গাজায় ইসরায়েলের ধ্বংসযজ্ঞ দেখে ইতালি কোচের ‘হৃদয় ভেঙে গেছে’

আগামী সপ্তাহে ২০২৬ বিশ্বকাপের ইউরোপিয়ান অঞ্চলের বাছাইপর্বে দুটি ম্যাচ খেলবে ইতালি জাতীয় ফুটবল দল। তবে সবার দৃষ্টি থাকবে ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় ইসরায়েলের বিপক্ষে ম্যাচটির দিকে। কারণ, গত সপ্তাহে ইতালিজুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে ব্যাপক আকারে বিক্ষোভ হয়েছে। দলটির কোচ জেন্নারো গাত্তুসোও জানিয়েছেন, গাজায় চলমান দুই বছরব্যাপী যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখে তার হৃদয়ে গভীর বেদনা অনুভূত হচ্ছে।
গত শুক্রবার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে গোটা ইতালিতে ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করা হয়। সেদিন বিক্ষোভকারীরা ফ্লোরেন্সে অবস্থিত দেশটির জাতীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে ইসরায়েলের বিপক্ষে ম্যাচটি বাতিলের দাবি জানান। শুধু তাই নয়, ম্যাচটির আগে আরও বিক্ষোভের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিক্রিয়া ও ইসরায়েলের বিপক্ষে ম্যাচটি বাতিলের দাবির প্রসঙ্গে মঙ্গলবার গণমাধ্যমের কাছে বিশ্বকাপজয়ী সাবেক খেলোয়াড় গাত্তুসো বলেছেন, 'আমরা জানি, ম্যাচটি আমাদের খেলতেই হবে। না হলে ৩-০ ব্যবধানে হার গণ্য করা হবে… আবারও বলছি, নিরীহ মানুষদের ওপর, বিশেষ করে শিশুদের ওপর যা ঘটছে, তা দেখা ভীষণ দুঃখজনক। এসব দেখে আমার মন ভেঙে গেছে।'
গাজায় চলমান সংঘাত নিয়ে গত সপ্তাহের শেষদিকে ইউরোপজুড়ে যে বিক্ষোভগুলো হয়েছে, সেসবের মধ্যে সবচেয়ে বড় কয়েকটি হয়েছে ইতালিতে। গাজায় ভয়াবহ প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞের প্রেক্ষাপটে এখন ক্রমেই জোরালো হচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গন থেকে ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করার দাবি।
ইসরায়েলের বিপক্ষে ইতালির ম্যাচটির টিকিট বিক্রি হচ্ছে খুব ধীরগতিতে। ফলে ঘরের মাঠ উদিনের ব্লুএনার্জি স্টেডিয়ামে অনেক আসন খালি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া, স্টেডিয়ামটিকে ঘিরে থাকবে বড় পরিসরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ইতালি কোচ গাত্তুসো বলেছেন, 'পরিস্থিতি মোটেও সহজ হবে না। কারণ, মাঠের বাইরে প্রায় ১০ হাজার মানুষ থাকবে। আর ভেতরে হয়তো থাকবে প্রায় পাঁচ-ছয় হাজার দর্শক।'
বিস্ময় জাগিয়ে বিশ্বকাপের গত দুই আসরে জায়গা করতে পারেনি চারবারের শিরোপাজয়ী ইতালি। চার ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে বাছাইয়ের 'আই' গ্রুপের পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে তারা। শীর্ষে থাকা নরওয়ে এক ম্যাচ বেশি খেলে পূর্ণ ১৫ পয়েন্ট পেয়েছে। সমান ম্যাচে ইসরায়েলেরও পয়েন্ট ৯। এই গ্রুপ থেকে কেবল শীর্ষ দলই সরাসরি জায়গা পাবে ২০২৬ বিশ্বকাপে। দ্বিতীয় স্থান পাওয়া দলকে লড়তে হবে প্লে-অফে।
বাছাইপর্বে গত সেপ্টেম্বরে হাঙ্গেরিতে দুই দলের উত্তেজনাপূর্ণ আগের লড়াইয়ে ইতালি ৫-৪ গোলে হারায় ইসরায়েলকে। যখন ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল, তখন থেকে দেশটির জাতীয় ফুটবল দল তাদের ঘরের ম্যাচগুলো হাঙ্গেরিতেই খেলছে। ওই ম্যাচে গ্যালারিতে উপস্থিত অল্পসংখ্যক ইতালিয়ান সমর্থক ইসরায়েলের জাতীয় সঙ্গীতের সময় মাঠের দিকে পিঠ ঘুরিয়ে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান।
Comments