যুদ্ধ বন্ধ না করলে পুতিন, বন্ধুদের ওপর ‘শুল্ক অস্ত্র’ প্রয়োগের হুমকি

ভ্লাদিমির পুতিন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। কোলাজ ছবি: এএফপি
ভ্লাদিমির পুতিন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। কোলাজ ছবি: এএফপি

দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করার উদ্যোগ নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু সম্প্রতি দুইজনের সম্পর্কে তিক্ততা দেখা দিয়েছে।

আগামী ৫০ দিনের মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ না হলে পুতিন ও তার বন্ধুদের ওপর 'শুল্ক অস্ত্র' প্রয়োগের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন নেতা।

আজ মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর থেকে পশ্চিমা বিশ্বে মোটামুটি ব্রাত্য হয়ে পড়েন রুশ নেতা ভ্লাদিমির পুতিন। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ বিষয়ে ব্যতিক্রমী মনোভাব দেখান ট্রাম্প।

চলমান যুদ্ধের জন্য পুতিন নয়, বরং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে দায় দেন ট্রাম্প।

গত ফেব্রুয়ারিতে জেলেনস্কি ওভাল অফিসে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে গেলে ট্রাম্প তাকে তিরস্কার করেন।

সুর পাল্টাবেন ট্রাম্প?

তবে অবশেষে ইউক্রেন প্রসঙ্গে সুর পাল্টানোর আভাস দিয়েছেন ট্রাম্প।

সাম্প্রতিক সময়ে পুতিন যুদ্ধ থামানোর উদ্যোগ না নিয়ে ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার মাত্রা বাড়িয়েছেন, যা ভালো চোখে দেখেননি ট্রাম্প। ট্রাম্পের নির্বাচনী অঙ্গীকারের অন্যতম বিষয় ছিল শিগগির এই যুদ্ধ বন্ধ করা।

ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী প্যাট্রিয়ট ব্যাটারি। ফাইল ছবি: ন্যাটো
ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী প্যাট্রিয়ট ব্যাটারি। ছবি: ন্যাটো

হতাশা প্রকাশ করে ট্রাম্প বলেন, 'পুতিনের উপর আমি অত্যন্ত নাখোশ। তিনি এই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে অস্বীকার করছেন এবং এতে আমার ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙেছে।'

গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুত্তের সঙ্গে বৈঠকের সময় ট্রাম্প এসব কথা বলেন। 

যুদ্ধ বন্ধ না করলে শতভাগ শুল্ক

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ৫০ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন ট্রাম্প। যুদ্ধ বন্ধ না করলে রাশিয়ার ওপর শতভাগ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুশিয়ারি দেন তিনি।

ট্রাম্প বলেন, '৫০ দিনের মধ্যে যদি রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে কোনও চুক্তি না হয়, তাহলে আমরা রাশিয়ার ওপর কঠোর শুল্ক আরোপ করব, যা প্রায় ১০০ শতাংশ'।

ট্রাম্প আরও বলেন, 'রাশিয়ার বাণিজ্যিক অংশীদারদের ওপরও বাড়তি শুল্ক আরোপ করা হবে। এতে পশ্চিমা দেশগুলোর আরোপ করা অর্থনৈতিক বিধিনিষেধ এড়িয়ে টিকে কাজটি রাশিয়ার জন্য অনেক কঠিন হয়ে পড়বে।'

রাশিয়ার কেন্দ্রীয় শুল্ক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর রাশিয়ার শীর্ষ বাণিজ্যিক অংশীদার ছিল চীন। পরের অবস্থানে আছে ভারত, তুরস্ক ও বেলারুশ।

ন্যাটোর উদ্যোগ

হোয়াইট হাউসে বৈঠক করছেন ন্যাটো মহাসচিব রুত্তে ও ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
হোয়াইট হাউসে বৈঠক করছেন ন্যাটো মহাসচিব রুত্তে ও ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

আনুষ্ঠানিকভাবে জোটের সদস্য রাষ্ট্র না হলেও ইউক্রেনকে রুশ আকাশ হামলার বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে অস্ত্র কিনে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে ন্যাটো সামরিক জোট।

বিলিয়ন ডলারের এসব অস্ত্র কেনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা করেন ট্রাম্প ও মার্ক রুত্তে। এসব অস্ত্রের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী প্যাট্রিয়ট মিসাইলও অন্তর্ভুক্ত আছে।

ন্যাটো প্রধান উল্লেখ করেন, এই উদ্যোগের অর্থায়নে আছে জার্মানি, কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সুইডেন ও ব্রিটেন। 

রুত্তে বলেন, 'আমি যদি ভ্লাদিমির পুতিনের জায়গায় থাকতাম এবং আপনার (ট্রাম্পের) কথা শুনতে পেতাম…তাহলে আমি ইউক্রেনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দরকষাকষিতে আরও মনোযোগ দিতাম।'

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং নতুন এই অস্ত্র চুক্তির জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English

15 army officers in custody taken to tribunal amid tight security

The International Crimes Tribunal-1 is set to review the progress of two cases of enforced disappearance

41m ago