সিভিতে যে ৫ ভুল করবেন না

সিভি, চাকরিপ্রার্থী,
ছবি: সংগৃহীত

সিভি হচ্ছে একজন চাকরিপ্রার্থীর প্রথম পরিচিতি। কথায় বলে, প্রথম দেখায় প্রেম হয়ে যায়। সিভিও অনেকটা তেমন। সিভি দেখে সন্তুষ্ট হলে কেবল নিয়োগকারীরা একজন প্রার্থীকে সাক্ষাৎকারে ডাকেন। অনেক চাকরিপ্রার্থী মনে করেন সিভি লেখা সহজ। হয়তো তাদের ধারণা ঠিক। কিন্তু, সিভিতে আমরা প্রায়ই ৫টি মারাত্মক ভুল করি। এই ভুলগুলো অনেক চাকরিপ্রার্থীকে পিছিয়ে রাখে।

এখানে সেই ৫টি ভুলের কথা উল্লেখ করা হলো। এগুলো এড়িয়ে চললে নিজেকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখা সহজ হবে।

জোড়াতালি

অনেকে জোড়াতালি দিয়ে একটি সিভি লিখে জমা দিয়ে দেয়। এতে কোনো ধারাবাহিকতা থাকে না। যা একটি সিভির সবচেয়ে মাারত্মক ভুল। আর এ ধরনের সিভি নিয়োগকর্তাদের কাছে বিরক্তিকর হতে পারে। তাই সিভি হতে হবে সাজানো-গোছানো ও পরিপাটি। শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার বিবরণ ধারাবাহিকভাবে লিখতে হবে। ব্যক্তিগত তথ্যেও ধারাবাহিকতা মেনে চলতে হবে। অনেকে আবার অনলাইন থেকে সিভি নামিয়ে তাতে নিজের তথ্য যোগ করে পাঠিয়ে দেন। এটাও বড় ভুল। আপনার সিভি আপনার পরিচয়। অনলাইন থেকে যে সিভি নামিয়েছেন তা আপনার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে নাও যেতে পারে। কারণ, ওই সিভিটি আরেকজন তার মতো করে লিখেছেন। সেই ব্যক্তি কখনোই আপনি নন। তাই এ ধরনের ভুল করা যাবে না। নিয়োগকর্তারা খুব সহজে এগুলো শনাক্ত করতে পারেন। তাদের বোকা ভাবা মোটেও ঠিক নয়। মনে রাখতে হবে, নিয়োগকারীরা মূল্যায়নের সময় জেনেরিক সিভির চেয়ে নিজের তৈরি সিভিকে এগিয়ে রাখেন।

কী ওয়ার্ড ব্যবহার না করা

অনেক মাঝারি ও বড় প্রতিষ্ঠানগুলো কাজের বিপরীতে অ্যাপ্লিকেশন ট্র্যাকিং সিস্টেম বা এটিএস অনুযায়ী সিভি ফিল্টার করে। তারা প্রধানত কী ওয়ার্ড ও বাক্যাংশ বিশ্লেষণ করে সিভিগুলো র‌্যাংক করে। তাই সিভিতে কাজের বিবরণ থেকে কী ওয়ার্ড ও বাক্যাংশ চিহ্নিত করুন। তাহলে এটি এটিএস ফিল্টারে সহায়তা করবে। অনুমান করা হয় ৭০ শতাংশ সিভি এটিএস সিস্টেমের সঙ্গে জড়িত। তাই সিভিতে কী ওয়ার্ড ও বাক্যাংশ ব্যবহার করুন।

বানান ভুল

কিছু জরিপে অনুযায়ী, প্রায় ৫০ শতাংশ সিভিতে বানান ভুল থাকে। হয়তো তথ্যটি অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। কিন্তু, দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। বর্তমানে অনলাইনে বানান চেকের বিভিন্ন প্লাটফর্ম থাকতেও বানান ভুল হওয়া অনেক বড় একটি ভুল। নিয়োগকর্তারা সাধারণ এটিকে অসাবধানতা ও অসচেতন মানুষ হিসেবে চিহ্নিত করে। যা চাকরি বাজারে যে কাউকে অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে রাখবে। যদিও  অনলাইন বানান চেক মোটেও নির্ভরযোগ্য উপায় নয়। তাই সবচেয়ে ভালো হয় সিভি পাঠানোর আগে অন্য কাউকে পড়তে দেওয়া।

ছোট অর্জন অন্তর্ভুক্ত না করা

অনেক চাকরিপ্রার্থী সিভিতে ভূমিকা ও দায়িত্বের দিকগুলো বর্ণনা করেন। যেহেতু নিয়োগকারীরা ধারাবাহিকভাবে নিয়োগ দিচ্ছেন এবং সবার সিভিতে এগুলো থাকে। তাই নিয়োগকারীরা সবসময় ভিন্ন কিছু খোঁজেন। অথচ, আমরা নিজেদের ছোট ছোট অর্জনকে সিভিতে উল্লেখ করি না। কিন্তু, সিভিতে যেকোনো অর্জনকে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। ছোট একটি অর্জন অন্য যেকোনো প্রতিযোগীর চেয়ে আপনাকে আলাদা করে ফেলবে। এটাই হতে পারে আপনার চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক দিক। তাই অর্জন ছোট হলেও সেটিকে এড়িয়ে না গিয়ে কী পয়েন্ট হিসেবে উল্লেখ করুন। আপনার ওই ছোট অর্জনটিই নিয়োগকর্তাকে সন্তুষ্ট করতে পারে।

দীর্ঘ সিভি

মনে রাখতে হবে, নিয়োগকর্তাদের সময় কম। তারা কয়েক মিনিট নয়, বরং কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে একটি সিভি দেখতে চায়। তাই অকারণে সিভি দীর্ঘ না করে নিয়োগকর্তার সময়ের বিষয়টিও মাথায় রাখুন। সিভি সবসময় ২ পৃষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত তথ্য না দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলোই দিন। এমনকি আপনার যদি অনেক বছরের অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে বিস্তারিত লিখতে যাবেন না। বরং সেগুলো খুব সংক্ষেপে লিখুন। কারণ, আপনি ১০ বছর আগে কী করেছিলেন তা নিয়ে নিয়োগকারীদের আগ্রহ থাকে না। বরং ক্যারিয়ারের সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কী করেছেন তারা সেটি দেখেন। তাই আপনারও সেদিকে মনোনিবেশ করা উচিত।

Comments

The Daily Star  | English

BNP sticks to demand for polls by December

In a meeting with Chief Adviser Prof Muhammad Yunus last night, the BNP restated its demands that the next general election be held by December and the government immediately announce a roadmap to that end.

5h ago