রাকসু নির্বাচন: প্রশাসনের সভা থেকে ছাত্রদল ও গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের ওয়াক আউট

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে রাকসু প্রার্থী ও সক্রিয় ছাত্রসংগঠনগুলোকে নিয়ে আয়োজিত সভা। ছবি: স্টার

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে আয়োজিত জরুরি সভা থেকে ওয়াক আউট করেছে ছাত্রদল ও বাম সংগঠনগুলোর জোট 'গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট'।

আজ রোববার বিকেল ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে রাকসু প্রার্থী ও সক্রিয় ছাত্রসংগঠনগুলোকে নিয়ে আয়োজিত সভায় এ ঘটনা ঘটে।

সভায় নির্বাচন কমিশন জানায়, পূর্বনির্ধারিত ২৫ সেপ্টেম্বরেই রাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। তবে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত আগামীকাল সোমবার জানানো হবে।

ওয়াক আউটের কারণ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের অভিযোগ, সভায় আলোচনার পরিবেশ ছিল না। 

অপরদিকে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট জানায়, গত ৫ আগস্ট মশাল মিছিলে হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা আলোচনায় অংশ নেওয়ায় তারা সভা বর্জন করেছেন।

ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, 'আমরা আলোচনায় এসে দেখি, তারা বাংলাদেশপন্থী কমিশনার নন, তারা পাকিস্তানপন্থী কমিশনার। ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ ও ২৪-এর জুলাই-আগস্টের চেতনা এই প্রশাসন ধারণ করে না। তাই সভা বর্জন করে বের হয়ে এসেছি।'

গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের সংগঠক ও শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, '৫ আগস্টের পর গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের মশাল মিছিলে হামলা চালায় ছাত্রশিবির সমর্থিত একটি গোষ্ঠী। এ হামলায় চিহ্নিত ব্যক্তিরা আজ এখানে বক্তব্য দিচ্ছে। প্রশাসন সেটি গ্রহণও করছে। আমরা এমন সন্ত্রাসীদের সঙ্গে একই হাউজ শেয়ার করতে পারি না, তাই সভা বর্জন করেছি।'

সভার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা কামাল আকন্দ বলেন, 'ভোটের তারিখ ঠিক থাকবে। তবে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে কমিশন আগামীকাল সভায় সিদ্ধান্ত নেবে। আপাতত মনোনয়নপত্র বিতরণ স্থগিত আছে।'

এদিকে, বিকেল ৫টায় ক্যাম্পাসে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির। ছাত্রদল প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তির দাবি জানায়। তবে শিবির জানায়, অন্তর্ভুক্ত করা হলেও নির্বাচন পূর্বনির্ধারিত তারিখেই অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল সভাপতি বলেন, 'আজকে আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলাম। কিন্তু এখানে সাধারণ শিক্ষার্থী নামধারী কিছু শিবিরকর্মী এসে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমরা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের রাকসুতে অংশগ্রহণ ও ভোটাধিকার চাই। এ ছাড়াও, যারা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, তাদেরও অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এটাই আমাদের দাবি।'

সংবাদ সম্মেলনে রাবি শিবিরের সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদ ফয়সাল বলেন, 'আমরা ছাত্রদলের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি। কিন্তু আমরা নির্বাচন পেছানোর পক্ষে নই। ছাত্রদলের এই দাবিটি আমরাও প্রশাসনকে বহু আগেই জানিয়েছি। আজকের উদ্ভূত পরিস্থিতির পেছনে আমরা প্রশাসনকেই দায়ী করছি। তাদের উদাসীনতাই আজ আমাদের এই পরিস্থিতিতে এনেছে।'

এর আগে, সকাল থেকে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের দাবিতে রাকসু কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করে ছাত্রদল। পরে ছাত্রশিবির, সাবেক সমন্বয়ক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা সেখানে গেলে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। দুপুর পৌনে ২টার দিকে শিক্ষার্থীরা তালা ভেঙে কার্যালয়ে প্রবেশ করলে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়।

Comments

The Daily Star  | English
Yunus, Charter, and Our Future

Yunus, Charter, and Our Future

Can the vision for 'New Bangladesh' ignore the poor, farmers, workers, youth, women, or employment and climate crises?

9h ago