নির্বাচিত হলে শক্তিশালী সাইবার সেল গঠন ও রাবি রেলস্টেশন সচল করব: জীবন

আসন্ন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে জয়ী হলে একটি শক্তিশালী সাইবার সেল গঠন ও রাবি রেলস্টেশন সচল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত 'ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম' প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী নাফিউল ইসলাম জীবন।
দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ছাত্রদলের এই নেতা বলেন, 'দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচন হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সব ধরনের অধিকার ফিরিয়ে আনতে আমি প্রার্থী হয়েছি। তারাও ইতিবাচকভাবে আমাদের প্যানেলকে গ্রহণ করছে।'
নির্বাচিত হলে কী করবেন জানতে চাইলে এই জিএস প্রার্থী বলেন, 'আমরা শিক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ আবাসিক সুবিধা দিতে কাজ করব। যারা এক বছরের মধ্যে আবাসন পাবে না, তাদের জন্য ভর্তুকি নিশ্চিত করার চেষ্টা করব। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের অবস্থা খুবই নাজুক। আমরা এটাকে আধুনিক হাসপাতালে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করব।'
পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য রাবি সংলগ্ন রেলস্টেশনটি সচল করার অঙ্গীকারও করেছেন তিনি। বলেন, 'আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বুক চিরে রেললাইন থাকলেও কোনো একটা শক্তির কারণে দীর্ঘদিন ধরে রেলস্টেশন অচল। আমরা চেষ্টা করব যেন স্টেশন সচল করা হয়। দূরের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের ভোগান্তি লাঘবে এটা সচল করতে হবে।'
একইসঙ্গে নারী শিক্ষার্থীদের সাইবার বুলিং থেকে রক্ষায় শক্তিশালী সাইবার সেল গঠনের ঘোষণা দেন জীবন। 'বট আইডি দিয়ে নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তা করা হয়। আমরা চাই এমন সাইবার সেল থাকুক যেন কেউ আর সাহস না পায় তাদের নিয়ে কটু মন্তব্য করতে,' বলেন তিনি।
নির্বাচিত হলে ভর্তুকির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
জয়ের ব্যাপারে কতটা আশাবাদী? এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের এই জিএস প্রার্থী বলেন, 'শিক্ষার্থীদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য রাকসুতে যোগ্য প্রতিনিধি দরকার। বিগত বছরগুলোতে যেসব ক্ষেত্রে আমাদের বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল, সেগুলো নিয়ে আমরা আমরা কাজ করেছি। আমি মনে করি দমন-পীড়ন-নির্যাতন উপেক্ষা করে যারা কাজ করেছে, শিক্ষার্থীরা তাদের বেছে নেবে। সার্বিকভাবে আমি যেহেতু একটা ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করি, সেখান থেকে আমিও মনে করি আমি শিক্ষার্থীদের সব ধরনের অধিকার আদায় করে দিতে সমর্থ হব।'
'শিক্ষার্থীদের সমর্থনে আশা করি রাকসু নির্বাচনে আমাদের প্যানেল বিপুল ভোটে জয়ী হবে' মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'আমাদের প্যানেলে নির্যাতিত ছাত্রনেতারা জায়গা পেয়েছেন। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভোটের জন্য আমরা আন্দোলন করেছি, তাদের একজনকেও আমরা প্যানেলে রেখেছি। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সদস্য আছেন, ডিনস অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী আছেন। সব মিলিয়ে অন্যান্য প্যানেলের চেয়ে আমাদের প্যানেল বেশি ইনক্লুসিভ ও শিক্ষার্থীদের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে মনে করি।'
ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে শিবির সমর্থিত প্যানেলের জয়ের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে ছাত্রদল নেতা জীবন বলেন, 'দুই জায়গায় আলাদা কনটেক্সটে নির্বাচন হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ সম্পূর্ণ আলাদা। আমরা শিক্ষার্থীদের কাছে যাচ্ছি, তাদের মতামত নিচ্ছি, আমাদের বক্তব্য তারা সাদরে গ্রহণ করছেন। আমরা আশা করি ডাকসু-জাকসুর মতো ফলাফল এখানে হবে না।'
তবে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'আগের চুই ছাত্র সংসদ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এসেছে। রাকসু নির্বাচনেও সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা আছে। আমরা প্রশাসনকে বলেছি, সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ-গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য অবশ্যই ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গণনা করতে হবে। কিন্তু কমিশন ওএমআরে গণনা করতে চায়। আমরা এতে চরম আপত্তি জানিয়েছি। আশঙ্কা করছি ওএমআরে গণনা হলে হ্যাকিংয়ের আশঙ্কা বা কারচুপির সুযোগ থেকে যাবে।'
Comments