ইন্দোনেশিয়ার স্কুল ভবন ধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৫

ইন্দোনেশিয়ার একটি মাদ্রাসা ভবন ধসে পড়লে ৪৫ জনের প্রাণহানি হয়। ছবি: এএফপি
ইন্দোনেশিয়ার একটি মাদ্রাসা ভবন ধসে পড়লে ৪৫ জনের প্রাণহানি হয়। ছবি: এএফপি

ইন্দোনেশিয়ার একটি ধর্মীয় শিক্ষালয়ের ভবন হঠাৎ ধসে পড়লে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান অসংখ্য শিক্ষার্থী। সে সময় তারা আসরের নামাজের জন্য জমায়েত হচ্ছিলেন।

সেদিন থেকেই ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে দিন-রাত উদ্ধার কার্যক্রম চললেও প্রায় এক সপ্তাহ পর আর কাউকে জীবিত উদ্ধারের আশা নেই বললেই চলে।

আজ রোববার এএফপির প্রতিবেদনে জানা গেছে, এই  মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৫ হয়েছে। 

কর্মকর্তারা জানান, আজও দিনভর ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে শিক্ষার্থীদের মরদেহ টেনে বের করেছেন তারা।

ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপের বহুতল বিশিষ্ট স্কুল ভবনটি গত সোমবার হঠাৎ করেই ধসে পড়ে।

আজ রোববার উদ্ধারকারীরা ১৯ জনের মরদেহ ভেঙে পড়া পাথরের কাঠামোর নিচ থেকে বের করে এনেছেন।

জাতীয় খোঁজ ও উদ্ধার সংস্থার (বাসারনাস) অপারেশানস ডিরেক্টর যুধি ব্রামান্ত্য এ কথা জানান।

আজ সংবাদমাধ্যমকে যুধি জানান, 'আমাদের হিসাব মতে, এই দুর্ঘটনায় জীবিত উদ্ধার পেয়েছেন ১০৪ জন ও মারা গেছেন ৪৫ জন।'

গতকাল পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩৭ ছিল। অনেকের মরদেহ না পাওয়া গেলেও ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন অঙ্গ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় উদ্ধার সংস্থার প্রধান নানাং সিজিত এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

উদ্ধারকারীরা এখনো ইসলামিক বোর্ডিং স্কুলটির ধ্বংসস্তূপে দিন-রাত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। যুধি বলেন, 'আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাব।'

'জীবিত বা মৃত—সবাইকে উদ্ধার না করা পর্যন্ত আমাদের অভিযান চলবে', যোগ করেন তিনি।

যুধি পূর্বাভাষ দেন, মঙ্গলবার নাগাদ কর্তৃপক্ষ জায়গাটি খালি করে ফেলতে পারবে।

ইন্দোনেশিয়ার মাদ্রাসা বোর্ডিং স্কুলে দুর্ঘটনায় মৃত এক শিক্ষার্থীর মরদেহ বের করে আনা হচ্ছে। ছবি: এএফপি
ইন্দোনেশিয়ার মাদ্রাসা বোর্ডিং স্কুলে দুর্ঘটনায় মৃত এক শিক্ষার্থীর মরদেহ বের করে আনা হচ্ছে। ছবি: এএফপি

জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার কর্মকর্তা বুদি ইরাওয়ান আজ রোববার গণমাধ্যমকে বলেন, 'উদ্ধার কার্যক্রমের ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে।'

তদন্তকারীরা ভবন ধসে পড়ার কারণ অনুসন্ধান করছেন। প্রাথমিকভাবে তারা ধারণা করছেন, ভবন নির্মাণে অনিয়মের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।

কর্মকর্তারা জানান, উদ্ধার কার্যক্রম বেশ জটিল হয়ে পড়ে। কারণ এক অংশে কম্পন দেখা দিলে অন্যান্য জায়গা প্রভাবিত হওয়ার ঝুঁকি ছিল।

এ ধরনের দুর্ঘটনার পর প্রথম ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মানুষকে জীবিত উদ্ধারের 'উজ্জ্বল সম্ভাবনা' থাকে। এ সময় ভারী যন্ত্রের বদলে অন্যান্য উপায়ে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালিত হয়, যাতে কোনো জীবিত মানুষ যন্ত্রের আঘাতে আহত না হন।

এই সময়সীমা পার হওয়ার পর বৃহস্পতিবার নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যরা ভারী যন্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেন। 

সাম্প্রতিক সময়ে ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও মানদণ্ড মেনে না চলার ঘটনা নিয়ে ইন্দোনেশিয়ায় বড় আকারে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।

 

Comments