এমবাপের জোড়া পেনাল্টি গোলে জিতল রিয়াল

নাটকীয়তায় ভরা এক রোমাঞ্চকর গল্প দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নতুন মৌসুম শুরু করল রিয়াল মাদ্রিদ। অলিম্পিক মার্শেইয়ের বিপক্ষে রেকর্ড ১৫ বারের ইউরোপসেরা দলকে বাঁচালেন কিলিয়ান এমবাপে। তার দুটি পেনাল্টি থেকে গোল করে ২–১ ব্যবধানে দলকে এনে দিলেন জয়। তাতে প্রথম ইউরোপীয় ম্যাচে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারলেন নতুন কোচ জাবি আলোনসো।
ম্যাচের শুরুটা ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। তৃতীয় মিনিটেই চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আর্নল্ড। এরপর নামেন অভিজ্ঞ দানি কারভাহাল, কিন্তু সেখানেও অপেক্ষা করছিল বিপদ। খেলার ছন্দ ধরে নিয়ে আগ্রাসী ফুটবল খেলছিল রবার্তো ডি জারবির মার্শেই। ২৫ মিনিটে মেসন গ্রিনউড বল কাড়েন আরদা গুলারের কাছ থেকে, নিখুঁত পাস বাড়ান টিমোথি ওয়েয়াকে। কাছের পোস্ট দিয়ে জালে বল পাঠিয়ে মার্শেইকে এগিয়ে দেন ওয়েয়া। ফরাসি ক্লাবটির হয়ে সেটিই তার প্রথম গোল।
তবে ব্যবধান টিকল না বেশিক্ষণ। বক্সের ভেতর রদ্রিগোকে ফাউল করেন মার্শেই মিডফিল্ডার জেফ্রি কন্দোগবিয়া। স্পটকিক থেকে নির্ভুল শটে গোল করেন এমবাপে, ফেরান সমতা। এরপর মার্শেই আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। অবামেয়াংয়ের দুটি শট অল্পের জন্য বাইরে যায়, একটি দারুণভাবে রুখে দেন কোর্তোয়া।
কিন্তু ম্যাচের গতি পাল্টে যায় ৬৩ মিনিটে। প্রতিপক্ষ গোলকিপার জেরোনিমো রুলির সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করে মাথায় আঘাত করেন কারভাবাহাল। সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন তিনি, ফলে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ১০ জনের দলে পরিণত হয় মাদ্রিদ।
সংকটের মুহূর্তে আবারও সামনে আসেন এমবাপে। ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে ফাকুন্ডো মেদিনার হাতে বল লাগে, আর রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। ৮২ মিনিটে সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো স্পটকিক থেকে জালে বল জড়িয়ে দেন এমবাপে। নিশ্চিত হয় রিয়ালের নাটকীয় জয়।
এই ম্যাচে আরেকটি ইতিহাসও গড়া হলো। মাত্র ১৮ বছর ৩৩ দিনে রিয়ালের শুরুর একাদশে নামলেন তরুণ ফ্রাঙ্কো মাস্তান্তুয়োনো, যিনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ক্লাবটির সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে রেকর্ড গড়লেন। তার শট পোস্টে লেগে ফিরলেও দারুণ ছাপ রেখে গেলেন এই আর্জেন্টাইন প্রতিভা।
লা লিগায় গত ম্যাচে রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে জয় পাওয়া দলটিতে একাধিক পরিবর্তন করেছিলেন আলোনসো। ভিনিসিয়ুসকে বেঞ্চে বসানো থেকে শুরু করে চোট কাটিয়ে ফেরা বেলিংহাম-কামাভিঙ্গাকে মাঠে না নামানো, সবই ছিল মৌসুমের শুরুতে খেলোয়াড়দের ঘুরিয়ে–ফিরিয়ে ব্যবহার করার কৌশলের অংশ। তবে দলের রক্ষণের ঘাটতি আর কারবাহালের বেপরোয়া আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও, এমবাপের ঠাণ্ডা মাথার দক্ষতাই শেষ পর্যন্ত এনে দিল মাদ্রিদের জন্য পূর্ণ তিন পয়েন্ট।
Comments