প্রতি ৩ পোশাক শ্রমিকের ২ জন বাল্যবিয়ের শিকার, ৬৫ শতাংশ ১৮ বছরের আগেই অন্তঃসত্ত্বা

পোশাক শিল্পে কর্মরত নারী শ্রমিকদের প্রতি তিনজনের মধ্যে দুইজনের ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই বিয়ে হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশ নারী অপ্রাপ্ত বয়সে প্রথম গর্ভধারণ করেছেন।
আজ সোমবার রাজধানীর মহাখালীতে আইসিডিডিআরবি মিলনায়তনে আয়োজিত সেমিনারে এই গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হয়।
পোশাক শিল্পে কর্মরত নারী শ্রমিকদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার নিয়ে প্রথম কোহর্ট গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, প্রতি তিনজনের প্রায় একজন নারীশ্রমিক জীবনে অন্তত একবার অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের শিকার হয়েছেন এবং প্রতি চারজনের একজন গর্ভপাত বা মেনস্ট্রুয়াল রেগুলেশনের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার সহায়তায় অ্যাডসার্চ বাই আইসিডিডিআরবি ২৪ মাসব্যাপী এই গবেষণা পরিচালনা করে।
গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত এর আগের দুই বছর রাজধানীর কড়াইল ও মিরপুর বস্তি এবং গাজীপুরের টঙ্গী বস্তিতে আইসিডিডিআরবির আর্বান হেলথ অ্যান্ড ডেমোগ্রাফিক সার্ভেইলেন্সের আওতাধীন এলাকায় এই গবেষণা পরিচালিত হয়েছে।
গবেষণার অংশ হিসেবে তৈরি পোশাক কারখানায় কর্মরত ১৫ থেকে ২৭ বছর বয়সী মোট ৭৭৮ শ্রমিকের ওপর ছয় মাস পর পর জরিপ চালানো হয়।
দীর্ঘ মেয়াদি পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ও লিঙ্গ সমতা সম্পর্কিত জ্ঞান বাড়লেও গবেষণায় দেখা গেছে, গত দুই বছরে নারী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে সব ধরনের সহিংসতা আরও বেড়েছে।
সেমিনারে জানানো হয়, গবেষণার শুরুতে প্রায় ৪৮ শতাংশ নারী শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে মানসিক সহিংসতার শিকার হয়েছিলেন, দুই বছর পর যা বেড়ে ৫৫ শতাংশে দাঁড়ায়।
প্রধান গবেষক ড. রুচিরা তাবাসসুম নভেদ বলেন, 'অর্থনৈতিক দিক থেকে তুলনামূলক এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত নারীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অবস্থা অন্য নারীদের চেয়েও খারাপ। পরিস্থিতি উন্নয়নের নিয়ামকগুলো নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা দরকার। এ জন্য সরকার, উন্নয়ন সংস্থা ও অংশীদারদের সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে।'
মেরী স্টোপসের বাংলাদেশের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও স্বাধীন গবেষক ইয়াসমিন এইচ আহমেদ বলেন, 'নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে নারীরা এখনো দোকানে গিয়ে স্বল্প মেয়াদি জন্ম বিরতিকরণ সামগ্রী কিনতে পারে না। তাই গার্মেন্টগুলোতে কাউন্সেলিংয়ের পাশাপাশি সাধারণ জন্ম বিরতিকরণ সামগ্রীগুলো নিশ্চিত করতে হবে।'
Comments