ইডেন কলেজে ছাত্রলীগের একাংশের হামলায় সভাপতি রীভাসহ আহত ১০

ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন ওরফে রীভা। ছবি: সংগৃহীত

সিটবাণিজ্য ও চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন ওরফে রীভা।

আজ রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংবাদ সম্মেলনের শেষপর্যায়ে সেখানে উপস্থিত কলেজ শাখা ছাত্রলীগের একাংশের সঙ্গে রীভার বাকবিতণ্ডা হয়। সেসময় তারা চেয়ার নিয়ে রীভার ওপর চড়াও হন। এতে রীভার সমর্থকদের সঙ্গে তাদের মারামারি বাধে। 

এ ঘটনায় রীভাসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।

আহতদের মধ্যে ইডেন ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রীভা ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিতু আক্তার, সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা ও সুমি আক্তার নামে এক কর্মী ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

আজিমপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. আসিবুজ্জামান জানান, রাজিয়া সুলতানা ও সুমি আক্তার নামে দুজন জরুরি বিভাগে চিকিৎসা  নিচ্ছেন। তবে তাদের শরীরে বড় কোনো আঘাত নেই।

গত রোববার সংবাদ সম্মেলনের শেষপর্যায়ে ছাত্রলীগের একাংশ চেয়ার নিয়ে সভাপতি রীভার ওপর চড়াও হন। ছবি: সংগৃহীত

এর আগে, দুপুরে ইডেন কলেজের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাসের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রলীগ সভাপতি রীভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানাকে ক্যাম্পাসে 'অবাঞ্ছিত' ঘোষণা করেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের ২৫ নেত্রী।

সেসময় তারা জানান, তামান্না জেসমিন ও রাজিয়া সুলতানা কলেজ প্রশাসনের থেকেও অনেক বেশি শক্তিশালী। বার বার নানা অপরাধ করার পরও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তামান্না ও রাজিয়ার বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়নি।

শিগগিরই তামান্না ও রাজিয়ার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ছাত্রলীগের কমিটি থেকে গণপদত্যাগের হুমকিও দেন তারা।

এসব অভিযোগের বিষয়ে বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে রীভা বলেন, 'আমার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক। এতে প্রমাণ পাওয়া গেলে হলে যেন আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অন্যথায় যাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধেই যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।'

এ বিষয়ে জানতে ইডেন কলেজ অধ্যক্ষ সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য্যের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সিটবাণিজ্য ও চাঁদাবাজির অভিযোগ করে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ায় গতকাল শনিবার রাতে সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসকে আটকে রেখে হেনস্তা ও মারধরের অভিযোগ ওঠে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গতকাল মধ্যরাত থেকেই ছাত্রলীগের ২ পক্ষের অবস্থানে কলেজ ক্যাম্পাসে উত্তেজনা তৈরি হয়। ঘটনা তদন্তে আজ সকালে ছাত্রলীগ একটি কমিটি করেছে। এ ছাড়া জান্নাতুল প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

আজ দুপুরে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার ওরফে বৈশাখী। 

তিনি বলেন, 'গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার উপস্থিতিতে তাদের অনুসারীরা হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) ছাত্রীনিবাসের সামনে সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এ হামলায় জড়িত ব্যক্তিরা হলেন— সহসভাপতি নুজহাত ফারিয়া ওরফে রোকসানা, আয়েশা সিদ্দিকা ওরফে মীম, আর্নিকা তাবাসসুম ওরফে স্বর্ণা, শিরীণা আক্তার, সোমা মল্লিক ওরফে পপি, জিনাত হাসনাইন, লিমা ফেরদৌস আশরাফ লুবনা, বিজলী আক্তার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঋতু আক্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুন নাহার ওরফে জ্যোতি ও ফারজানা ইয়াসমীন ওরফে নীলা। এই হামলার ঘণ্টাখানেক আগে জান্নাতুল ফেরদৌসের হলের কক্ষে তামান্না ও রাজিয়ার অনুসারীরা হামলা চালান। তখন তার কক্ষে থাকা ল্যাপটপ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আত্মসাৎ করা হয়।'

Comments

The Daily Star  | English
Gunfight

Local BNP leader shot dead in Dhaka’s Badda

When Kamrul was sitting on a chair on the roadside and talking with 2-3 people, two assailants on foot came from behind and shot him before fleeing the scene

3h ago