খোদ উৎপাদনস্থলেই চড়া হাঁড়িভাঙা আমের বাজার

হাঁড়িভাঙা আম। রংপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে তোলা। ছবি: স্টার

বাণিজ্যিক ‍উৎপাদনের তিন দশকে প্রায় আঁশবিহীন, মিষ্টি ও সুস্বাদু হাঁড়িভাঙা আম পরিণত হয়েছে রংপুরের ব্র্যান্ডে। কিন্তু চলতি মৌসুমে খোদ উৎপাদনস্থলে খুচরার পাশাপাশি পাইকারি পর্যায়েও আমটি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।

স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় এবং জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃত হাঁড়িভাঙা আম আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারে আসতে শুরু করেছে গত ২০ জুন থেকে।

আম উৎপাদক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছর রংপুরে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি হাঁড়িভাঙা আম ৫০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে। এবার তা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে। আর আকার ও মানভেদে এবার পাইকারিতে প্রতি মণ আম বিকোচ্ছে হচ্ছে ২২০০ থেকে ৩২০০ টাকায়। গত বছরের তুলনায় যা ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা বেশি।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুসারে, এবার প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে হাঁড়িভাঙার চাষ হয়েছে। প্রচণ্ড দাবদাহের কারণে ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও তেমনটি হয়নি। তবে আমের আকার খানিকটা ছোট হয়েছে এবার। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩০ হাজার মেট্রিকটন।

কৃষি কর্মকর্তাদের প্রত্যাশা, এই মৌসুমে ১৫০ কোটি টাকার বেশি হাঁড়িভাঙা আম বিক্রি হতে পারে।

সম্প্রতি রংপুরের পদাগঞ্জ বাজার, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা, সিটি বাজার, লালবাগ, আধুনিক মোড়, ধাপ বাজার ও শাপলা চত্বর এলাকা ঘুরে দেখা যায়- অটোরিকশা, ভ্যান, পিকআপ ও ট্রাকে করে আম আনছেন ব্যবসায়ীরা। এলাকার গলি কিংবা মোড়ের ওপর অস্থায়ী দোকান বসিয়েও চলছে আম বিক্রির কাজ।

এসব বাজার ও এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাইকারিতে বড় আকারের প্রতি মণ হাঁড়িভাঙা আম বিক্রি হচ্ছে ২৭০০-৩২০০ টাকায়। মাঝারি আকারের আম বিক্রি হচ্ছে ২২০০-২৫০০ টাকার মধ্যে। আর ছোট আকারের প্রতি মন আম পাওয়া যাচ্ছে ২০০০-২১০০ টাকায়।

এর পাশাপাশি অনলাইনেও আম বিক্রির কাজে যুক্ত হয়েছেন অনেকে। পদাগঞ্জ স্কুলের মাঠে জেলা প্রশাসন আয়োজন করেছে হাঁড়িভাঙা আম মেলা ও প্রদর্শনীর।

রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জানালেন, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে হাঁড়িভাঙা আমের বিপণন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি হয়রানি প্রতিরোধ ও আম পরিবহনের কাজ সহজতর করার কাজ চলছে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বললেন, হাঁড়িভাঙা আম দ্রুত পাকে এবং গলে যায়। তাই এর সংরক্ষণব্যবস্থা উন্নত করা দরকার। এ লক্ষ্যে কাজ করছে অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাজারে হাঁড়িভাঙা আম পাওয়া যাবে।

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

6h ago