মেটা-রেব্যান স্মার্ট চশমায় থাকছে কল, গান শোনা ও লাইভ ভিডিও ফিচার

রেব্যান মেটা স্মার্ট গ্লাস ও কেস। ছবি: সংগৃহীত
রেব্যান মেটা স্মার্ট গ্লাস ও কেস। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত হয় 'কানেক্ট' সম্মেলন। এই সম্মেলনে প্রখ্যাত চশমা নির্মাতা ও ফ্যাশন প্রতিষ্ঠান রেব্যানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে দ্বিতীয় প্রজন্মের স্মার্ট গ্লাসের ঘোষণা দিয়েছে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা। এতে থাকছে কল করা, গান শোনা ও লাইভ স্ট্রিমিং ফিচারসহ আরও কিছু আধুনিক প্রযুক্তি। 

অভিনব এই চশমার নাম দেওয়া হয়েছে 'রেব্যান মেটা স্মার্ট গ্লাস'।

 দ্বিতীয় প্রজন্মের স্মার্ট গ্লাস এর আগের মডেলের চেয়ে আরও উন্নত, আধুনিক ও কার্যকর। ২০২১ সালে প্রথম রেব্যান মেটা স্মার্ট চশমা বাজারে ছাড়া হয়েছিল। এই স্মার্ট গ্লাসের দাম শুরু হয়েছে ২৯৯ ডলার থেকে এবং গতকাল ১৭ অক্টোবর থেকে এটি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।

কেন স্মার্ট গ্লাস

রেব্যান মেটা স্মার্ট গ্লাস। ছবি: সংগৃহীত
রেব্যান মেটা স্মার্ট গ্লাস। ছবি: সংগৃহীত

চশমা কারো কারো কাছে ফ্যাশনের উপকরণ হলেও প্রয়োজনীয়তার খাতিরেই বেশিরভাগ মানুষ এটি ব্যবহার করেন। তাহলে কেন এই ধ্রুপদী পণ্যের সঙ্গে এতো প্রযুক্তির সন্নিবেশ? এ প্রশ্ন ওঠা খুবই স্বাভাবিক।

মূলত দুটি চাহিদাকে মাথায় রেখে এই চশমার নকশা করা হয়েছে।

হেডফোনের বিকল্প

রেব্যান স্মার্ট গ্লাস পরে আছেন মার্ক জাকারবার্গ। ছবি: সংগৃহীত
রেব্যান স্মার্ট গ্লাস পরে আছেন মার্ক জাকারবার্গ। ছবি: সংগৃহীত

প্রথমত, এগুলো হেডফোনের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে। এগুলোতে অ্যামাজনের ইকো ফ্রেমস ও বোস টেমপো সিরিজের মতো ব্যক্তিগত অডিও সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে, যার ফলে চশমাটি যিনি পরে থাকবেন, তিনিই শুধু অডিও শুনতে পাবেন। উন্নতমানের কল ও ভয়েস কমান্ড সুবিধা নিশ্চিত করতে মেটার স্মার্ট চশমায় পাঁচটি উন্নত ও সংবেদনশীল মাইক্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছে।

ছবি তোলা ও ভিডিও ধারণ

রেব্যান স্মার্ট গ্লাসের ক্যামেরা দিয়ে তোলা ছবি। ছবি: সংগৃহীত
রেব্যান স্মার্ট গ্লাসের ক্যামেরা দিয়ে তোলা ছবি। ছবি: সংগৃহীত

মেটার নতুন স্মার্ট চশমার অপর গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এর উন্নত ক্যামেরা। এতে যুক্ত করা হয়েছে ১২ মেগাপিক্সেলের ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা, যা ১০৮০ পিক্সেল রেজোল্যুশনে সর্বোচ্চ ৬০ সেকেন্ড পর্যন্ত ভিডিও ধারণ করতে সক্ষম। ৩২ গিগাবাইট ধারণক্ষমতার স্মার্ট চশমায় ৫০০টি ছবি ও ১০০টি ৩০ সেকেন্ডের ভিডিও সংরক্ষণ করা যায়। সব ছবি ও ভিডিও সহজেই 'মেটা ভিউ' অ্যাপের মাধ্যমে সিনক্রোনাইজ করা যায়।

