সৈয়দ শামসুল হকের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

জাগো বাহে কোনঠে সবায়, হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস ও চাঁদের সাথে আমি দেবো না-- এমন অমর কথার স্রষ্টা আজ সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের মৃত্যুবার্ষিকী | ২০১৬ সালের আজকের দিনে ৮২ বছর বয়সে মারা যান তিনি।

সৈয়দ শামসুল হকের জন্ম ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্ব কুড়িগ্রামে। প্রথমে পিতার ইচ্ছায় বিজ্ঞান নিয়ে লেখাপড়া করলেও পরবর্তীতে তিনি জগন্নাথ কলেজে মানবিক শাখায় ভর্তি হন এবং লজিকে লেটারসহ আইএ পাস করেন। অতঃপর তিনি ইংরেজিতে অনার্স নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে তৃতীয় বর্ষ পর্যন্ত লেখাপড়া করে আর পরীক্ষা দেননি।

আট ভাই-বোনের মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিলেন সৈয়দ হক। দীর্ঘ সাহিত্যজীবনে তিনি তার মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং নাটকসহ শিল্প-সাহিত্যের নানা অঙ্গনে। বাঙালি মধ্যবিত্ত সমাজের আবেগ-অনুভূতি খুব সহজ কথা ও ছন্দে উঠে এসেছে তার লেখনীতে।

১৯৫১ সালে 'অগত্যা' নামে একটি ম্যাগাজিনে তার প্রথম প্রকাশিত লেখাটি ছিলো একটি গল্প। এরপর তার প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন সাহিত্যের নানা ক্ষেত্রে। ১৯৬৬ সালে পান বাংলা একাডেমি পুরস্কার। 'সৈয়দ শামসুল হকের রচনায় সমসাময়িক বাংলাদেশকে তুলে ধরা হয়েছে। আগের বড় লেখকেরা সকলেই গ্রামকেন্দ্রিক উপন্যাস বা গল্প লিখেছেন। নতুন উদীয়মান মধ্যবিত্তের কথা ভালো করে বললেন এবং মধ্যবিত্ত জীবনের বিকারকেও তিনি ধরলেন'- বলেছিলেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

তার লেখকজীবন প্রায় ৬২ বছরব্যাপী বিস্তৃত। এই বিশাল সময় ধরে সৈয়দ হক নিজ মেধা, মনন ও সৃজনীশক্তির মাধ্যমে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছেন এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন সাহিত্যের এক তুলনাহীন অবস্থানে।

তার অমর সৃষ্টির মধ্যে নাটক নুরুলদীনের সারাজীবন এবং পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়, ছোট গল্প রক্ত গল্প, কবিতা এক আশ্চর্য সঙ্গমের স্মৃতি এবং উপন্যাস রাজার সুন্দরী উল্লেখযোগ্য। শিল্পক্ষেত্রে সৈয়দ শামসুল হকের অবদান শুধু নাটকেই সীমাবদ্ধ নয়, তিনি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য লিখেছেন, এমনকি চলচ্চিত্রের জন্য গানও রচনা করেছেন। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তার রচিত 'হায়রে মানুষ, রঙ্গিন ফানুস' গানটি এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে।

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

4h ago