রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২ স্থাপনার নাম পরিবর্তন

রাবি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসন ক্যাম্পাসের অন্তত ১২টি ভবন ও স্থাপনার নাম পরিবর্তন করেছে। 

গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩৯তম সিন্ডিকেট সভায় এসব স্থাপনার নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

রাবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতেখার আলম মাসুদ দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তবে নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের একাংশের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করেছে। 

তাদের অভিযোগ, বেশিরভাগ নাম পরিবর্তন অপ্রয়োজনীয় ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

নামকরণ কমিটির সদস্য সচিব ও রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতেখার আলম মাসুদ বলেন, 'সিন্ডিকেট সভায় কয়েকটি স্থাপনার নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আগে "বঙ্গবন্ধু" হলের নাম পরিবর্তনের দাবি তুলেছিল।'

'তাদের সেই দাবি আনুষ্ঠানিক না হলেও আমরা তাদের আবেগ বুঝতে পেরে ছেলেদের হলের নাম "বিজয়-২৪" ও মেয়েদের হলের নাম "জুলাই-৩৬" করা হয়েছে,' বলেন তিনি।

সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে 'বিজয়-২৪ হল', বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের নাম 'জুলাই-৩৬ হল' করা হয়েছে।

সৈয়দ নজরুল প্রশাসনিক ভবনের নাম বদলে প্রশাসনিক ভবন-১, সৈয়দ মনসুর আলী প্রশাসনিক ভবনের নাম প্রশাসনিক ভবন-২, তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের নাম সিনেট ভবন, শেখ কামাল স্টেডিয়ামকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়াম, ড. কুদরত-ই-খুদা একাডেমিক ভবনকে জাবির ইবনে হাইয়ান ভবন, ড. ওয়াজেদ মিয়া একাডেমিক ভবনের নাম জামাল নজরুল ভবন করা হয়েছে।

এছাড়া, কৃষি অনুষদ ভবনকে কৃষি ভবন, শেখ রাসেল মডেল স্কুলের নাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মডেল স্কুল, কাজলা গেটের নাম বদলে শহীদ সাকিব আনজুম গেট ও বিনোদপুর গেটের নাম শহীদ আলী রায়হান গেট করা হয়েছে।

নাম পরিবর্তনের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে রাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠনগত ও নীতিগত সংস্কারের প্রয়োজন, সেখানে প্রশাসন নাম পরিবর্তনে ব্যস্ত।'

'এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মতামত না নিয়ে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে' জানিয়ে তিনি বলেন, 'তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম—১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের নায়ক। তাদের নাম সরিয়ে দিয়ে প্রশাসন কি ১৯৭১-এর ইতিহাসকে অপমান করছে না?'

রাবি ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওয়াজেদ শিশির অভি বলেন, 'সিন্ডিকেটের এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত উদ্বেগজনক। হলের সিট সংকট, শ্রেণিকক্ষ ও গবেষণাগারের সংকট, শিক্ষক নিয়োগ ও নিরাপত্তার সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ প্রশাসন অপ্রয়োজনীয়ভাবে নাম পরিবর্তনে ব্যস্ত।'

রাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহি বলেন, 'আমরা এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করি। বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের। নাম পরিবর্তনের আগে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা হওয়া উচিত ছিল।'

উল্লেখ্য, গত ৬ ফেব্রুয়ারির রাতে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ বঙ্গবন্ধু হল, ফজিলাতুন্নেসা হল, শেখ রাসেল মডেল স্কুল, শেখ কামাল স্টেডিয়াম, নির্মাণাধীন কামারুজ্জামান ও শেখ হাসিনা হলের নামফলক সরিয়ে দেয়। এরপর ৬ মার্চ রাবি প্রশাসন সাত সদস্যের নামকরণ কমিটি গঠন করে।

Comments

The Daily Star  | English

Highest budget for education if BNP returns to power, pledges Tarique

Party's plans include repairing and improving dilapidated primary schools, he says

1h ago