উদ্বেগের কিছু নেই, ইরানের রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে কোনো বিঘ্ন হবে না: খামেনি

প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিদ্ধস্তের ঘটনায় ইরানের রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে কোনো বিঘ্ন হবে না বলে জানিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি।

আজ রোববার রাতে তেহরানে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেছেন, তাসনিম নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে। 

প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বহনকারী একটি হেলিকপ্টার দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বিধ্বস্ত হয়। 

এ ঘটনার পর এখন পর্যন্ত হেলিকপ্টারে থাকা প্রেসিডেন্ট রাইসি, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবদুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমাতির সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে হেলিকপ্টারটিকে জরুরি অবতরণ করতে হয়। 

দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ এজেন্সি আইআরএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির সঠিক অবস্থান এখনো অজানা। অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে পড়েছে এবং ঘটনাস্থল শনাক্ত করা চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে।

তেহরানে এক সমাবেশে আয়াতুল্লাহ খামেনি দেশবাসীকে প্রার্থনা করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, 'আমরা আশা করি সর্বশক্তিমান প্রেসিডেন্ট ও তার সঙ্গীদের ফিরিয়ে দেবেন।'

তিনি আরও বলেন, 'সবার উচিত তাদের সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করা। ইরানিদের এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত নয়, কারণ দেশের কার্যক্রমে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না।'

ইব্রাহিম রাইসিকে খামেনির উত্তরসূরি হিসেবে অভিহিত করেছেন কাতার ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মাহজুব জুইরি। তার মতে, রক্ষণশীল রাজনীতিবিদ রাইসি ইরানের রাজনীতিতে একজন 'হেভিওয়েট' নেতা।

প্রেসিডেন্ট রাইসি আজ আজারবাইজান-ইরান সীমান্তে একটি বাঁধ উদ্বোধন করেন। ফেরার পথে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ভারজাকান অঞ্চলে তাকে বহনকারী হেলিকপ্টার জরুরি অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়।

এ অবস্থায় ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যু হলে প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে পারেন বলে আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।

ইরানের সংবিধান অনুযায়ী, ইরানের রাষ্ট্রীয় পদক্রম অনুসারে, রাষ্ট্রের প্রধান সুপ্রিম লিডার আলি খামেনি এবং প্রেসিডেন্ট সরকার প্রধান হিসেবে রাষ্ট্রের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড।

সেকেন্ড-ইন-কমান্ড মারা গেলে প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট তাৎক্ষণিক দায়িত্ব গ্রহণ করবেন এবং ৫০ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দেবেন।

আইআরআইবি নিউজের বরাতে আইআরএনএর প্রতিবেদনে জানানো হয়, দুর্ঘটনাস্থল এলাকার আবহাওয়া খুবই কুয়াশাচ্ছন্ন। এ কারণে উদ্ধার অভিযান কঠিন হয়ে পড়েছে। নতুন উদ্ধারকারী দল এবং কিছু পর্বতারোহী অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, খারাপ আবহাওয়ার কারণে হেলিকপ্টার চালানো সম্ভব নয় এবং স্থলপথে উদ্ধারাভিযান চলছে।

ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রধান হামিদ মনজেম আল-জাজিরাকে জানিয়েছেন, উদ্ধারকারী দল শিগগির ঘটানাস্থলে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, 'সশস্ত্র বাহিনীও উদ্ধারকাজে যোগ দেবে এবং ওই এলাকায় তিনটি ড্রোন ইউনিট আছে। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে তারা কাজ করতে পারছে না।'

 

Comments