বিশ্বমঞ্চে গর্ব আর আক্ষেপে ভর করে রনি

আন্তর্জাতিক আসরে জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করা প্রতিটি ক্রীড়াবিদের জন্যই গর্বের বিষয়। বাংলাদেশের অ্যাথলেট নাজিমুল হোসেন রনির ক্ষেত্রেও বিষয়টি ব্যতিক্রম নয়। আগামী সোমবার জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ৪০০ মিটার হার্ডলসে নামবেন তিনি।

তবে এই গর্বের পাশাপাশি রনি বহন করছেন আক্ষেপও।

'আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের হয়ে অংশ নিতে পারা নিঃসন্দেহে গর্বের। তবে সমস্যাটা হচ্ছে, এমন বিশ্বমানের প্রতিযোগিতায় প্রাণপণ চেষ্টা করেও আমরা সাধারণত দেশকে কিছু ফিরিয়ে দিতে পারি না। এটাই খারাপ লাগার চেয়ে বেশি আক্ষেপের বিষয়,' ফোনে ডেইলি স্টারকে নিজের মনের কথা জানালেন রনি।

২৬ বছর বয়সী এই হার্ডলারের জন্য টোকিওতে এবারের আসর হবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার মাত্র দ্বিতীয় অংশগ্রহণ। গত মার্চে দক্ষিণ কোরিয়ায় এশিয়ান অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে অভিষেক হয়েছিল তার। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে নতুন রেকর্ড গড়েই জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি।

বিশ্বসেরাদের সঙ্গে লড়াই যতটা কঠিনই হোক, রনির চোখ এখন ভবিষ্যতের দিকে। তিনি চান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আসন্ন সাউথ এশিয়ান গেমসে নিজেকে আরও পরিণত করে তুলতে।

'জাতীয় বা এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে যা অর্জন করেছি, তা আন্তর্জাতিক মান থেকে অনেক দূরে। তবে আমি যদি আমার জাতীয় রেকর্ড (৫০.৮৪ সেকেন্ড) আরও উন্নত করতে পারি, তাহলে সাউথ এশিয়ান গেমসে দেশকে কিছু দিতে পারব বলে বিশ্বাস করি। টোকিওতে যদি সময়টা কমাতে পারি, তাহলেই আমি খুশি হব,' আশাবাদী কণ্ঠে বললেন তিনি।

রনি জানেন, বর্তমান সময় দিয়ে বড় কিছু পাওয়া কঠিন। 'সাউথ এশিয়ান গেমসে পদক জিততে হলে সময় নামাতে হবে অন্তত ৪৯.২০ বা ৪৯.৩০ সেকেন্ডে। অবশ্যই তা সম্ভব, যদি বিদেশি কোচের অধীনে সঠিক প্রশিক্ষণ আর উপযুক্ত ডায়েট পাই,' যোগ করেন বগুড়ায় জন্ম নেওয়া এই অ্যাথলেট।

এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে তিনি দৌড়েছিলেন ৫২.৩৯ সেকেন্ডে। এরপর গত মাসে সামার অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে নামান ৫২.৩০ সেকেন্ডে (হ্যান্ড-টাইমড)। তবে তার আগে হাঁটুর চোটে ভুগতে হয়েছিল প্রায় ১২ দিন, যে কারণে নিয়মিত অনুশীলন করতে পারেননি সেনাবাহিনীর এই ক্রীড়াবিদ।

টোকিওতে আজ থেকে শুরু হবে তার তিন দিনের অফিসিয়াল ট্রেনিং। সোমবার মূল প্রতিযোগিতায় নামার আগে হোটেলের আশপাশে দৌড় ও ওয়ার্ম-আপ করে নিজেকে সচল রেখেছেন তিনি।

রনির পথচলা মোটেও সহজ ছিল না। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার পাঁচ বছর পর, ২০২২ সালে প্রথম জাতীয় অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেন তিনি। যদিও ২০১৮ সালে আন্তঃইউনিট প্রতিযোগিতায় নজর কাড়েন, সেনাবাহিনীর অ্যাথলেটিক্স দলে ডাক পান আরও তিন বছর পর, ২০২১ সালে।

এরপর থেকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাকে। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ৪০০ মিটার স্প্রিন্টে স্বর্ণ জিতে পথচলা শুরু হয়। এরপর নাম লেখান ৪০০ মিটার হার্ডলসে, যেখানে তিনি ইতোমধ্যে টানা তিনবার জাতীয় স্বর্ণ জিতেছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

3h ago