ভারতে ‘মগজখেকো’ অ্যামিবার সংক্রমণে ১৯ জনের মৃত্যু, বাড়ছে উদ্বেগ

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালায় বিরল 'মস্তিষ্কখেকো' অ্যামিবার সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।
নেগলেরিয়া ফাওলেরি নামের এই এককোষীর সংক্রমণে এ বছর ১৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতিকে 'গুরুতর জনস্বাস্থ্য সংকট' হিসেবে অভিহিত করে রাজ্যজুড়ে সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।
এই অ্যামিবার সংক্রমণে যে রোগ হয় তার নাম প্রাইমারি 'অ্যামিবিক মেনিনজোএনসেফালাইটিস', যাকে সংক্ষেপে বলা হয় 'প্যাম'। মস্তিষ্ককে আক্রমণ করে তাই জীবাণুটি মস্তিষ্কখেকো হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বুধবার কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানান, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত রাজ্যে প্যাম আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৬৯ জন, যাদের মধ্যে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত মাসেই তিনজনের মৃত্যু হয়, যার মধ্যে তিন মাস বয়সী এক শিশুও রয়েছে।
অ্যামিবিক এনসেফালাইটিস একটি বিরল কিন্তু প্রাণঘাতী স্নায়ুতন্ত্রের রোগ। এটি মূলত পুকুর, হ্রদ বা নদীর মতো স্বাদু পানিতে বাস করা অ্যামিবার মাধ্যমে ছড়ায়। কেরালায় এই সংক্রমণের জন্য দায়ী যে অ্যামিবাটির সন্ধান পাওয়া গেছে তার বৈজ্ঞানিক নাম নেগলেরিয়া ফাওলেরি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এনডিটিভিকে বলেন, গত বছরের সঙ্গে এবার যে পার্থক্য দেখা যাচ্ছে তা হলো, এবার সংক্রমণের জন্য কোনো নির্দিষ্ট জায়গার পানিকে চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। এবারেরগুলো সবই বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এ কারণে গবেষকদের উৎস চিহ্নিত করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।'
গত বছর কেরালায় এই জীবাণুতে ৩৬ জন আক্রান্ত হন এবং তাদের মধ্যে ৯ জন মারা যান।
এই জীবাণুর সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার কূপ, পানির ট্যাংক এবং গোসলের জলাশয়ে ক্লোরিন মেশানোর কাজ শুরু করেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বিশ্বজুড়ে প্যাম রোগে আক্রান্তদের বেঁচে থাকার হার মাত্র ৩ শতাংশের কাছাকাছি। তবে উন্নত পরীক্ষা ও রোগনির্ণয় পদ্ধতির কারণে কেরালা এই হারকে ২৪ শতাংশে উন্নীত করতে পেরেছে।
গত বছর প্রকাশিত সরকারি নথিতে এই সংক্রমণের সম্ভাব্য কারণ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনকে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, 'জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পানির তাপমাত্রা বাড়ছে। একই সঙ্গে গরমের কারণে মানুষ বিনোদনমূলক প্রয়োজনে জলাশয়ে বেশি নামছে। এর ফলে এই জীবাণুর সংস্পর্শে আসার ঝুঁকিও বাড়ছে।'
Comments