‘১৫ দিনের মধ্যে কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না হলে কঠোর আন্দোলন’

সোমবার বন্দরনগরীর সদরঘাটে চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের মানববন্ধন। ছবি: সংগৃহীত

হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কর্ণফুলীর তীরের দুই হাজারের বেশি অবৈধ স্থাপনা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন।

নদী কমিশনের চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসন ও বন্দর কর্তৃপক্ষ সম্মিলিতভাবে এ দাবি বাস্তবায়ন না করলে আগামীতে আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

আজ সোমবার বন্দরনগরীর সদরঘাটে এক মানববন্ধনে এ হুঁশিয়ারি দিয়েছে চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন।

বাংলাদেশ নদী কমিশনের চেয়ারম্যান মনুজর আহমেদ চৌধুরীর ৭-৯ নভেম্বর চট্টগ্রাম সফর উপলক্ষে এ মানববন্ধন করা হয়।

এ সময় জানানো হয়, আগামী বুধবার দুই শতাধিক সাম্পান নিয়ে ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চাক্তাই খালের মোহনায় অনশন ধর্মঘট করবে চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনসহ ৫টি সংগঠন।

মানববন্ধন শেষে সমাবেশে বক্তারা জানান, উচ্চ আদালতের আদেশ অবমাননার বিষয়ে হাইকোর্টে আবেদন করার সব প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

বক্তারা বলেন, '২০১৯ সালের মে মাসে কর্ণফুলীর তীরের ২ হাজার ১৮১টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে হাইকোর্ট চূড়ান্ত রায় প্রকাশ করার সাড়ে ৩ বছর অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু জেলা প্রশাসন ও বন্দর কর্তৃপক্ষ এই রায় নিয়ে লুকোচুরি খেলছে।'

তারা বলেন, 'হালদার মোহনা থেকে বঙ্গোপসাগরে কর্ণফুলীর মোহনা পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার এলাকায় ৩ হাজারের বেশি অবৈধ দখলদার কর্ণফুলী নদী দখল করে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সুবিধাবাদী ভূমিদস্যুরা এই দখলের সঙ্গে জড়িত।'

অসাধু চক্র প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে প্রভাব বিস্তার করার কারণে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হচ্ছে না বলে মনে করেন আন্দোলনকারীরা। 

সমাবেশে চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র সাংবাদিক আলীউর রহমান বলেন, 'কর্ণফুলী নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার জন্য আমাদের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদেরও আন্দোলন করার কথা ছিল। কিন্তু তারা কোথাও কর্ণফুলী রক্ষার কথা বলেন না। এ কারণে সর্বস্তরের সুশীল সমাজ, সাম্পান মাঝিরা কর্ণফুলী রক্ষার আন্দোলন করে যাচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী জেলা প্রশাসন ও বন্দর কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই নদীর উভয় তীরের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদীকে ২০০০ সালের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।'

২০২০ সালের মে মাসে উচ্ছেদ করা নদীর জমি আবার দখল করে সেখানে স্থায়ী অবকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে  উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'নদীর সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে স্থায়ী বাধ নির্মাণ করে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট আড়াই শতাধিক বনজ ওষধি গাছ রক্ষা করা না হলে এভাবে বারবার নদী এবং নদী তীর দখল হতে থাকবে।'

চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের উপদেষ্টা বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. ইদ্রিস আলী বলেন, 'প্রশাসনের দেখেও না দেখা নীতির কারণে ভূমিদস্যুরা দখল করে কর্ণফুলীকে পঙ্গু করেছে। দেশের ৯২ শতাংশ অর্থনীতি সচল রাখা নদীর এ অবস্থা জনগণ কিছুতেই মেনে নেবে না।'

চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের নির্বাহী সদস্য ও লেখক দিলরুবা খানমের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ সংগঠক, লেখক নেছার আহমেদ খান, কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন সিনিয়র সহ-সভাপতি জাফর আহমদ প্রমুখ।

Comments

The Daily Star  | English

Victory day today: A nation born out of blood and grit

The tide of war had turned by mid-December in 1971. The promise of freedom was no longer a dream. It had hardened into tangible certainty.

10h ago