আবারও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চাইল তালেবান সরকার

কাবুলের এক বাজারে তালেবান পতাকা উড়ছে। ফাইল ছবি: রয়টার্স
কাবুলের এক বাজারে তালেবান পতাকা উড়ছে। ফাইল ছবি: রয়টার্স

আফগানিস্তানের বর্তমান শাসকগোষ্ঠী তালেবান সরকার আবারও তাদের প্রশাসনকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বিদেশি সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

গত শনিবার রাজধানী কাবুলে তালেবান আয়োজিত এক সমাবেশে হাজারো ধর্মীয় নেতা ও বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধি নেতারা অংশ নেন। ওই সমাবেশ শেষে উপস্থিত তালেবান নেতারা এই সরকারের স্বীকৃতির ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মহলগুলোর প্রতি এ আহ্বান জানান। তবে এক্ষেত্রে মেয়েদের স্কুল খুলে দেওয়াসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অন্যান্য দাবি পূরণের ব্যাপারে কোনো ইঙ্গিত দেননি তারা।

আজ সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়।

তালেবান সরকারকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে পশ্চিমা দেশগুলোর  শর্ত হলো- মানবাধিকার বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে, বিশেষত নারীদের ব্যাপারে। এই দাবি পূরণ না হওয়ায় বিদেশী রাষ্ট্রগুলো আফগানিস্তানকে তহবিল দেওয়া বন্ধ রেখেছে এবং বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। ফলে দেশটির অর্থনীতির গভীর সঙ্কটে রয়েছে।

সম্মেলনের অংশগ্রহণকারীরা এক বিবৃতিতে বলেন, 'আমরা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক দেশগুলো, বিশেষত, মুসলমান দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাই ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তানকে স্বীকৃতি দিতে এবং সব ধরনের বিধিনিষেধ প্রত্যাহার, (কেন্দ্রীয় ব্যাংকের) তহবিল মুক্ত করা ও আফগানিস্তানের উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য।'

৩ দিনের এই সম্মেলনে ৪ হাজারেরও বেশি পুরুষ যোগ দেন। সেখানে কোনো নারীর উপস্থিতি ছিল না।

শুক্রবার সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে এতে যোগ দেন তালেবানদের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা। তিনি তালেবানের বিজয়ে অংশগ্রহণকারীদের অভিনন্দন জানান এবং দেশটির স্বাধীনতার বিষয়টি উল্লেখ করেন।

তালেবান সর্বোচ্চ নেতা আখুন্দজাই। ফাইল ছবি: রয়টার্স
তালেবান সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা। ফাইল ছবি: রয়টার্স

মার্চে আফগানিস্তানের সব স্কুল খুলে দেওয়ার অঙ্গীকার করলেও এ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয় তালেবান প্রশাসন। তাদের এই ব্যর্থতায় পশ্চিমের দেশগুলোতে নিন্দার ঝড় ওঠে।

সম্মেলনের কিছু বক্তৃতা রাষ্ট্রায়ত্ত টিভি চ্যানেলে সম্প্রচার করা হয়, যেখানে দেখা গেছে অল্প কয়েকজন বক্তা নারীদের শিক্ষার বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। তালেবানদের সহকারী নেতা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজউদ্দীন হাক্কানী জানান, সারাবিশ্বের দাবি হচ্ছে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার ও শিক্ষা ব্যবস্থা। তবে এগুলোর বাস্তবায়ন সময়সাপেক্ষ।

তালেবানদের সহকারী নেতা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজউদ্দীন হাক্কানী
তালেবানদের সহকারী নেতা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজউদ্দীন হাক্কানী। ফাইল ছবি: এএফপি

তবে দলটির সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা জানান, বিদেশিদের নির্দেশ দেওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই।

আখুন্দজাদা দেশটির দক্ষিণের শহর কান্দাহারে বেশিরভাগ সময় থাকেন এবং কালেভদ্রে জনসম্মুখে উপস্থিত হন।

সম্মেলনের চূড়ান্ত বার্তায় বলা হয়, জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) একটি অবৈধ সংগঠন।

উল্লেখ্য, আফগানিস্তানে বেশ কিছু হামলার জন্য আইএসকে দায়ী করা হয়।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, তালেবান পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর কোনো কার্যক্রমে নাক গলাবে না এবং তাদেরও উচিৎ আফগানিস্তানের কোনো কার্যক্রমে নাক না গলানো।

 

Comments

The Daily Star  | English

Ducsu 2025, a litmus test for the interim government

Ducsu 2025 is much more than a contest for student union posts. It is like a referendum on the future of student politics in Bangladesh

22m ago