‘রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের’ অভিযোগে ঢাবি শিক্ষার্থীকে পুলিশে দিলেন প্রভোস্ট

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে 'রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্তে'র অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করেছে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মেফতাহুল হোসেন আল মারুফকে থানায় সোপর্দ করা হয়।

হল প্রাধ্যক্ষের অভিযোগ, ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে 'রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং ইসলামী ছাত্র শিবিরের সম্পৃক্ততা'র প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওই শিক্ষার্থী রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এবং জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে বলে ডিজিটাল প্রমাণ রয়েছে৷ আমরা তদন্ত করে যতটা সম্ভব দেখেছি৷ সীমাবদ্ধতা থাকায় আমরা প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে থানায় সোপর্দ করি। আমরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিয়েছি৷ বাকিটা তারা দেখবেন৷'

'ওই শিক্ষার্থী ইসলামী ছাত্র শিবিরের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়েছে এবং সে স্বীকার করেছে৷ শুধু তাই না, সে পাকিস্তান ভিত্তিক সংগঠন ইসলামী জামাতে তালেবা পাকিস্তানের পেজেও সে লাইক দিয়েছে,' বলেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের একজন সদস্য জানান, ওই শিক্ষার্থীর কাছে একটি নকল জাতীয় পরিচয়পত্রও পাওয়া গেছে৷

থানায় নেওয়ার পর ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের৷

ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'আমাদের বিভাগের গ্রুপে একটা কথার পরিপ্রেক্ষিতে আমি লিখেছি যে, ২০০৫ সালে সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলা চালিয়েছিল জামায়াতুল মুজাহিদিন নামের একটি সংগঠন বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে৷ ওই হামলার জন্য যদি বিএনপি-জামায়াত দায়ী হয়, তাহলে ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত যতগুলো জঙ্গী হামলা হয়েছে, সবগুলোর জন্য আওয়ামী লীগ সরকার দায়ী হওয়ার কথা।'

তিনি আরও বলেন, 'এটা একটি রাজনৈতিক আলাপ থেকে বলেছি, যা ছিল অভ্যন্তরীণ আলোচনা৷ পরে দেখি গ্রুপের একটি স্ক্রিনশর্ট আমাদের হলের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শান্ত ভাইয়ের কাছে কেউ একজন পাঠিয়েছেন৷ এরপর হলের প্রাধ্যক্ষ স্যার আমাকে ডেকে নিয়ে বলছেন যে, আমি নাকি রাষ্ট্রবিরোধী ও জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত৷ অথচ এগুলোর কোনোটিই সত্য নয়৷ আমার বিরুদ্ধে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগও দেয়নি৷ আমার মেসেজটি দেখেই দোষী বানিয়ে দিলো৷ কোনো ধরনের তদন্ত না করেই এবং আমার কোনো কথাই না শুনেই আমাকে থানায় পাঠিয়ে দিলো।'

বিভাগের অভ্যন্তরীণ মেসেঞ্জার গ্রুপের ওই স্ক্রিনশর্টটি দ্য ডেইলি স্টারের হাতে এসেছে৷ তাতে মেফতাহুলের বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া গেছে৷

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদূদ হাওলাদারের সঙ্গে একাধিকবার টেলিফোনে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

5h ago