নতুন রেব্যান মেটা স্মার্ট গ্লাসের আরেকটি উল্লেখযোগ্য ফিচার হচ্ছে এর মাধ্যমে ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে সরাসরি পোস্ট করা যায়। যদিও এটি মানুষের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করবে কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য বিশেষ সুবিধা

রেব্যান মেটা স্মার্ট গ্লাস। ছবি: সংগৃহীত
রেব্যান মেটা স্মার্ট গ্লাস। ছবি: সংগৃহীত

ধারণা করা হচ্ছে নতুন এই স্মার্ট চশমার মাধ্যমে কনটেন্ট নির্মাতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাইছে মেটা। দুই হাত ব্যস্ত থাকা অবস্থাতেও এই চশমার মাধ্যমে ভিডিও ধারণ করা সম্ভব, যা কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য খুবই কাজে আসবে।

ফ্যাশন উপকরণ হিসেবেও এগিয়ে মেটা স্মার্ট গ্লাস

রেব্যানের প্রথাগত চশমা ও স্মার্ট চশমা। ছবি: সংগৃহীত
রেব্যানের প্রথাগত চশমা ও স্মার্ট চশমা। ছবি: সংগৃহীত

রেব্যানের সঙ্গে যৌথ অংশীদারিত্বে তৈরি এই চশমাটির নান্দনিক আবেদনের দিকটিতে অবহেলা করা হয়নি। নতুন চশমাগুলো বিভিন্ন রঙে পাওয়া যাবে, যার মধ্যে রয়েছে 'ম্যাট জিন্স' ও 'ক্যারামেল'। স্টাইলের ক্ষেত্রেও নতুনত্ব আনা হয়েছে। নতুন 'হেডলাইনার' স্টাইলের পাশাপাশি ক্লাসিক 'ওয়েফেয়ারার' স্টাইলেও পাওয়া যাবে এই চশমা।

শক্তিশালী প্রসেসর ও ব্যাটারি

রেব্যান মেটা স্মার্ট চশমায় কোয়ালকমের স্ন্যাপড্রাগন এআর১ জেন১ প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে, যার ফলে এতে নানা এআই ফিচার ব্যবহার করা যাবে। একবার চার্জ দেওয়ার পর এই চশমার স্মার্ট ফিচারগুলো অনায়াসে চার থেকে ছয় ঘণ্টা ব্যবহার করা যাবে।

রেব্যান মেটা স্মার্ট গ্লাস। ছবি: সংগৃহীত
রেব্যান মেটা স্মার্ট গ্লাস। ছবি: সংগৃহীত

তবে চশমার কেসটিও একটি চার্জিং কেস বা ব্যাকআপ ব্যাটারি হিসেবে কাজ করবে। একবার চার্জ ফুরালে এই কেসের মাধ্যমে আরও আটবার এটিকে চার্জ দেওয়া যাবে।

আগের মডেলের চেয়ে সবদিক থেকে উন্নত হওয়া স্বত্বেও বাজারে এটি কেমন সাড়া ফেলবে, তা এখনো দেখার বাকী আছে।

পুরো প্রযুক্তি বিশ্ব মেটার এই স্মার্ট চশমার দিকে নজর রাখছে। স্মার্টফোনের পর স্মার্টওয়াচ, এবার এলো স্মার্টচশমা।

বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরণের ডিভাইসের সাফল্য বা ব্যর্থতা আগামী বছরগুলোতে পরিধানযোগ্য প্রযুক্তির মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।

ইংরেজি থেকে ভাবানুবাদ করেছেন আহমেদ হিমেল

 

Comments

The Daily Star  | English

Dozens of zombie firms still trading as if nothing is wrong

Nearly four dozen companies have been languishing in the junk category of the Dhaka Stock Exchange (DSE) for at least five years, yet their shares continue to trade on the country’s main market and sometimes even appear among the top gainers. 

1h ago