ধর্মীয় আচার পালনে কেরালার মন্দিরে ‘রোবট হাতি’

‘ইরিঞ্জাদাপ্পিলি রমন’ নামের রোবট হাতির মডেলটির উচ্চতা ১১ ফুট, ওজন ৮০০ কেজি। ছবি: পেটা ইন্ডিয়া

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালার মন্দিরগুলোতে যেকোনো আচার-অনুষ্ঠান পালনের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হাতি। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে সুসজ্জিত এসব হাতিকে প্রায়শই শিকলে বেঁধে রাখা হয়। বন্যপ্রাণীর প্রতি এমন নিষ্ঠুর আচরণের জন্য তীব্র ক্ষোভ জানিয়ে আসছিলেন প্রাণী অধিকারকর্মীরা।

অবশেষে তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়েছে কেরালার একটি মন্দির। এবার থেকে ওই মন্দিরের আচার-অনুষ্ঠান পালনে জীবন্ত হাতির পরিবর্তে ব্যবহৃত হবে একটি প্রমাণ সাইজের 'রোবট হাতি'। 

আজ মঙ্গলবার বিবিসি জানায়, যেকোনো উৎসবে জীবন্ত প্রাণীর ব্যবহার বন্ধে অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে এই 'রোবট হাতি' স্থাপন করেছে ত্রিশুর জেলার ইরিঞ্জাদাপ্পিলি শ্রী কৃষ্ণ মন্দির কর্তৃপক্ষ।

পিপল ফর এথিক্যাল ট্রিটমেন্ট অব অ্যানিম্যালস (পেটা) ইন্ডিয়া এবং অভিনেত্রী পার্বতী থিরুভোথু মন্দিরকে এই রোবট হাতিটি উপহারস্বরূপ দিয়েছেন।

এর ফলে এখন থেকে মন্দিরে 'নিষ্ঠুরতা-মুক্ত পদ্ধতিতে' যেকোনো আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা যাবে বলে ধারণা তাদের।

বর্তমানে ভারতে প্রায় ২ হাজার ৫০০ বুনো হাতি বন্দী অবস্থায় আছে। এর প্রায় ৫ ভাগের একভাগই রয়েছে কেরালায়।

বছরের পর বছর ধরে এসব বন্দী হাতির স্বাস্থ্য, পরিচর্যা ও চিকিৎসা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছিলেন প্রাণী অধিকারকর্মীরা। প্রাণী অধিকার সংক্রান্ত গবেষণা কেন্দ্র গত সপ্তাহে কেরালার মুখ্যমন্ত্রীকে স্তন্যপায়ী প্রাণীর বর্ধিত মৃত্যুহার সম্পর্কে চিঠি লিখে জানিয়েছে যে, কেরালায় ২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৩৮টি বন্দী হাতি মারা গেছে।

সোমবার এক বিবৃতিতে পেটা জানায়, উৎসবের সময় অতি উচ্চ শব্দে হাতিগুলোকে বশীভূত করা এক ধরনের 'নিষ্ঠুর' চর্চা। এই অমানবিক চর্চা বন্ধে প্রতিটি মন্দিরের উচিৎ যান্ত্রিক হাতি ব্যবহারের দিকে মনোনিবেশ করা।

পেটা আরও জানায়, প্রাণীদের সম্মানজনক ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও শক্তিশালী ও প্রভাবশালী উদ্যোগ নেওয়ার এখনই উপযুক্ত সময়।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, 'ইরিঞ্জাদাপ্পিলি রমন' নামের রোবট হাতির মডেলটির উচ্চতা ১১ ফুট, ওজন ৮০০ কেজি এবং এটি একটি লোহার ফ্রেম দিয়ে তৈরি। লোহার ফ্রেমের ওপর রাবারের আবরণ দিয়ে ঢাকা। 

পেটার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হাতির মডেলটিতে মোট ৫টি শক্তিশালী বৈদ্যুতিক মোটর রয়েছে। জীবিত হাতির মতোই এটি মাথা, চোখ এবং কান নাড়াতে পারে। এ ছাড়াও, এই হাতিতে একসঙ্গে চড়তে পারবেন ৪ জন।

ইরিঞ্জাদাপ্পিলি শ্রী কৃষ্ণ মন্দিরের পুরোহিত রাজকুমার নাম্বুথিরি জানান, তারা এই যান্ত্রিক হাতিটি পেয়ে খুশি।

তিনি বলেন, 'আমাদের দেখাদেখি অন্য মন্দির কর্তৃপক্ষও তাদের আচার-অনুষ্ঠান পালনের জন্য এ ধরনের রোবট হাতি প্রতিস্থাপনের বিষয়ে চিন্তা করবে বলে প্রত্যাশা করি।'

Comments

The Daily Star  | English

Tug-of-war over water lily continues

The Election Commission and National Citizen Party remain locked in a heated debate over the party’s choice of electoral symbol, the water lily -- a dispute that began in June.

3h ago