আলু-পেঁয়াজের পাইকারি দামও সরকার নির্ধারিত খুচরা মূল্যের বেশি, মানও নিম্ন

কারওয়ান বাজারে আলু-পেঁয়াজের একটি পাইকারি দোকান। ছবি: স্টার

বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার সম্প্রতি ডিম, আলু, পেঁয়াজ ও সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রেতারা নির্ধারিত দামে বিক্রি করছেন না। এমনকি পাইকারি দামও নির্ধারিত খুচরা দামের চেয়ে বেশি দেখা গেছে।

এ অবস্থায় বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালিয়ে বিক্রেতাদের জরিমানা করছে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর ও ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বেঁধে দেওয়া আলুর খুচরা মূল্য কেজিতে সর্বোচ্চ ৩৬ টাকা, দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৬৫ টাকা ও ডিম প্রতি পিস ১২ টাকা।

গত ১৪ সেপ্টেম্বরের এই ঘোষণার পরেও রাজধানীতে আলু ৪৫-৫০ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ৭০-৯০ টাকা কেজি দরে খুচরায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মিরপুর ও শেওড়াপাড়ার বিভিন্ন বাজারে ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।

আজ সোমবার কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, সরকার নির্ধারিত খুচরা দামের চেয়ে বেশি দামে পাইকারি ক্রেতাদের কাছে বিক্রি হচ্ছে আলু-পেঁয়াজ। এসব পণ্যের মানও ছিল যথেষ্ট নিম্ন।

বিকেলে বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, আলু পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৩৭-৪০ টাকা কেজি দরে। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬২-৭৮ টাকায়।

কিন্তু এসব পণ্যের মান ভালো নয়। আলুগুলোর আকার ছোট, এবড়োথেবড়ো, নীলচে। পেঁয়াজের খোসা নেই, একপাশে থেঁতলে গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোল্ডস্টোরেজ থেকে তাদেরকে বেশি দামে আলু কিনতে হচ্ছে। আর দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে দেশি পেঁয়াজও বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে। জরিমানার ভয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করা যাচ্ছে না বলে ব্যবসায়ীরা বেশি পরিমাণে পণ্য আনছেন না। কম দামে নিম্নমানের পণ্য এনে কম দামে বিক্রি করছেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, মালামাল কেনার পর পরিবহন খরচ যোগ করলে সরকার নির্ধারিত দামে আলু-পেঁয়াজ বিক্রি করে লাভ করা সম্ভব না। তাই তারা বিভিন্ন গ্রাম বা মফস্বলের মোকাম থেকে কম দামে নিম্নমানের আলু-পেঁয়াজ কিনে আনছেন।

কারওয়ান বাজারের মাতৃভান্ডার স্টোরের স্বত্বাধিকারী সজীব শেখ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মুন্সিগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আলু এবং ফরিদপুর ও পাবনা থেকে পেঁয়াজ কিনে আনছে ব্যবসায়ীরা। কোল্ডস্টোরেজ থেকে আনছে না। কারণ দাম বেশি।'

'গ্রামের মোকাম থেকে কম দামে একটু খারাপ মানের আলু-পেঁয়াজ কিনে আনলে আমরা কিছুটা কম দামে এগুলো বিক্রি করতে পারছি', বলেন তিনি।

ভালো আলু-পেঁয়াজ পাওয়া গেলেও দাম বেশি বলে জানান তিনি।

এই বাজারের এক আলু ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগে যেসব আলু এনেছিলাম, সেগুলোই বিক্রি করছি। গত দুয়েকদিন অনেক ব্যবসায়ী জরিমানার ভয়ে বেশি দামে আলু আনছে না। আপাতত তারা বিক্রিও বন্ধ রেখেছে।'

ডিম আকারে ছোট

কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, ডিম সাধারণত তিন আকারের হয়। ছোট, মাঝারি ও বড়। আগে তারা বড় ডিম আনতেন। কিন্তু এখন আনছেন ছোট ডিম।

কারণ জানতে চাইলে ডিম ব্যবসায়ী আবুল কালাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরকার ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে পিসপ্রতি ১২ টাকা। আমরা পাইকারিতে ছোট ডিম কিনি ১১ টাকায়, মাঝারি সাড়ে ১১ টাকায় ও বড় ডিম ১২ টাকায়। এর সঙ্গে পরিবহন খরচ যোগ হয়। আবার আনার সময় কিছু ডিম ভেঙেও যায়। সবমিলিয়ে বড় আকারের ডিম নির্ধারিত দামে বিক্রি সম্ভব না। তাই আমরা ১১ টাকায় ছোট ডিম কিনে এসে সাড়ে ১২টাকায় পিস বিক্রি করছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

7h ago