‘এমন চরিত্রে আগে কখনো দেখা যায়নি’
ঢাকাই সিনেমার পরিচিত মুখ মামনুন হাসান ইমন—যিনি দর্শকদের কাছে নায়ক ইমন নামেই বেশি পরিচিত। টানা দুই দশক ধরে মডেলিং ও অভিনয়ের মাধ্যমে শোবিজে সক্রিয় তিনি। তৌকীর আহমেদের পরিচালনায় 'দারুচিনি দ্বীপ' সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় যাত্রা শুরু করেন ইমন।
পরবর্তীতে 'গহীনে শব্দ', 'লালটিপ'সহ একাধিক সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। নিজের অবস্থান শক্ত তৈরি করেছেন ইন্ডাস্ট্রিতে।
দেশে ও বিদেশে প্রশংসিত এসব কাজের পাশাপাশি তিনি পেয়েছেন মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কারসহ নানা স্বীকৃতি।
আগামী জানুয়ারিতে মুক্তি পাচ্ছে ইমন অভিনীত নতুন সিনেমা 'ময়নার চর'।
নতুন এই সিনেমা, অভিনয়জীবনের অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে সম্প্রতি দ্য ডেইলি স্টার–এর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে নতুন সিনেমা এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে সম্প্রতি কথা বলেছেন ইমন।
দ্য ডেইলি স্টার: নতুন সিনেমা মুক্তির কথা শোনা যাচ্ছে?
ইমন: ঠিকই শুনেছেন। ময়নার চর নামে নতুন একটি সিনেমা জানুয়ারিতে মুক্তি পাচ্ছে। একেবারেই নতুন গল্প, নতুন চরিত্র। এমন গল্পে ও চরিত্রে আগে কখনো দর্শকরা বড় পর্দায় আমাকে দেখেনি। অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করেছি। অনেক যত্ন নিয়ে পরিচালক কাজ করেছেন। দর্শকরা সুন্দর গল্পের একটি সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে দেখতে পারবেন।
আশা করা যাচ্ছে ১৬ জানুয়ারি মুক্তি পাবে।
দ্য ডেইলি স্টার: কী ধরণের চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন ময়নার চর সিনেমায়?
ইমন: অনেকরকম চ্যালেঞ্জ নিয়ে শুটিং করেছি। যেখানে শুটিং করেছি সেখানে বিদ্যুত ছিল না। একটা চর ছিল। লক্ষীপুর জেলার রামগতি উপজেলার একটা চর। চর এলাকার মানুষের জীবনসংগ্রামকে কেন্দ্র করে ময়নার চর সিনেমার গল্প। প্রত্যন্ত এলাকায় শুটিং হয়েছে। আর তীব্র শীতে শুটিং করাও কষ্টকর ছিল।
ওইরকম শীতের মধ্যে শুটিং করা কতোটা চ্যালেঞ্জিং—তা বলে শেষ করা যাবে না। দিন ও রাতে শুটিং হয়েছে। কিন্ত, কাজটি করে গেছি সিনেমার প্রতি ভালোবাসা থেকে। কাশেম নামের ভিন্ন একটি চরিত্রে দর্শকরা আমাকে দেখবেন।
দ্য ডেইলি স্টার: নায়ক ও মডেল—কোন পরিচয়টি বেশি ভালো লাগে?
ইমন: দেখুন, আমি অভিনয় ভালোবাসি। সিনেমা ভালোবাসি। অনেকগুলো সিনেমা করেছি। এদেশের দর্শকরা আমাকে সিনেমার নায়ক হিসেবে চেনেন।
কিন্ত, ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই আমি মডেলিংও করি। এখনো করছি। মডেল হিসেবে আলাদা একটা পরিচিতি পেয়েছি সবার কাছে। তবে শিল্পী পরিচয় বেশি ভালো লাগে।
দ্য ডেইলি স্টার: ঢাকাই সিনেমার নায়ক হিসেবে অর্জন কি কি?
ইমন: প্রথম অর্জন মানুষের ভালোবাসা—দর্শকদের ভালোবাসা। এছাড়া, অনেক পুরস্কার পেয়েছি। সেরা চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছি। সেরা মডেল হিসেবে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছি।
আমার অভিনীত 'গহীনে শব্দ' সিনেমাটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গিয়েছে, প্রশংসা এবং পুরস্কারও পেয়েছে। আমার অভিনীত 'দারুচিনি দ্বীপ' সিনেমাটি রেকর্ড সংখ্যক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে। এছাড়াও 'পদ্মপাতার জল' সিনেমাটি সেরা চলচ্চিত্রে বাচসাস পুরস্কার পেয়েছে।
আমার অভিনীত 'জোনাকির আলো' অস্কারেও গিয়েছিল। সেইসঙ্গে অস্কারে যাওয়া ছাড়াও জোনাকির আলো অনেকগুলো বড় বড় চলচ্চিত্র উৎসবেও গিয়েছে এবং পুরস্কার জয় করেছে।
আমার অভিনীত 'পরবাসিনী' বাংলাদেশের প্রথম সায়েন্স ফিকশন সিনেমা। এই সিনেমার জন্য ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছি। আরও অনেক সিনেমার জন্যই প্রশংসা পেয়েছি।
দ্য ডেইলি স্টার: সিনেমায় অভিনয়ের কোনো মধুর স্মৃতি?
ইমন: একজন চলচ্চিত্র নায়ক হিসেবে দর্শকদের সাথে অসংখ্য মধুর স্মৃতি আছে। আসলে দর্শকরাই শিল্পীকে বাঁচিয়ে রাখেন। আমারও মধুর স্মৃতির শেষ নেই।
যেখানেই যাই দর্শকরা যেভাবে ভালোবাসা দেখান, তাতে করে জীবনজুড়ে সুন্দর সুন্দর সব স্মৃতি জমে আছে। দেশ-বিদেশে যেখানেই যাই না কেন, মানুষ আমাকে সিনেমার নায়ক হিসেবে ভালোবাসেন।
দ্য ডেইলি স্টার: কোন নায়িকার বিপরীতে অভিনয় করে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছেন?
ইমন: যাদের সাথে নায়ক হিসেবে কাজ করেছি তাদের প্রত্যেকে সম্মানের চোখে দেখি, পছন্দ করি, ভালোবাসি। এককভাবে কেউ নয়। সবাই ভীষণ প্রিয়।
বিদ্যা সিনহা মিমের বিপরীতে সিনেমা করেছি। কুসুম শিকদারের বিপরীতে অভিনয় করেছি 'লালটিপে'। এটি দর্শকপ্রিয় একটি সিনেমা।
অপু বিশ্বাস সহ আরও অনেক নায়িকার বিপরীতেই অভিনয় করেছি।
দ্য ডেইলি স্টার: ওটিটির কাজকে কীভাবে দেখেন?
ইমন: ইতিবাচকভাবে দেখি। অনেক ভালো কাজ হচ্ছে এই মাধ্যমে। মায়া নামে একটি ওয়েব ফিল্মে অভিনয় করে দারুণ সাড়া পেয়েছি।
আমার চরিত্রটি নিয়ে সবাই প্রশংসা করছেন। মায়া ওয়েব ফিল্মে অভিনয় করে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছি। তা-ও আবার সমালোচনা বিভাগে। এটা আমার জন্য বড় কিছু।
আমি বলব ওটিটির কাজ দর্শকরা দেখছেন।


Comments