নেপালে ফেসবুকসহ সামাজিকমাধ্যম নিষিদ্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ, সংঘর্ষে নিহত অন্তত ১৯

কাঠমান্ডুতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স

ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউবসহ বেশ কিছু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত ও সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে অন্তত ১৯ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, কাঠমান্ডুর বিভিন্ন হাসপাতালে কমপক্ষে ১৭ জন মারা গেছেন, জাতীয় ট্রমা সেন্টারে ৮ জন, এভারেস্ট হাসপাতালে ৩ জন, সিভিল হাসপাতালে ৩ জন, কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজে ২ জন ও ত্রিভুবন টিচিং হাসপাতালে ১ জন মারা গেছেন।

সুনসারি ও ইটাহারিতে বিক্ষোভ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে ২ বিক্ষোভকারী মারা গেছেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

কাঠমান্ডু পুলিশের মুখপাত্র শেখর খানাল বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, পুলিশ ও বিক্ষোভকারী প্রায় ১০০ জন আহতাবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন।

আজ সোমবার সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরুর পর বানেশ্বরের সিভিল হাসপাতালে এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয় বলে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়।

কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর নিউ বানেশ্বরে প্রথমে বিক্ষোভ শুরু হয়। কাঠমান্ডু ছাড়াও পোখারা, বুটওয়াল, ভৈরহাওয়া, ভরতপুর, ইটাহারি, দামাকসহ বিভিন্ন শহরে তরুণ-তরুণীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে।

সরকার বিকেল সাড়ে ৩টায় কারফিউ জারি করার পর বিক্ষোভ তীব্র আকার ধারণ করে।

সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে অন্তত ৩৪৭ জন আহত বিক্ষোভকারীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

সিভিল হাসপাতাল ১০০ জন, ট্রমা সেন্টার ৫৯ জন, এভারেস্ট ১০২ জন, কেএমসি ৩৭ জন, বীর হাসপাতাল ছয় জন, পাটন হাসপাতাল চার জন, ত্রিভুবন টিচিং ১৮ জন, নরভিক তিন জন, বিপি কৈরালা ইনস্টিটিউট অফ হেলথ সায়েন্সেস দুই জন, গণ্ডকী মেডিকেল কলেজ একজন, বিরাট মেডিকেল কলেজ চার জন এবং দামক হাসপাতাল সাত জন চিকিৎসাধীণ আছেন।

গত সপ্তাহে নেপাল সরকার ফেসবুকসহ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেয়। সরকারের অভিযোগ ছিল, এসব প্ল্যাটফর্ম ভুয়া পরিচয়ে হিংসাত্মক বক্তব্য, ভুয়া সংবাদ ছড়ানো, প্রতারণা এবং অন্যান্য অপরাধে ব্যবহার হচ্ছে।

আজ সোমবার স্কুল-কলেজের পোশাক পরা তরুণ-তরুণীরা পার্লামেন্ট ভবনের দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আগালে পুলিশ বাধা দেয়। 

এসময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। সেসময় সংঘর্ষে অন্তত একজন নিহত হন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে।

নেপাল পার্লামেন্টের মুখপাত্র একরাম গিরি জানান, বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ পার্লামেন্ট প্রাঙ্গণে প্রবেশ করলেও মূল ভবনে ঢুকতে পারেননি। পুলিশ পরে তাদের বের করে দেয়।

কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসনের মুখপাত্র মুক্তিরাম রিজাল জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় সময় রাত ১০টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। 

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ব্যর্থতার অভিযোগ বহুদিন ধরে উঠছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের মধ্য দিয়ে সরকার জনগণের অসন্তোষ দমন করতে চাইছে।

প্রায় ৩ কোটি মানুষের দেশ নেপালে ৯০ শতাংশ নাগরিক ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Voting in Ducsu election underway

Students started casting their votes at 8:00am across polling centres set up in residential halls amid tight security. The balloting will continue until 4:00pm.

2h ago