মিয়ানমারে ইন্টারনেট প্রতারণা কেন্দ্রে অভিযান, স্টারলিংকের রিসিভার জব্দ

মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলে মিয়াওয়াদ্দি শহরে কেকে পার্ক কমপ্লেক্স। এখানে বেশিরভাগ স্ক্যাম সেন্টারের অবস্থান। ছবি: এএফপি
মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলে মিয়াওয়াদ্দি শহরে কেকে পার্ক কমপ্লেক্স। এখানে বেশিরভাগ স্ক্যাম সেন্টারের অবস্থান। ছবি: এএফপি

মিয়ানমারের সামরিক সরকার দেশটির অন্যতম কুখ্যাত ইন্টারনেট প্রতারণা কেন্দ্র কেকে পার্কে অভিযান চালিয়ে স্টারলিংকের ইন্টারনেট ডিভাইস জব্দ করেছে।

আজ সোমবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে এএফপি এই তথ্য জানিয়েছে।

এএফপির এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিলিয়ন ডলারের কালোবাজারে স্টারলিংক ব্যবহারের প্রবণতা হঠাৎ বেড়ে গেছে। এরপরই এই অভিযান চালানো হয়।

করোনা মহামারির পর থেকে মিয়ানমার-থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী অরাজক অঞ্চলে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ইন্টারনেট প্রতারণা কেন্দ্র (স্ক্যাম সেন্টার)।

এসব সেন্টারের কর্মীরা মূলত ব্যবসার নামে বা প্রেমের ফাঁদ পেতে বিদেশীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়।

চীন, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারের যৌথ অভিযানে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রায় ৭ হাজার কর্মীকে মুক্ত করা হয়। মুক্তি পাওয়া কর্মীদের অনেকেই জানায়, তাদেরকে পাচার করে এনে সুরক্ষিত এই কেন্দ্রগুলোতে কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছিল।

তবে এ মাসে এএফপি অনুসন্ধানে দেখেছে, পুরনো স্ক্যাম সেন্টারগুলোর স্থানে নতুন ভবন নির্মাণ চলছে। ছাদে বসানো হচ্ছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট ডিভাইস।

রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম 'দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার' জানায়, কেকে পার্কে অভিযান চালিয়ে সেনাবাহিনী ৩০টি স্টারলিংক রিসিভার ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশ জব্দ করেছে।

প্রায় ২০০টি ভবনে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে ২ হাজার ২০০ কর্মীকে পাওয়া গেছে বলে জানায় পত্রিকাটি।

জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ বিষয়ক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্ক্যাম চক্রগুলো ৩৭ বিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নিয়েছে।

মিয়ানমারে স্টারলিংকের লাইসেন্স নেই। ফেব্রুয়ারির অভিযানের আগে দেশটির ইন্টারনেট সরবরাহকারীদের তালিকায় এর নামই ছিল না।

কিন্তু এশিয়ান ইন্টারনেট রেজিস্ট্রি 'এপনিক' জানায়, জুলাই ৩ থেকে অক্টোবর ১ পর্যন্ত প্রতিদিনই স্টারলিংক ব্যবহার সূচকে শীর্ষে ছিল মিয়ানমার।

এএফপির অনুসন্ধানের পর স্টারলিংক কোনো মন্তব্য করেনি।

স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, থাইল্যান্ড-মিয়ানমার সীমান্তের মোই নদীর পাশে গড়ে ওঠা প্রায় ২৭টি স্ক্যাম সেন্টারগুলোতে নির্মিত হচ্ছে নতুন অফিস ও আবাসিক ভবন।

২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকে গৃহযুদ্ধে জর্জরিত মিয়ানমার এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্ক্যাম চক্রের কেন্দ্রস্থল। তবে অঞ্চলজুড়েই এসব প্রতারণা কেন্দ্র ছড়িয়ে পড়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Farewell

Nation grieves as Khaleda Zia departs, leaving a legacy of unbreakable spirit

8h ago