চট্টগ্রামে পাহাড়ধস

‘মনে হচ্ছিল আর বেঁচে ফিরব না’

দুর্ঘটনাস্থল থেকে ১০০ মিটার দূরে একটি বসতিতে স্ত্রী, দুই সন্তান নিয়ে ১৭ বছর ধরে বসবাস করছেন বাবলু মিয়া। ছবি: সিফায়াত উল্লাহ/স্টার

চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ থানার বেলতলি ঘোনা এলাকায় একটি সড়ক তৈরির সময় পাহাড় থেকে ধসে পড়া মাটির নিচে চাপা পড়ে প্রায় এক ঘণ্টা আটকে ছিলেন বাবলু মিয়া।

বেঁচে ফেরার পর ৪০ বছর বয়সী এই শ্রমিক বললেন, 'আমার বারবার মনে হচ্ছিল, আমি আর বেঁচে ফিরব না।'

আজ শুক্রবার বিকেলে আকবর শাহ থানা এলাকার বেলতলি ঘোনা এলাকায় পাহাড়ধসে এক শ্রমিক মারা গেছেন। এই ঘটনায় আরও ৩ শ্রমিক আহত হয়েছেন।

দুর্ঘটনাস্থল থেকে ১০০ মিটার দূরে একটি বসতিতে স্ত্রী, দুই সন্তান নিয়ে ১৭ বছর ধরে বসবাস করছেন বাবলু মিয়া। তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়।

তার ঘরে গিয়ে দেখা যায়, হৃদরোগে আক্রান্ত বাবলুর স্ত্রী খাটে শুয়ে আছেন। দুর্ঘটনায় বাবলু বাম পায়ে আঘাত পেয়েছেন।

খাটের এক কোনায় বসে বাবলু মিয়া বলেন, 'বাঁচবো না ভেবে পানিও পান করে নিছিলাম।'

দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, 'আমরা আজকে ১০ জন শ্রমিক কাজ শুরু করি। আমি মাটির গর্ত খুঁড়ছিলাম। এর মধ্যে কিছু বুঝে উঠার হঠাৎ আমাদের ওপর মাটি এসে পড়ে। আমরা ধারণা করিনি এভাবে মাটি ধসে পড়বে কারণ গত দুই মাস ধরে আমরা এই ধরনের কাজ করছি, কিন্তু আগে দুর্ঘটনা ঘটেনি।'

'আমার কোমড় পর্যন্ত মাটি ছিল। আমরা পাশে খোকা ছিল, সে মারা গেছে, পরে লোকজন এসে আমাদের উদ্ধার করে। শাবল মাটি খুঁড়ে আমি বের হওয়ার চেষ্টা করেছি,' বলেন তিনি।

মূলত সড়কটির দুইপাশে সীমানা প্রাচীর দেয়ার জন্য মাটির কাজ করছিলেন শ্রমিকরা।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল পাহাড়টির পাদদেশে সড়কটি তৈরি হচ্ছে, এজন্য পাহাড়টি কাটা হচ্ছিল।

তবে এই সড়ক নির্মাণের অনুমোদন না থাকায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি অভিযান চালিয়ে কর্মরত একজনকে দণ্ড দিয়েছেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ হৃদয় বলেন, 'প্রতিদিনই একটু একটু করে পাহাড়টি কাটা হচ্ছে।'

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার ফখরুজ্জামান বলেন, 'সড়কটি অবৈধভাবে তৈরি হচ্ছে কি না সেটি তদন্তে উঠে আসবে। আমরা তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।'

Comments

The Daily Star  | English

Shibir leading in top two Ducsu posts

Islami Chhatra Shibir-backed vice-president candidate Abu Shadik Kayem was leading the Ducsu polls in six out of 18 halls of Dhaka University.

2h ago