগরিকা চলে যান বক্সের কাছে। এরপর পোস্ট ছেড়ে অনেকখানি বেরিয়ে আসা সুজাতাকে কাটিয়ে গড়ানো শটে লক্ষ্যভেদ করেন। এগিয়ে যায় লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।

ত্রয়োদশ মিনিটে সুযোগ আসে নেপালের সামনে। অনেক দূর থেকে নেওয়া আনিশার ফ্রি-কিক চলে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে। ছয় মিনিট পর বড় বাঁচা বেঁচে যায় বাংলাদেশ। ডি-বক্সে প্রতিপক্ষের একটি ক্রস গোলরক্ষক মিলি আক্তার লুফে নিতে ব্যর্থ হন। এরপর পূর্ণিমা রাইয়ের শট বাধা পায় বামদিকের পোস্টে। ফিরতি বলে ফরোয়ার্ড শুকরিয়া মিয়ার হেড অবশ্য দক্ষতার সঙ্গে আটকে দেন মিলি।

ব্যবধান বাড়ানোর সম্ভাবনা বাংলাদেশ তৈরি করে দুই মিনিট পর। স্বপ্নার উঁচু করে বাড়ানো রক্ষণচেরা পাস ধরে বামপ্রান্ত থেকে শট নেন মুনকি। বল এগিয়ে আসা গোলরক্ষকের গ্লাভসে লেগেও এগিয়ে যাচ্ছিল জালের পথে। শেষ মুহূর্তে কর্নারের বিনিময়ে নেপালকে বিপদ থেকে বাঁচান আনিশা।

চমকপ্রদ ব্যাপার হলো, বল যখন সুজাতার গ্লাভস ছুঁয়েছিল, তখন তার অবস্থান ছিল ডি-বক্সের বাইরে। অর্থাৎ হ্যান্ডবলের দায়ে বড় সাজা পেতে পারতেন তিনি। তবে তাকে কোনো কার্ড দেখাননি রেফারি।

প্রথমার্ধের বাকি অংশে খেলার গতি একটু কমে আসে। ব্যবধান বাড়াতে না পারলেও রক্ষণ জমাট রেখে নেপালকেও গোল শোধ করতে দেয়নি বাংলাদেশ। ৪৪তম মিনিটে অবশ্য ডানপ্রান্তে উমেহলার থ্রু বলে সাগরিকা চলে যান বিপজ্জনক অবস্থায়। তবে শেষ ছোঁয়াটা দিতে পারেননি।

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

‎‎ম্যাচ শুরুর আগে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন দুই দলের খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফরা। তখন উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের স্মরণ করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English
Foreign banks profits vs social spending in Bangladesh

Foreign banks top profits, trail in social spending

CSR spending by multinational lenders was just 0.56% last year, compared with 9% by Islamic banks

12h ago