৩ কারণে ৪০ বছর বয়সেও গুরুত্বপূর্ণ রোনালদো, ব্যাখ্যা মার্তিনেজের
বয়স কেবল একটি সংখ্যা, ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর ক্ষেত্রে কথাটি এমনভাবেই উপস্থাপন করেন পর্তুগাল জাতীয় দলের কোচ রবার্তো মার্তিনেজ। আগামী ফেব্রুয়ারিতে ৪১ বছরে পা রাখবেন রোনালদো, তবুও পর্তুগালের শুরুর একাদশে তিনি কেন এখনো অবিসংবাদিত, তার পেছনের যুক্তি পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেছেন স্প্যানিশ কোচ।
মার্তিনেজ জানিয়েছেন, রোনালদোর ক্ষেত্রে কোচিং স্টাফরা নিয়মিত 'তিনটি স্তম্ভ' প্রতিভা, অভিজ্ঞতা ও মনোভাব (অ্যাটিটিউড) বিশ্লেষণেই থাকছেন। এই তিনের সমন্বয়ই তাকে আজও সেলেসাওদের অপরিহার্য অংশ করে রেখেছে।
বর্তমানে আল-নাসরের হয়ে খেলা এই তারকা ফরোয়ার্ড বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ভালো ফর্মে ছিলেন। পাঁচ ম্যাচে পাঁচ গোল করে পর্তুগালকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে বড় ভূমিকা রাখেন তিনি। ছয় ম্যাচের মধ্যে চারটিতে জয় পায় পর্তুগাল। যদিও রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২-০ হারের ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় শেষ বাছাই ম্যাচে তাকে পায়নি দল।
তবে ফিফা তার তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞার শেষ দুই ম্যাচ স্থগিত করায়, ২০২৬ বিশ্বকাপে পর্তুগালের গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচেই মাঠে নামতে পারবেন রোনালদো। ফলে উত্তর আমেরিকায় অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপে ৪১ বছর বয়সেও তাকে দেখা যাবে জাতীয় দলের জার্সিতে।
স্প্যানিশ দৈনিক মার্কাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্তিনেজ বলেন, 'মনোভাবই সবচেয়ে বড় বিষয়। আমরা সব সময় তিনটি স্তম্ভ বিশ্লেষণ করি -প্রতিভা, অভিজ্ঞতা এবং সে জাতীয় দলে কী ধরনের মনোভাব নিয়ে আসে। নিজের ওপর সে যে সর্বোচ্চ দাবি চাপিয়ে দেয়, সেটাই তাকে সব সময় দলে রাখার মূল কারণ। সেরা হওয়ার ক্ষুধা ছোঁয়াচে। স্ট্রাইকার হিসেবে ৩০ ম্যাচে ২৫ গোলই প্রমাণ করে, মাঠে সে জাতীয় দলকে কতটা দেয়।'
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ফের্নান্দো সান্তোসের স্থলাভিষিক্ত হয়ে পর্তুগালের দায়িত্ব নেন মার্তিনেজ। প্রায় তিন বছর পূর্তির মুখে নিজের সময়কাল মূল্যায়ন করতে গিয়ে তিনি বলেন, 'আমি সব সময় এমন সিদ্ধান্ত নিতে চাই, যা আগামী ২০ বছরেও কার্যকর থাকবে। এখন পর্যন্ত ৩৬টি ম্যাচ খেলেছি, যেখানে ভারসাম্য ও ধারাবাহিকতা ছিল দারুণ।'
দলের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতেই একই খেলোয়াড়দের ওপর আস্থা রাখেন বলেও জানান মার্তিনেজ। তার ভাষায়, 'জাতীয় দলে ম্যাচের আগে প্রস্তুতির সময় মাত্র তিন দিন। প্রতিবার স্কোয়াডের ২৩ জনই বদলে ফেললে মূল ধারণাগুলো হারিয়ে যায়। তাই আমরা অভিজ্ঞ ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ খেলোয়াড়দের ধরে রেখেছি ব্রুনো ফার্নান্দেজ, বার্নার্দো সিলভা, রুবেন নেভেস, রুবেন দিয়াস, ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। পাশাপাশি নতুন প্রতিভারাও ম্যাচ জেতাতে এগিয়ে এসেছে, ভিতিনিয়া, জোয়াও নেভেস, চিকো কনসেইসাও, পেদ্রো নেতো, রেনাতো ভেইগা।'
পর্তুগিজ যুব ফুটবলের ভূয়সী প্রশংসা করে মার্তিনেজ বলেন, 'মাত্র ১ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার দেশ হয়েও পর্তুগাল প্রতি বছর ৩-৪ জন বিশ্বমানের খেলোয়াড় তৈরি করছে, এটা অন্য দেশের জন্য উদাহরণ।'
২০২৬ বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে আগামী মার্চে সহ-আয়োজক মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলবে পর্তুগাল। এরপর গ্রুপ 'কে'তে নিউ ক্যালেডোনিয়া, জ্যামাইকা বা ডিআর কঙ্গোর যেকোনো এক দলের বিপক্ষে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে সেলেসাওরা। গ্রুপে তাদের অন্য প্রতিপক্ষ বিশ্বকাপে অভিষেক করতে যাওয়া উজবেকিস্তান ও দক্ষিণ আমেরিকার শক্তিশালী কলম্বিয়া।


Comments