বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক ও অসাম্প্রদায়িক ক্যাম্পাস নির্মাণে কাজ করব: পরমা পারমিতা

একটি বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক ও অসাম্প্রদায়িক ক্যাম্পাস নির্মাণে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন আসন্ন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী পরমা পারমিতা।
দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে 'অপরাজেয় ৭১, অপ্রতিরোধ্য ২৪' প্যানেলের এই প্রার্থী বলেন, 'অসাম্প্রদায়িক একটি সমাজ গঠনের জন্য ক্যাম্পাস থেকেই উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ যেন মিলেমিশে থাকতে পারে, সেই সামাজিক-রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশটা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নিশ্চিত করতে চাই।'
ছাত্র ইউনিয়ন নেত্রী পরমা জানান, ছাত্র রাজনীতিকে তিনি রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে দেখেন। বলেন, 'আমি ছাত্র রাজনীতি করতে এসেছি। আমার রাকসু নির্বাচনে আসা রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা থেকেই। ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত আমি যে দায়িত্ব পেয়েছি, সবক্ষেত্রেই নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছি। ক্যাম্পাসের যেকোনো সংগঠন, হল বা ডিপার্টমেন্ট—প্রতিটি জায়গায় আমার কাজটা করে গেছি। এবার ছাত্র প্রতিনিধি হয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখতে চাই।'
জয়ী হলে কী করবেন জানতে চাইলে জিএস প্রার্থী পরমা বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মূল লক্ষ্য গবেষণা, আমি এ জায়গাটাকে অগ্রাধিকার দেবো। এজন্য লাইব্রেরির উন্নয়ন, সেশনজট নিরসন, আবাসন সংকট সমাধান ও স্বাস্থ্যবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে কাজ করব। একই সঙ্গে বৈষম্যহীন ও অসাম্প্রদায়িক ক্যাম্পাস গড়ে তোলা তার মূল লক্ষ্য বলে জানান।'
'একইসঙ্গে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অধিকার সমান হবে। কোনো স্বজনপ্রীতি বা পক্ষপাতিত্ব নয়, সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই,' বলেন চিত্রকলা বিভাগের এই শিক্ষার্থী।
প্যানেল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দিতে পারিনি। তবে ছাত্র ইউনিয়নের মনোনীত প্রার্থীদের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে আগ্রহী স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও আমাদের প্যানেলে আছেন।'
নিজের সম্পর্কে পরমা বলেন, 'আমি দুই রকম কথা পছন্দ করি না। একটা নিরপেক্ষ জায়গা থেকে আমি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। নিরপেক্ষভাবেই সব কাজ করতে চাই।'
নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে পরমা বলেন, 'ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ থাকলেও রাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হবে—এই আশা রাখি। তবে হারজিত থাকবেই, কিন্তু আমরা ফল মেনে নেবো। সবচেয়ে বড় কথা, রাকসু নির্বাচন যেন নিয়মিত হয়, সেটাই আমাদের অন্যতম দাবি।'
দীর্ঘ বিরতির পর রাকসু নির্বাচনকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন পরমা। তার প্রত্যাশা, নির্বাচন স্বচ্ছ হলে শিক্ষার্থীরা প্রকৃত প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারবেন, আর সেই প্রতিনিধিত্ব হবে 'বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক ও অসাম্প্রদায়িক ক্যাম্পাস বিনির্মাণের।'
'গ্রহণযোগ্যতা থাকলে যেকোনো সংগঠনই ভোট পেতে পারে। আমরা যদি শিক্ষার্থীদের বোঝাতে ব্যর্থ হই, সেটাই আমাদের দোষ,' যোগ করেন তিনি।
Comments