'মেসি মোমেন্ট' মিস করে পরের ট্রফিতে স্বপ্নপূরণের প্রতিশ্রুতি দিব্যার

বাতুমিতে ফিদে নারী বিশ্বকাপ জয়ের পরই বদলে গেছে মাত্র ১৮ বছর বয়সী দিব্যা দেশমুখের জীবন। এই জয়ের সঙ্গে এসেছে বহু অর্জন—নারী দাবায় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন খেতাব, গ্র্যান্ডমাস্টার উপাধি এবং নারী ক্যান্ডিডেট ইভেন্টে খেলার যোগ্যতা। কিন্তু ট্রফি হাতে নিয়েও দিব্যার মনে ছিল এক বিশেষ উদযাপনের পরিকল্পনা। যা করতে না পেরে আক্ষেপ ঝরে তার কণ্ঠে।

মূলত লিওনেল মেসির মতো বিছানায় শুয়ে ট্রফিকে জড়িয়ে ধরে ছবি তোলার ইচ্ছা ছিল দিব্যার। মেসির সেই ছবি বহু আগেই তাকে অনুপ্রাণিত করেছিল। কিন্তু টানা খেলার ক্লান্তিতে সেই 'মেসি মুহূর্ত' আর ধরা দেয়নি। দিব্যা হাসতে হাসতে জানিয়েছেন—'পরের ট্রফি দিয়ে অবশ্যই করব।'

ঐতিহাসিক জয়ের পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে দিব্যা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত ভিডিও কলে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, দিল্লিতে ক্রীড়ামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার আমন্ত্রণও পেয়েছেন। শুভেচ্ছা বার্তার বন্যায় তার ফোন থামছেই না, যা সামলাতে এখনো হিমশিম খাচ্ছেন। 'অগণিত বার্তা এসেছে, অনেকের উত্তর এখনো দিতে পারিনি। আমি তো একাই, তবে সব কিছুর জন্য ভীষণ কৃতজ্ঞ,' বলেন তিনি।

নিজ শহর নাগপুরে ফিরে বোঝা গেল, তিনি এখন তার এলাকার নাম। হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে খোলা ছাদের গাড়িতে তাকে সংবর্ধনা দিয়েছে, শিশুদের কণ্ঠে কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে 'দিব্যা, দিব্যা'। 'যখন ভিড় দেখলাম, বিশেষ করে এত শিশু, মনে হলো এটা সত্যিই বিশেষ কিছু,' জানালেন দিব্যা।

তবে এই জনপ্রিয়তার সঙ্গে এসেছে অবিরাম ব্যস্ততা ও ক্লান্তি। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান, মিডিয়া সাক্ষাৎকার, এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভিড়ে দিন কাটছে। দিব্যার মুখে হাসি, 'আমি এখনো ততটাই ক্লান্ত, যতটা ছিলাম বাতুমিতে।'

উদযাপনের মাঝেও দিব্যা ভুলে যাননি তার পথপ্রদর্শকদের কথা। নাগপুরের অনুষ্ঠানে তিনি প্রয়াত কোচ রাহুল জোশির ছবি হাতে তুলে ধরেন এবং নিজের গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব তাকে উৎসর্গ করেন। 'যখন আমি দাবা বুঝতাম না, তখন থেকেই উনি আমার দিশারি ছিলেন। তিনি আজ বেঁচে থাকলে খুব খুশি হতেন,' স্মরণ করলেন দিব্যা।

দাবার প্রথম বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতাগুলোতেই গড়ে উঠেছে দিব্যার আজকের লড়াকু মানসিকতা। তার ভাষায়, 'ওই প্রতিযোগিতাগুলো আমাকে শিখিয়েছে চাপ সামলাতে, কখনো ড্র মেনে না নিতে, সবসময় সোনা জেতার লক্ষ্যে খেলতে। সেই মানসিকতাই আমাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে।'

বাতুমির এই জয় ভারতীয় দাবার জন্যও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ফাইনালে দিব্যার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নিজ দেশের কোনেরু হাম্পি, যা নিশ্চিত করেছে—শিরোপা থাকছে ভারতের ঘরেই। দিব্যার মতে, 'হাম্পি দিদির সঙ্গে ফাইনাল খেলতে পেরে ভারতীয় দাবার জন্য ভালো লেগেছে। এটা ছোট মেয়েদের জন্য অনুপ্রেরণা। গত কয়েক বছরে ভারতীয় দাবা অবিশ্বাস্যভাবে এগিয়েছে। গুকেশ, প্রাগ, অর্জুন আর নিহালের মতো খেলোয়াড়রা প্রমাণ করেছে আমরা দীর্ঘমেয়াদে এখানে আছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Shibli Rubayat, Reaz Islam banned for life in market over scam

In 2022, asset management firm LR Global invested Tk 23.6 crore to acquire a 51 percent stake in Padma Printers, a delisted company, from six mutual funds it manages

2h ago