৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচন, ভোটগ্রহণ চলছে

ছবি: সোহানুর রহমান রাফি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। 

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় এই ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়টি অ্যাকাডেমিক ভবনের ১৭টি কেন্দ্রে স্থাপিত ৯৯০টি বুথে ভোটগ্রহণ চলছে, চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

সকালে ভোট শুরুর আগেই শিক্ষার্থীদের ভোটকেন্দ্রে যেতে দেখা যায়। আবাসিক শিক্ষার্থীরা এক কক্ষ থেকে অন্য কক্ষে গিয়ে সহপাঠীদের ঘুম থেকে ডেকে ভোট দিতে উৎসাহিত করছেন।

সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের মধ্যেই নির্বাচনী কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে সব কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স সিলগালা করা হয়। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতিটি বুথের কাছাকাছি পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছেন।

ভোটকেন্দ্রগুলোর সামনে শিক্ষার্থীদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ভোটের অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়। সকালে প্রথম ঘণ্টায় ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও প্রার্থীরা আশা প্রকাশ করেছেন, সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়বে।

মোট ২৮ হাজার ৯০১ জন নিবন্ধিত শিক্ষার্থী ৯০২ প্রার্থীর মধ্যে থেকে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। এর মধ্যে রাকসুর ২৩টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৪৭ প্রার্থী। সিনেটের পাঁচটি পদের জন্য লড়ছেন ৫৮ প্রার্থী। আর ১৫টি হল সংসদ পদের জন্য ৫৯৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নির্বাচন কার্যক্রমে যুক্ত ২১২ জন শিক্ষকের মধ্যে ১৭ জন দায়িত্ব পালন করবেন প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে। বিকেল ৫টার দিকে ভোট গণনা শুরু হবে এবং ভোট গণনা শুরুর ১৭ ঘণ্টার মধ্যে সব কেন্দ্রের ফলাফল প্রকাশের চেষ্টা করা হবে।

ক্যাম্পাসজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রায় দুই হাজার পুলিশ সদস্য, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ছয়টি প্লাটুন এবং র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ১২ প্লাটুন মোতায়েন ক্যাম্পাসে রাখা হয়েছে।

সাইবার আক্রমণ বা অনলাইন হয়রানি প্রতিরোধে একটি বিশেষ সাইবার সেলও গঠন করা হয়েছে বলে জানান রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। 

প্রথমে জুন মাসের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করা হলেও ২৮ জুলাই ঘোষিত সূচি অনুযায়ী ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হয় ১৫ সেপ্টেম্বর।

পরে ভোটকে আরও অংশগ্রহণমূলক করতে এবং প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট সম্পন্ন করার জন্য সময় দিতে নির্বাচন পিছিয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়। এরপর আবাসিক হল থেকে ভোটকেন্দ্রগুলো একাডেমিক ভবনে সরিয়ে নেওয়ায় নির্বাচন আরও ১৩ দিন পিছিয়ে যায়।

পরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মহাষষ্ঠীর কারণে ভোটের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয় ২৫ সেপ্টেম্বর। কিন্তু ২০ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর নির্বাচন ফের স্থগিত হয় এবং সর্বশেষ তৃতীয়বারের মতো নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয় ১৬ অক্টোবর।

১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত রাকসু এখন পর্যন্ত মোট ১৪টি নির্বাচনের আয়োজন করেছে। ১৯৯০ সালের পর থেকে সংগঠনটির কার্যক্রম স্থগিত ছিল। সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। তখন রুহুল কবির রিজভী সহ-সভাপতি এবং রুহুল কুদ্দুস বাবু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
 

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

3h ago