ভারতের অনলাইন গেমসে আর্থিক লেনদেনের ওপর আসছে সরকারের নজরদারি

অনলাইন ভিডিও গেমে খুব সহজেই আসক্ত হয়ে পড়েন তরুণ-তরুণীরা। ছবি: রয়টার্স
অনলাইন ভিডিও গেমে খুব সহজেই আসক্ত হয়ে পড়েন তরুণ-তরুণীরা। ছবি: রয়টার্স

আজ রোববার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, খুব শিগগির সব ধরনের অনলাইন ভিডিও গেমের আর্থিক লেনদেনের ওপর সরকারি নজরদারি চালু হতে যাচ্ছে।
শুরুতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, শুধুমাত্র ব্যক্তিগত দক্ষতাভিত্তিক গেমের ওপর নজরদারি রাখা হবে। তবে এ প্রস্তাব নাকচ করা হয়েছে বলে সরকারের একটি নথি ও আরও ৩টি সূত্র থেকে জানা গেছে।

আজ রোববার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

এই বহুল প্রতীক্ষিত নীতিমালা ভারতের গেমিং খাতের ভবিষ্যতকে বড় আকারে প্রভাবিত করবে বলে সংশ্লিষ্টরা মত প্রকাশ করেছেন। গবেষণা প্রতিষ্ঠান রেডসিয়ারের প্রাক্কলন মতে, ২০২৬ সাল নাগাদ এই খাতের আকার দাঁড়াবে ৭০০ কোটি ডলার।

আগস্টে এই নীতিমালা তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারতীয় প্যানেল একটি নতুন কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেয়, যারা যাচাই করবে একটি গেম খেলতে ব্যক্তিগত দক্ষতা না ভাগ্য প্রয়োজন। তারা মত দেন, শুধুমাত্র দক্ষতা নির্ভর গেমগুলোর ওপর নজরদারি চালানো প্রয়োজন।

ভাগ্য নির্ভর গেমগুলোকে জুয়া খেলার সঙ্গে তুলনা করা যায়। ভারতের বেশিরভাগ রাজ্যেই এই গেমগুলো নিষিদ্ধ। প্রস্তাব মতে, ভাগ্য নির্ভর গেমের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার আলাদা করে প্রতিটি রাজ্য সরকারের কাছে থাকার কথা বলা হয়েছিল।

তবে ২৬ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত একটি সরকারি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা এতে আপত্তি জানান। তিনি মত প্রকাশ করেন, সব ধরনের গেমের ওপর নজরদারি বাড়ানো উচিৎ।

এই বৈঠকের মিনিটস অব মিটিং এ আরও বলা হয়, দক্ষতা ও ভাগ্যের ভিত্তিকে ভিডিও গেমের শ্রেণীবিন্যাস করা বেশ ঝামেলাপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে কোনো সুস্পষ্ট আইনি দিকনির্দেশনা নেই।

উল্লেখিত কর্মকর্তার বরাত দিয়ে নথিতে আরও বলা হয়য়, 'অনলাইন গেমিংকে সামগ্রিকভাবে বিবেচনা করা উচিৎ। এর মধ্যে কোনো শ্রেণিভেদের প্রয়োজন নেই।'

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট অনলাইনে খেলা যায় এমন তাসের গেমগুলোকে (যেমন, 'রামি') দক্ষতা ভিত্তিক ও আইনসংগত বলে রায় দিয়েছেন। তবে বিভিন্ন রাজ্যের আদালত পোকারের মতো গেমের ক্ষেত্রে মতৈক্যে পৌঁছাতে পারেনি।

এই নীতিমালা প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত আছেন এরকম ২ নয়া দিল্লি ভিত্তিক সরকারি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, নতুন এই আইন কেন্দ্রীয় প্রশাসনকে সব ধরনের গেমের ওপর আরও বড় আকারে নজর রাখার সুযোগ করে দেবে। তবে রাজ্য সরকারগুলোর হাতেও জুয়া বা ভাগ্য ভিত্তিক গেম তাৎক্ষণিকভাবে নিষিদ্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা থাকবে।

নতুন এই নীতিমালার খসড়া তৈরির কাজ চলছে। এমন সময় এই উদ্যোগ এসেছে, যখন এ ধরনের গেম খুব দ্রুত ভারতের তরুণ-তরুণীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে। অনেকেই এসব গেমে আসক্ত হয়ে আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন। কেউ কেউ আত্মহত্যাও করেছেন।

সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, মোদী সরকারের প্রশাসন এ ধরনের প্ল্যাটফর্মে আসক্ত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন।

আগস্টে সরকারের প্যানেল প্রতিবেদনে কিছু তথাকথিত 'আসক্তি দূরীকরণ ব্যবস্থা' চালুর সুপারিশ করা হয়েছিল, যার মধ্যে আছে নিয়মিত সতর্কবাণী, উপদেশ এবং অনলাইন গেমে অর্থ জমা রাখা ও খরচের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করে দেয়া।

Comments

The Daily Star  | English

Experts from four countries invited to probe into Dhaka airport fire: home adviser

Says fire that spread fast due to chemicals, garment materials was contained in time

6m ago