সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে দিল্লির মন্তব্য প্রত্যাখ্যান ঢাকার

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (এমইএ) মুখপাত্রের সাম্প্রতিক মন্তব্য দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে ঢাকা।

আজ রোববার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ও পাবলিক ডিপ্লোমেসি উইংয়ের মহাপরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম বলেন, 'বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে এমন যেকোনো বিভ্রান্তিকর, অতিরঞ্জিত বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বর্ণনা সরকার স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করে।'

তিনি আরও বলেন, 'ভারতীয় মুখপাত্রের মন্তব্য বাস্তবতার প্রতিফলন নয়।'

দুঃখপ্রকাশ করে তিনি বলেন, বিচ্ছিন্ন কিছু অপরাধমূলক ঘটনাকে পদ্ধতিগতভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিপীড়ন হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা লক্ষ করা যাচ্ছে এবং এগুলোকে ব্যবহার করে ভারতের বিভিন্ন অংশে বাংলাদেশবিরোধী মনোভাব উসকে দেওয়া হচ্ছে।

আলম বলেন, 'কিছু মহলে আমরা বাছাইকৃত ও অন্যায্য পক্ষপাত লক্ষ্য করছি—যেখানে বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলোকে বাড়িয়ে দেখানো, বিকৃতভাবে উপস্থাপন ও প্রচার করে সাধারণ ভারতীয় জনগণকে বাংলাদেশ, ভারতের বাংলাদেশি কূটনৈতিক মিশন ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উসকানি দেওয়া হচ্ছে।'

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র যে ব্যক্তির উদাহরণ দিয়েছেন, তিনি তালিকাভুক্ত একজন অপরাধী ছিলেন—এ কথা উল্লেখ করে আলম বলেন, ওই ব্যক্তি তার এক মুসলিম সহযোগীর সঙ্গে চাঁদাবাজির সময় নিহত হন; পরে ওই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

তিনি বলেন, 'এ ধরনের অপরাধকে সংখ্যালঘু নির্যাতনের দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করা বাস্তবসম্মত নয়, বরং বিভ্রান্তিকর।' 

বাংলাদেশের মুখপাত্র ভারতের বিভিন্ন মহলকে সুসম্পর্ক ও পারস্পরিক আস্থার চেতনাকে ক্ষুণ্ন করে এমন বিভ্রান্তিকর বর্ণনা ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।

এক প্রশ্নের জবাবে আলম বলেন, ভারতে মুসলিম, খ্রিষ্টানসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নৃশংস হত্যাকাণ্ড, গণপিটুনি, নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করা এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বিঘ্ন সৃষ্টির ঘটনায় ঢাকা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

তিনি জানান, চলতি মাসে উড়িষ্যায় চুরির অভিযোগে জুয়েল রানা নামে এক মুসলিম যুবকের নৃশংস হত্যাকাণ্ড, বিহারে মোহাম্মদ আতাউর হোসেনের হত্যাকাণ্ড, কেরালায় বাংলাদেশি সন্দেহে এক নিরীহ ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনা এবং বিভিন্ন স্থানে মুসলিম ও খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধে একাধিক গণহিংসা ও হামলার ঘটনা ঘটেছে।

গত সপ্তাহে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উদযাপনের সময়ও ভারতের বিভিন্ন স্থানে খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধে সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

আলম বলেন, 'এসব ঘটনাকে ঘৃণাজনিত অপরাধ ও লক্ষ্যভিত্তিক সহিংসতা হিসেবে দেখা হচ্ছে। আমরা আশা করি, ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনবে।'

তিনি আরও বলেন, প্রতিটি দেশেরই দায়িত্ব তার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করা এবং কোনো ধরনের বৈষম্য ছাড়াই সে দায়িত্ব পালন করা।

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda Zia’s body taken to Parliament Complex ahead of janaza

Janaza will be held at Manik Mia Avenue at 2pm

3h ago