তালেবান সন্দেহে নির্বিচারে আফগান হত্যার অনুমতি ছিল: সাবেক ব্রিটিশ কর্মকর্তা

আফগানিস্তানে ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর অভিযান। এএফপি ফাইল ফটো

আফগানিস্তানে দায়িত্ব পালনের সময় তালেবান সন্দেহে শিশুসহ যে কাউকে হত্যার অনুমতি ছিল বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ স্পেশাল ফোর্সের সাবেক কর্মকর্তারা।

আফগানিস্তানে যুক্তরাজ্যের সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের তদন্তে এ তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

আজ বুধবার আফগানিস্তান-সংক্রান্ত তদন্ত কমিটি স্পেশাল ফোর্স কর্মকর্তাদের সাতটি গোপন শুনানির বিবরণ প্রকাশ করেছে।

ব্রিটিশ স্পেশাল ফোর্সেস, বিশেষ করে এর দুই শাখা—স্পেশাল এয়ার সার্ভিস (এসএএস) ও স্পেশাল বোট সার্ভিস (এসবিএস) আফগানিস্তানে তালেবান-বিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছে। ২০১০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত চলা অভিযান নিয়েই মূলত তদন্ত চলছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে এসবিএস কর্মকর্তারা এসএএসের বিরুদ্ধে অসংখ্য যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছেন। ২০০৯ সালে আফগানিস্তানে এসএএসের আগমন এবং তালেবান সন্দেহে তাদের বেপরোয়া হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।

এসএএস কর্মকর্তারা একটি অভিযানে কতজনকে হত্যা করেছেন, সেটি নিয়ে প্রতিযোগিতা করতেন বলেও অভিযোগ করেছেন এক কর্মকর্তা।

এসব বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে ২০১১ সালে উদ্বেগ প্রকাশ করা একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এই তদন্তে সাক্ষ্য দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেন, 'আমি তখন বিশ্বাস করতাম এবং এখনো করি, অন্তত কিছু অভিযানে (বিচারবহির্ভূত) হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে এসএএস।'

গোপন শুনানিতে এক এসএএস সদস্যের সঙ্গে কথোপকথনের বর্ণনা দেন আরেক এসবিএস কর্মকর্তা। সেখানে বালিশ দিয়ে মুখ ঢেকে এক আফগানকে হত্যার বর্ণনা দেন সেই এসএএস সদস্য।

'হত্যাকাণ্ডের পদ্ধতি এবং শিশুদের হত্যা করার বর্ণনা আমাকে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা দিয়েছিল,' বলেন এসবিএস কর্মকর্তা।

আফগানিস্তান অভিযানে ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদেরও হত্যা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন এই কর্মকর্তা।

স্পেশাল ফোর্সের কর্মকর্তাদের ইমেইলেও আফগানিস্তানে সংগঠিত যুদ্ধাপরাধ এবং এগুলো ধামাচাপা দেওয়ার বর্ণনা উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে জানা যায়, এসএএসের কর্মকাণ্ডে বিরক্ত ছিল যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত আফগান বাহিনীও। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক বৈঠকে এসএএস থেকে নিজেদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয় আফগান বাহিনী। এসএএসের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে ক্ষুব্ধ এক আফগান কর্মকর্তা বৈঠকের মাঝেই পিস্তল নিয়ে তেড়ে আসার চেষ্টা করেন।

বুধবার প্রকাশিত এক ইমেইলে এই বৈঠকের বর্ণনা দিয়ে এক কর্মকর্তা লিখেন, 'এমন প্রতিকূল বৈঠকে আমি কখনো অংশ নিইনি। এত চিৎকার-চেঁচামেচি, হাত তুলে হুমকি দেওয়া, এক পর্যায়ে তো আমাকে ৯মিমি পিস্তলের দিকে তাকিয়ে থাকতে হলো। খুবই অস্বস্তিকর।'

শেষ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের স্পেশাল ফোর্সের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে আফগান ইউনিটগুলো এসএএসের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে রাজি হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

2h ago