ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির ঘোষণার পর কানাডার পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ করলেন ট্রাম্প

হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে কার্নি। ফাইল ছবি: মার্ক কার্নির কার্যালয়
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে কার্নি। ফাইল ছবি: মার্ক কার্নির কার্যালয়

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কানাডা। এই ঘোষণার পর অটোয়ার সঙ্গে শুল্ক-যুদ্ধকে নজিরবিহীন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

গতকাল বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স ও এএফপি। 

কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেন। এই উদ্যোগে বিস্ময় প্রকাশ করেন ট্রাম্প।

সামাজিক মাধ্যমে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এই উদ্যোগের পর কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে যাওয়া 'খুবই কঠিন' হবে।

'ওয়াও! এইমাত্র কানাডা ঘোষণা দিয়েছে, তারা ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন প্রক্রিয়াকে সমর্থন জানাবে। যার ফলে তাদের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তিতে যাওয়া আমাদের জন্য খুব কঠিন হয়ে পড়েছে', বলেন ট্রাম্প। 

পরবর্তীতে ট্রাম্প বলেন, কানাডার সুনির্দিষ্ট কিছু পণ্যে শুল্কের হার ২৫ থেকে বেড়ে ৩৫ শতাংশ করা হচ্ছে।

এর আগে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার 'বাণিজ্যিক পরিণামের' বিষয়ে কার্নিকে হুশিয়ারি দিয়েছিলেন ট্রাম্প।

অন্যান্য কয়েকটি দেশে নতুন শুল্কের হার আরও এক সপ্তাহ পর প্রযোজ্য হলেও, কানাডার ক্ষেত্রে এটি আজ থেকেই চালু হচ্ছে। হোয়াইট হাউসের ফ্যাক্ট শিটে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডার মধ্যে সাক্ষরিত চুক্তির আওতায় থাকা পণ্যগুলোর ওপর নতুন শুল্ক প্রযোজ্য হবে না। 

এর আগে ওয়াশিংটনের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে দরকষাকষিকে 'গঠনমূলক' বলে আখ্যা দেন কার্নি। তবে এটাও জানান, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে আলোচনা শেষ নাও হতে পারে। 

মেক্সিকোর পর কানাডাই যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার। মার্কিন পণ্যের সবচেয়ে বড় ক্রেতাও কানাডা।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩৪৯ দশমিক চার বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে কানাডা। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে ৪১২ দশমিক সাত বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রের জরিপ ব্যুরো এই তথ্য জানিয়েছে।

পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের যোগানদাতাও কানাডা। ওই দুই ধাতু এবং গাড়ি রপ্তানিতেও শুল্ক আরোপ করেছে ওয়াশিংটন।

গত মাসে কার্নি সরকার মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল সেবার ওপর কর আরোপের উদ্যোগ নেয়। এতে ক্ষিপ্ত হন ট্রাম্প। তিনি একে 'নগ্ন হামলা' বলে আখ্যা দেন এবং হঠাত করেই কানাডার সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য আলোচনা বন্ধ করে দেন। পরবর্তীতে কানাডা ওই উদ্যোগ বাতিল করে।

জি৭ সম্মেলনে ট্রাম্প ও কার্নি। ফাইল ছবি: রয়টার্স
জি৭ সম্মেলনে ট্রাম্প ও কার্নি। ফাইল ছবি: রয়টার্স

ফ্রান্স-ব্রিটেনের দেখিয়ে দেওয়া পথে বুধবার ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেন কার্নি। তিনি জানান, সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের পরবর্তী অধিবেশনে তার দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে।

ঘোষণাটি দেওয়ার সময় কার্নি গাজার বাস্তব পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে বলেন, সেখানে মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছে। তিনি বলেন, 'ইসরায়েলি সরকার গাজায় বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। কানাডা এ বিষয়টির প্রতি নিন্দা জানাচ্ছে।'

কার্নির ওই মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল উভয়ই নাকচ করেছে।

ট্রাম্পের পোস্টের পর কার্নির কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। 

 

Comments